• শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

  • || ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

পাওনা টাকার জন্য দেনাদারের বাড়িতে লাশ নিয়ে অবস্থান

– লালমনিরহাট বার্তা নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ১২ আগস্ট ২০২২  

পঞ্চগড়ে পাওনা টাকার জন্য দেনাদারের বাড়িতে লাশ নিয়ে অবস্থানের ঘটনা ঘটেছে। বৃহস্পতিবার গভীর রাতে এ ঘটনা ঘটে। পরে লাশ রাখার প্রায় সাত ঘণ্টা পর মধ্যরাতে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের হস্তক্ষেপে বিষয়টির সমাধান হয়।

জানা যায়, ছেলের চাকরির জন্য একটি মাদরাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি জুলফিকার আলী প্রধানকে ১৩ লাখ টাকা দিয়ে দীর্ঘদিন ঘুরে চাকরি হয়নি। টাকাও ফেরত পাচ্ছিলেন না দবিরুল ইসলাম প্রধান। বৃহস্পতিবার দুপুরে রংপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।

পরে সেই পাওনা টাকা আদায়ের গভীর রাতে দবিরুলের মরদেহ নিয়ে তার স্বজনরা জুলফিকারের বাড়িতে গিয়ে অবস্থান নেন। দবিরুল ও অভিযুক্ত জুলফিকার উপজেলা সদরের প্রধানপাড়া গ্রামের বাসিন্দা।

এদিকে জুলফিকারের বাড়ির আঙিনায় পাওনাদার দবিরুলের লাশ রেখে পাশেই তার ভাই বদিরুল ইসলামসহ স্বজনেরা বসে ছিলেন। তবে দবিরুলের লাশ বাড়িতে নিয়ে আসার খবর শুনেই জুলফিকার তার স্ত্রীসহ ঘরে তালা দিয়ে পালিয়ে যান।

দবিরুলের পরিবারের সদস্য ও স্থানীয়রা জানান, অভিযুক্ত জুলফিকার আলী প্রায় দুই বছর আগে দারুল ফালাহ দাখিল মাদ্রাসার ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি ছিলেন। দবিরুলের বড় ছেলে জাকিরুল ইসলামকে মাদরাসায় চাকরি দেওয়ার কথা বলে কয়েক ধাপে জুলফিকার প্রায় ১৩ লাখ টাকা নেন।

দবিরুলের ছোট ছেলে আবদুস সবুর প্রধান বলেন, জুলফিকার তাদের নিকটাত্মীয়ের সুযোগে বাবার সঙ্গে প্রতারণা করেছেন। পাওনা টাকা ফেরত পেতে বাবা দীর্ঘদিন ধরে তার বাড়িতে ঘুরেছেন। তবে জুলফিকার টাকা ফেরত না দিয়ে উল্টো বাবাকে অপমান করেন। এর মধ্যে গত ১৩ জুলাই বাবা ব্রেন স্ট্রোক করে অসুস্থ হয়ে পড়েন। চিকিৎসার জন্য জুলফিকারের কাছে পাওনা টাকা চাইলেও জুলফিকার কোনো টাকা দেননি। এ নিয়ে পুলিশ সুপারের বরাবর একটি আবেদনও করা হয়েছিল।

সাতমেরা ইউনিয়ন পরিষদেও স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. হেলাল উদ্দিন বলেন, দবিরুলের স্বজনরা লাশ নিয়ে জুলফিকারের বাড়িতে অবস্থান নিলে দুই পক্ষকে নিয়ে বসার ব্যবস্থা করা হয়। পরে দুই পক্ষের লোকজনের উপস্থিতিতে জুলফিকার মোট ছয় লাখ টাকা ফেরত দিতে চাইলে বিষয়টির সমাধান হয়। এ সময় জুলফিকার এক লাখ টাকা ও পাঁচ লাখ টাকার একটি চেক দিয়ে দুই মাসের সময় নেন।

সমাধানের পর দবিরুলের লাশ তার বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। তবে এ নিয়ে বক্তব্যের জন্য চেষ্টা করেও জুলফিকারের সঙ্গে কথা বলা যায়নি। তার মোবাইল ফোনে কথা বলার চেষ্টা করেও তা বন্ধ পাওয়া যায়।

সদর থানার ওসি আবদুল লতিফ মিঞা বলেন, পাওনা টাকা আদায় নিয়ে প্রধানপাড়া এলাকার বিষয়টি স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি ও জনপ্রতিনিধিরা সমাধান করেছেন। শুক্রবার সকালে মৃত ব্যক্তির জানাজা সম্পন্ন হয়েছে। বর্তমানে ওই এলাকার পরিবেশ স্বাভাবিক রয়েছে। শুক্রবার সকালে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তার লাশ দাফন করা হয়।

– লালমনিরহাট বার্তা নিউজ ডেস্ক –