আমি বাংলাদেশের মানুষের আস্থা, ভালোবাসা পেয়েছি- প্রধানমন্ত্রী

দেশের জনগণের মুখে হাসি ফোটানোর একটি মাত্র লক্ষ্য নিয়ে নির্বাসিত জীবন থেকে দেশে ফিরেছিলেন বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, দেশের দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে আমি দেশে ফিরেছিলাম, কারণ এটা আমার বাবার (জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান) স্বপ্ন ছিল।

মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে এনইসি মিলনায়তনে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের (এনইসি) সভায় তিনি এ কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি সভায় যোগ দেন।

১৯৮১ সালের ১৭ মে জোরপূর্বক নির্বাসিত জীবন থেকে ফিরে আসার দিনটির কথা স্মরণ করে শেখ হাসিনা বলেন, যখন আমি বিমানবন্দরে অবতরণ করি, তখন আমি আমার নিকট-আত্মীয়দের কাউকে পাইনি, কিন্তু লাখো মানুষের ভালোবাসা পেয়েছি। এটাই আমার একমাত্র শক্তি এবং আমি এই শক্তি নিয়েই এগিয়ে যাচ্ছি।

দেশে ফেরার পর দেশব্যাপী সফরের সময় নানা প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখি হয়েছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, তবে আমি বাংলাদেশের মানুষের আস্থা, ভালোবাসা পেয়েছি। কত অপপ্রচার, কত কথা, কত কিছু, তারপরেও বাংলাদেশের জনগণ আমার ওপর আস্থা রেখেছেন।

শিক্ষা জীবন থেকে রাজনীতি ও মিছিল মিটিংয়ে অংশগ্রহণ করলেও এত বড় দায়িত্ব নেয়ার কথা কখনো তার ভাবনাতেও ছিল না উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন ১৭ মে দেশে ফিরে দেশের মানুষের জন্য তাকে কিছু করতে হবে।

তিনি বলেন, লাখো শহিদের রক্তে অর্জিত এ দেশের স্বাধীনতা, কখনো ব্যর্থ রাষ্ট্র হতে পারে না। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের নাগরিকরা সবসময় বিশ্বে মাথা উঁচু করেই চলবে।

বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির প্রকল্প অনুমোদন ও বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী এ সময় মন্ত্রণালয় এবং বিভাগগুলোর অগ্রাধিকার ভিত্তিক প্রকল্প গ্রহণের এবং এই মুহূর্তে দেশের জন্য যেটা দরকার সেই প্রকল্প গ্রহণের আহ্বান জানিয়ে টাকা খরচ ও সম্পদ ব্যয়ের ক্ষেত্রে সতর্ক হওয়ার আহ্বান জানান।

করোনা ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দা, মুদ্রাস্ফীতি এবং খাদ্য সংকটের প্রসঙ্গ টেনে উৎপাদন বৃদ্ধি এবং দেশবাসীকে মিতব্যয়ী হওয়ার পরামর্শ দেন প্রধানমন্ত্রী।

উল্লেখ্য, আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৪১তম ঐতিহাসিক স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস আজ। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট সপরিবারে নির্মমভাবে নিহত হন। এ সময় তার দুই কন্যা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা প্রবাসে থাকায় ঘাতকদের হাত থেকে রেহাই পান। পরবর্তী সময়ে ১৯৮১ সালের ১৪, ১৫ ও ১৬ ফেব্রুয়ারিতে ঢাকায় অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগের জাতীয় কাউন্সিল অধিবেশনে শেখ হাসিনার অনুপস্থিতিতে তাকে দলের সভাপতি নির্বাচিত করা হয়।

এরপরেই ৬ বছরের নির্বাসিত জীবন কাটাতে বাধ্য হওয়া শেখ হাসিনা সে সময়কার সামরিক জান্তার রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে এক রকম জোর করেই ১৭ মে দেশে ফিরে আসেন।

– লালমনিরহাট বার্তা নিউজ ডেস্ক –