• শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৪ ১৪৩১

  • || ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

লালমনিরহাটে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি

– লালমনিরহাট বার্তা নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ২৯ জুন ২০২০  

লালমনিরহাটে বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। ধীরে ধীরে কমতে শুরু করেছে তিস্তার পানি। আর এতেই দেখা দিয়েছে নদীভাঙন। কয়েক দিনের টানা ভারি বর্ষণ ও তিস্তার পানি বৃদ্ধিতে অসহায় হয়ে পড়েছিল নদী পাড়ের সাধারণ মানুষ। লালমনিরহাটের ৫ উপজেলার নদী তীরবর্তী ১৬টি ইউনিয়নের প্রায় ৪০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়ে। পানিতে তলিয়ে গেছে প্রায় ৮শ হেক্টর পাট, ভুট্টা ও চিনা বাদামের খেত।

সোমবার (২৯ জুন) সকাল সাড়ে ৯ টায় দেশের সর্ববৃহৎ তিস্তা ব্যারেজের ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানি কমে বিপৎসীমার ৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ব্যারেজটি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ৪৪টি গেট খুলে দিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।

গত রোববার (২৮ জুন) সকাল থেকে দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারেজ ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানি প্রবাহ রেকর্ড করা হয় ৫২ দশমিক ৮০ সেন্টিমিটার। যা বিপৎসীমার ২০ সেন্টিমিটার (স্বাভাবিক ৫২ দশমিক ৬০ সেন্টিমিটার) উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম জানিয়েছেন, তিস্তার পানি সোমবার সকাল থেকে বিপৎসীমার ৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ভারি বর্ষণ ও উজানের ঢলে তিস্তা নদীতে সৃষ্ট বন্যায় হাতীবান্ধা উপজেলায় তিস্তার পানি বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে বেশ কয়েকটি এলাকায় নদীর পানি ঢুকে পড়েছে। ওইসব এলাকার অনেক বসতবাড়িতে পানি উঠেছে। এতে লোকজন নিরাপদ পানি এবং খাদ্য সংকটে পড়েছে।

এদিকে হাতীবান্ধা উপজেলার গড্ডিমারী, সিঙ্গীমারী, সিন্দুর্না,পাটিকাপাড়া ও ফকিরপাড়া ইউনিয়নের তিস্তা ও সানিয়াজানে নদীভাঙনে প্রায় দুইশ ঘরবাড়ি নদীরগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। পরিবারগুলো ঘরবাড়ি হারিয়ে স্থানীয় বাঁধের রাস্তায় আশ্রয় নিয়েছে।

আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা ইউনিয়নের গোবর্ধন গ্রামের গোলে নূরের (৬০) ঘরে বন্যার পানি ঢুকে পড়ায় গত শুক্রবার থেকে চৌকির উপর দিন কাটছে তার। তিনি বলেন, ঘরে খাবার নেই, খুব কষ্টে আছি।

হাতীবান্ধার গড্ডিমারী ইউপির চেয়ারম্যান আতিয়ার রহমান বলেন, তিস্তা নদীর পানি কমলেও বাড়ছে ভাঙনের ঝুঁকি। পানিবন্দি পরিবারগুলোর জন্য যে ত্রাণ পাওয়া গেছে তা চাহিদার তুলনায় অপ্রতুল।

লালমনিরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক শামীম আশরাফ জানান, আমন বীজতলা ৬৭ হেক্টর, ভুট্টা ১০ হেক্টর, বাদাম ১ হেক্টর ও রোপা আউস বীজতলার ৫ হেক্টর আবাদি জমি পানিতে তলিয়ে গেছে। এ সব জমি দীর্ঘসময় জলমগ্ন থাকলে আবাদ নষ্ট হয়ে যেতে পারে।

লালমনিরহাটের জেলা প্রশাসক আবু জাফর জানান, তিস্তার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। বন্যা কবলিত এলাকায় ৬ লাখ ২৬ হাজার টাকা ও ৮০ মেট্রিকটন জিআরের চাল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।

– লালমনিরহাট বার্তা নিউজ ডেস্ক –