• শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

  • || ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মধ্য দিয়ে রাজনীতির দেয়াল সৃষ্টি হয় 

– লালমনিরহাট বার্তা নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ৭ মার্চ ২০২০  

স্বাধীনতার মহানায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার মধ্যে দিয়েই দেশে রাজনীতির দেয়াল সৃষ্টি করা হয়েছে।
আওয়ামী লীগের উপ-দফতর সম্পাদক সায়েম খান একান্ত আলাপচারিতায় এ কথা বলেন। এছাড়া সমসাময়িক রাজনৈতিক বিষয় নিয়েও কথা বলেছেন তিনি। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন রিপোর্টার জাফর আহমেদ:

ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক থেকে সরাসরি আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির উপ-দফতর সম্পাদক হয়েছেন সায়েম খান। ২১তম জাতীয় কাউন্সিলে সবচেয়ে বড় চমক তিনি। স্কুলজীবন থেকেই রাজনীতির হাতেখড়ি, এরপর থেকে ছাত্রলীগে সক্রিয় তিনি। তার জন্মস্থান গোপালগঞ্জে। ২০০৬-০৭ সেশনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হয়ে ছাত্রলীগের রাজনীতির মাঠে সরব ছিলেন।

রাজনীতিতে বিভাজনের বিষয়ে জানতে চাইলে সায়েম খান বলেন, রাজনীতিতে যে বিভাজন সৃষ্টি হয়েছে, তা ভবিষ্যৎ প্রজন্মের রাজনীতিতে প্রভাব ফেলবে। এই বিভাজনটা বড়দাগে সৃষ্টি হয়েছে ১৯৭১ সাল থেকে। বাঙালি জাতির অধিকার আদায়ের সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের আন্দোলন হয়েছিল বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে। মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধুর প্রতিপক্ষ হয়ে দাঁড়িয়েছিল দুষ্কৃতকারীরা। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে এদেশ স্বাধীন হওয়ার পরেও দুষ্কৃতকারীরা আবার বিভিন্নভাবে একটি শক্তিশালীচক্র হয়ে সাধারণ মানুষকে প্রভাবিত করছে। মূলত তারা সুবিধার জায়গাটা পাওয়ার জন্য বা ক্ষমতার লোভে এসব করছে। 

সায়েম খান আরো বলেন, রাজনীতির একটি আদর্শিক প্ল্যাটফর্ম আছে। সেই আদর্শিক প্ল্যাটফর্মের জায়গাটায় যখন আঘাত লাগে তখনই সেই ছোট্ট বিভাজন জায়গাটা আরো বড় হয়ে দাঁড়ায়। এখন কিন্তু সেই ফারাকের জায়গাটা আমরা স্পষ্টভাবে মোটাদাগে দেখতে পাচ্ছি। কোনোভাবেই অস্বীকার করতে পারিনা। এই বিভাজন বা ফারাকটাকে যদি আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে সঁপে দিয়ে যায় তাহলে এই ফারাক বা দূরত্বটা বিদ্যমান থাকবেনা নিশ্চিতভাবে বলতে পারিনা। দূরত্বটা অবশ্যই বিদ্যমান থাকবে। দূরত্বটাকে মুছে ফেলার জন্য হটককারী কার্যক্রম না দেখে হৃদয় দিয়ে রাজনীতিকে অনুভব করতে হবে। 

তিনি বলেন, ১৯৭৫ সালে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার মধ্যে দিয়ে বিভাজন আরো বড় করা হয়েছে। আমি যদি এদেশের রাজনীতিকে দেখতে চাই তাহলে অবশ্যই বঙ্গবন্ধুকে হৃদয় দিয়ে দেখতে হবে। তার আদর্শকে ধারণ করতে হবে। রাজনৈতিক ব্যক্তির যদি বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে ধারণা না থাকে, তাহলে কোনো কাজে আসবে না।এদেশের মানুষের মুক্তিসংগ্রামে একক নেতৃত্বে  বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নাম ইতিহাসে গাঁথা। জনগণের কাছ থেকে ক্ষমতা কেড়ে নিয়ে জাতির পিতাকে নির্মম-নিষ্ঠুরতার সঙ্গে সপরিবারে হত্যা করা হয়েছে। দাগটা তখন আরো মোটাদাগে তৈরি করেছে স্বাধীনতার পরাজিত শক্তি।

