• শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

  • || ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

ভিক্ষুকের মেয়েকে ধর্ষণের চেষ্টা, মামলা তুলে নিতে প্রাণনাশের হুমকি

– লালমনিরহাট বার্তা নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৯  

লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলায় প্রতিবন্ধী ভিক্ষুকের স্কুল পড়ুয়া মেয়েকে ধর্ষণের চেষ্টায় বিবস্ত্র করার অভিযোগ উঠেছে এক প্রতিবেশী লম্পট হামিদুল ইসলামের বিরুদ্ধে। এ বিষয়ে থানায় অভিযোগ করে বিপাকে পড়েছেন ওই ভিক্ষুক পরিবার। থানা থেকে অভিযোগ তুলে নেয়ার জন্য প্রাণনাশের হুমকি দেয়া হচ্ছে। 

সোমবার সকালে উপজেলার পশ্চিম নওদাবাস (কালীবাড়ি) এলাকায় শতশত নারী-পুরুষ লম্পট হামিদুল ইসলামের কঠিন বিচার চেয়ে বিক্ষোভ করেছেন। এর আগে শুক্রবার বিকেলে ওই এলাকার প্রতিবন্ধী ভিক্ষুক আলম শেখের বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। 

হামিদুল ইসলাম ওই এলাকার মেছের আলীর ছেলে। মেয়েটি একই এলাকার প্রতিবন্ধী ভিক্ষুক আলম শেখের মেয়ে ও স্থানীয় নওদাবাস কালীমোহন তফশীলি উচ্চ বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেণির ছাত্রী। 

আলম শেখ ভিক্ষাবৃত্তি করে তার সংসার চালায়। তার স্ত্রী মোহছেনা বেগম অন্যের বাড়িতে কাজ করে। ওই ভিক্ষুক দম্পতি  শুক্রবার তাদের স্কুল পড়ুয়া মেয়েটিকে বাড়িতে একা রেখে তাদের কাজে চলে যান। জেএসসির টেস্ট পরীক্ষা চলার কারণে মেয়েটি বাড়ির টুকিটাকি কাজ শেষে বিকেলে দিকে পড়ার টেবিলে পড়তে বসে। বাড়িতে কেউ না থাকার সুযোগে প্রতিবেশী মেছের আলীর ছেলে হামিদুল ইসলাম ঘরে ঢুকে মেয়েটির মুখ চেপে ধরে তাকে বিবস্ত্র করে ধর্ষণের চেষ্টা চালায়। এ সময় তার চিৎকারে তার মা ও বড় ভাই ছুটে এসে লম্পট হামিদুলকে আটক করে তার বাবা-মাকে খবর দেয়। খবর পেয়ে লম্পট হামিদুলের বাবা-মা ও বোন এসে ছেলের বিচার না করে উল্টো মেয়েটিসহ তার মা ও বড় ভাইকে বেধড়ক মারধর করে তার ছেলেকে নিয়ে যায়। এতে মেয়েটিসহ তার মা ও ভাই গুরুতর আহত হয়। 

পরে তাদের চিৎকারে এলাকাবাসী ছুটে এসে হামিদুল ইসলাম ও তার বাবা মেছের আলীর এহেন অন্যায়ের প্রতিবাদ করলে তারা এলাকাবাসীকে চরম অপমান করেন। পরে এলাকাবাসী মেয়েটিসহ তার মা ও ভাইকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে করান। এ ঘটনায় মেয়েটির মা মোহছেনা বেগম বাদী হয়ে হামিদুল ইসলামসহ চারজনের নামে থানায় লিখিত অভিযোগ করেন। 

থানায় অভিযোগ করেই বিপাকে পড়েছেন ওই ভিক্ষুক পরিবারটি। থানা থেকে অভিযোগ তুলে না নিলে ভিক্ষুক পরিবারটিকে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকিসহ এলাকা ছাড়া করার হুমকি দিচ্ছে হামিদুলের পরিবার।

এবিষয়ে হামিদুল ইসলাম ও তার বাবা মেছের আলীর সঙ্গে কথা বলার জন্য তার বাড়িতে গেলে তাদের কাউকে পাওয়া যায়নি। তবে হামিদুলের মা হনুফা বেগম বলেন, এসব মিথ্যা কথা, তারা উল্টো আমার মেয়ের নামে বদনাম ছড়াচ্ছে। 

এলাকাবাসীরা ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, প্রতিবন্ধী আলম শেখ ভিক্ষাবৃত্তি করে বলে কি তারা এর বিচার পাবে না। হামিদুল ইসলাম বিবস্ত্র করে ধর্ষণের চেষ্টা করাসহ তার মা-ভাইকে মারধরের সুষ্ঠু বিচারের জন্য প্রশাসনের উর্দ্ধতন কর্মকর্তার হস্তক্ষেপ কামনা করেন। 

উপজেলার নওদাবাস ইউপির ৯নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য নরেশ মেম্বার বলেন, বিষয়টি নিয়ে যাতে আর বাড়াবাড়ি না হয় সেজন্য এলাকার মুরুব্বিদের নিয়ে সুষ্ঠ বিচার করার চেষ্টা চলছে। এজন্য দুই পক্ষের সঙ্গে কথা বলা হয়েছে।

হাতীবান্ধা থানার ওসি উমর ফারুক বলেন, এবিষয় আমি একটি লিখিত অভিযোগ পত্র পেয়েছি। তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

– লালমনিরহাট বার্তা নিউজ ডেস্ক –