• রোববার ২৮ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৫ ১৪৩১

  • || ১৮ শাওয়াল ১৪৪৫

লালমনিরহাটে ঘন কুয়াশায় ফসলের ক্ষতি

– লালমনিরহাট বার্তা নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ১৪ জানুয়ারি ২০২৪  

টানা সপ্তাহজুড়ে সূর্যের দেখা নেই হিমালয়ের পাদদেশের জেলা লালমনিরহাটে। ঘন কুয়াশা আর হিমেল হাওয়ায় বিপর্যস্ত জনজীবন। জেঁকে বসেছে হাড় কাঁপানো ঠান্ডা। জীব বৈচিত্র্যের সঙ্গে নাজেহাল হয়ে পড়েছে কৃষকদের সবজি ও বোরো বীজতলা। ফলে ক্ষতির মুখে পড়েছে জেলার কৃষি অর্থনীতি।

প্রকৃতিতে বয়ে চলা ঘন কুয়াশা আর হিমেল হাওয়ায় কৃষিতে ব্যাপক মন্দা প্রভাব ফেলছে। তীব্র শীতে আলু, পিয়াজ, শিমসহ নানা জাতের সবজি ও বোরো বীজতলায় ব্যাপক ক্ষতির শঙ্কা কৃষকদের। পচন ধরেছে আলু, পিয়াজ ও রসুন ক্ষেতে। ঠান্ডায় ফ্যাকাশে হয়ে মরে যাচ্ছে বোরো বীজতলার চারা। মৌসুমের আলু ঘরে তোলা নিয়ে বড় চিন্তায় পড়েছেন চাষিরা। ৩ দিন পর পর স্প্রে করেও ক্ষেত রক্ষা করা যাচ্ছে না। মরে যাচ্ছে বোরো বীজতলা। ফলে বোরো চাষাবাদ নিয়েও চিন্তিত কৃষকরা। সব মিলে ঠান্ডায় জীববৈচিত্র্যের সঙ্গে ক্ষতির মুখে কৃষিও।

লালমনিরহাটের সবজি গ্রাম খ্যাত বড় কমলাবাড়ি গ্রামের কৃষক মাসুদ মিয়া জানান, প্রায় ২৪ দোন (২৭ শতাংশে দোন) জমিতে আলুর চাষ করেছেন। ঘন কুয়াশা আর হিমেল হাওয়ায় আলু ক্ষেতে পচন রোগ এসেছে। স্প্রে করা হচ্ছে ৩ দিন পর পর। তবুও রক্ষা করা যাচ্ছে না। সূর্যের দেখা মিললে কুয়াশা শুকিয়ে যেত। তখন ক্ষতিটা কম হত। বিকেল থেকে পরদিন প্রায় দুপুর পর্যন্ত বৃষ্টির মতো কুয়াশা পড়ছে। এতে আলু ক্ষেত রক্ষা করা বেশ কঠিন হয়ে পড়েছে। আলু ঘরে তুলতে আরও প্রায় এক মাস পরিচর্যা করতে হবে। গত বছর প্রায় ১৪ লাখ টাকার আলু বিক্রি করেছি। আবহাওয়া এমন থাকলে উৎপাদন খরচ তোলা দায় হয়ে পড়বে বলে দাবি তার।

খুনিয়াগাছের কালমাটি গ্রামের কৃষক শফিকুল বলেন, ঘন কুয়াশায় বোরো বীজতলা ফ্যাকাশে হয়ে মরে যাচ্ছে। সকালে কুয়াশার পানি বিশেষ পদ্ধতিতে চারা গাছ থেকে ফেলে দেওয়া হচ্ছে। তবুও রক্ষা করা যাচ্ছে না। এমন আবহাওয়া থাকলে বোরো চাষাবাদে চারা গাছের সংকট দেখা দিতে পারে।

লালমনিরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ পরিচালক হামিদুর রহমান বলেন, কুয়াশার কারণে সবজিতে একটু ক্ষতি হতে পারে। তাই কৃষকদের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে যথাসাধ্য ক্ষেতে শীতকাটা ওষুধ স্প্রে করতে। কৃষি বিভাগের মাঠকর্মীদের পরামর্শে কৃষকরা স্প্রে অব্যাহত রাখায় তেমন কোনো ক্ষতির মুখে পড়েনি কৃষি। তবে কৃষকদের উৎপাদন খরচ কিছু বাড়তে পারে। বোরো বীজতলা রাতে পলিথিন দিয়ে ঢেকে সকালে খুলে দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে কৃষকদের। সম্ভব হলে সকালে বীজতলায় পানি ছিটানো যেতে পারে যাতে কুয়াশার পানিটা চারা গাছের ডগা থেকে নিচে নেমে যায়। গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি না হলে কৃষিতে বড় কোনো ক্ষতি হবে না বলেও দাবি করেন তিনি।

– লালমনিরহাট বার্তা নিউজ ডেস্ক –