স্বাধীনতার প্রায় ৫০ বছর পরেও মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষের শক্তির সঙ্গে স্বপক্ষের শক্তিকে রাজনীতির মাঠে প্রতিযোগিতা করতে হয়- এ বিষয়ে সায়েম খান বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে। স্বাধীনতার ৫০ বছর পরেও রাজনীতির মাঠে স্বাধীনতার বিপক্ষের শক্তির সঙ্গে প্রতিযোগিতা করতে হয়- এটা আমাদের ব্যথিত করে।

মূল ধারার রাজনীতি করার জন্য  ছাত্রলীগের রাজনীতি কতটা অপরিহার্য- এ প্রশ্নের জবাবে তরুণ এ আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, তৃণমূল থেকে রাজনীতি ও ছাত্রলীগ করার সুবিধা রয়েছে। এখন আমি কেন্দ্রীয় কমিটিতে এসেছি, এটা বৃহৎ সংগঠন, সব স্তরের মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ হয়। ছাত্রলীগ থেকে যা শিখেছি তা এখন কাজে লাগবে । 

ছাত্রলীগের নেতাদের মধ্যে কোন বিষয়গুলো থাকা দরকার? এ প্রশ্নের জবাবে সায়েম খান বলেন, সর্বপ্রথম বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে ধারণ করতে হবে। এছাড়া রাজনৈতিক শিক্ষা শতভাগ পূর্ণ হবে না। সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে জনকল্যাণে রাজনীতি করতে হবে।

কেন্দ্রীয় কমিটির সিদ্ধান্ত তৃণমূল পর্যন্ত বাস্তবায়ন না হওয়ার কারণ কী?  এ বিষয়ে সায়েম খান বলেন, এই সমস্যাটা হওয়ার কারণ হলো অবস্থানগত পার্থক্য। ছাত্রলীগের সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনা করার জন্য গঠনতন্ত্র আছে। শুধু কেন্দ্রীয় কমিটির জন্য নয়, যা সবার জন্য সমান। তবে স্থান ও কালভেদে উপজেলা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ের নেতাকর্মীরা তা সেভাবে রাখতে চায় না। কেন্দ্রীয় কমিটি তৃণমূলের ছাত্রলীগকে সরাসরি নির্দেশনা দেয়। ছাত্রলীগ ঠিকভাবে নির্দেশনা দিলেও স্থানীয় সময় সাপেক্ষে পরিবর্তন করে ফেলে স্থানীয় নেতৃবৃন্দ। তৃণমূলের ছাত্রলীগে অনেকেই দীর্ঘ প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে না ঢুকে, সহজে ঢুকে যায়। এ কারণে সমস্যাগুলো সৃষ্টি হতে পারে।  কিছু কিছু জায়গায় ব্যক্তির স্বার্থের কারণেই ছাত্রলীগকে প্রশ্নবিদ্ধ করা হয়।

ছাত্রলীগকে কোনো বার্তা দিতে চান কিনা? এ বিষয়ে সায়েম খান বলেন, বর্তমান ছাত্রলীগের একটি বড় কমিটি আছে। তারা যোগ্যতার ভিত্তিতেই দায়িত্ব পেয়েছেন। তাদেরকে পরিচালিত ও বার্তা দেয়ার জন্য আওয়ামী লীগের উচ্চ পর্যায়ের নেতাকর্মী আছেন। শুধু ছাত্রলীগ না, সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনসহ সবার সর্বশেষ আস্থার ঠিকানা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি দল ও নেতাকর্মীদের জন্য যে বার্তা দেবেন তা সবার জন্য শিরোধার্য।

– লালমনিরহাট বার্তা নিউজ ডেস্ক –