• শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

  • || ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

সর্বশেষ:
ছয়দিনের সফরে ব্যাংককে পৌঁছেছেন প্রধানমন্ত্রী গরমে ‘অতি উচ্চ ঝুঁকিতে’ বাংলাদেশের শিশুরা: ইউনিসেফ গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা: বেরোবি কেন্দ্রের পরীক্ষার্থী ৩১ হাজার ৯৪৬ জন বাংলাদেশ-ভারত ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করবে: ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী কাতারের আমিরের সফরে যা পেল বাংলাদেশ

বিদ্যুৎসেবা- ২১ মার্চ নতুন গ্রাহক সংযোগ ৩ কোটি ১৩ লাখ 

– লালমনিরহাট বার্তা নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ১৬ মার্চ ২০২২  

আগামী ২১ মার্চ পায়রা কোল পাওয়ার বিদ্যুৎকেন্দ্র স্বশরীরে উদ্বোধনের মাধ্যমে শতভাগ বিদ্যুতায়নের ঘোষণা দেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

গত সোমবার দুপুরে বিদ্যুৎ ভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। তিনি জানান, এরই মধ্যে দেশের সব চর ও দুর্গম এলাকায় বিদ্যুৎ পৌঁছে দিয়েছে সরকার। 
নতুন কোল পাওয়ার বিদ্যুৎকেন্দ্রের মাধ্যমে সুপার ক্রিটিক্যাল প্রযুক্তিতে শতভাগ দূষণমুক্ত কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্রের সূচনাও করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ।

নসরুল হামিদ বলেন, মুজিব শতবর্ষ পালন উপলক্ষে সরকার সারা দেশে শতভাগ বিদ্যুতায়নের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছিল। ২১ মার্চ সেই লক্ষ্য পূরণ হতে যাচ্ছে। সেদিন দেশের শতভাগ স্থান ও মানুষ বিদ্যুতের আওতায় আসবে।

দক্ষিণ এশিয়ায় শতভাগ বিদ্যুতের দেশ বাংলাদেশ বলে জানান বিদ্যুৎ সচিব মাহাবুব হাসান। তিনি বলেন, এই বাস্তবতা এক দশক আগেও ছিল কল্পনা। চর সোনারামপুর, আশুগঞ্জ; চারদিকে নদী। আশুগঞ্জ বিদ্যুৎকেন্দ্রর কাছেই। সেখানে সাবমেরিন কেবলের মাধ্যমে বিদ্যুৎ দেয়া হয়েছে। রাঙ্গাবালী, মনপুরা, সন্দ্বীপ, হাতিয়া, নিঝুম দ্বীপ, কুতুবদিয়ায় বিদ্যুৎ পৌঁছানো হয়েছে।’

২০০৯ সালের জানুয়ারিতে দেশে বিদ্যুৎ উৎপাদন ছিল ৪ হাজার ৯৪২ মেগাওয়াট। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ২৫.৫১৪ মেগাওয়াট (ক্যাপটিভ ও নবায়নযোগ্য জ্বালানিসহ) মোট ১৯ হাজার ৬২৬ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হয়েছে।

এ ছাড়া দেশে বর্তমানে ১৩ হাজার ২১৯ মেগাওয়াট ক্ষমতার ৩৩টি বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণাধীন রয়েছে। এখন উৎপাদন ছাড়াও ভারত থেকে ১ হাজার ১৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানি করা হচ্ছে।

বিদ্যুৎতের দাম বৃদ্ধির বিষয় নিয়ে জানতে চাইলে প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, ‘পরিস্থিতি এখনো হাতের বাইরে নয়। সরকার চাইছে যতোটুকু সম্ভব চালিয়ে নিতে। হাতের বাইরে চলে গেলে সমন্বয় করা ছাড়া উপায় থাকবে না। এখনো ভর্তুকি দিয়ে চলতে হচ্ছে। সরকার এটা নজরে রাখছে।’

তিনি বলেন, ‘সামনে রমজান মাস আসছে, প্রায় সব মসজিদে এসি আছে। তাই সকাল ও রাতের চাহিদার পার্থক্য ছয় হাজার মেগাওয়াট। এটা মাথায় রেখে উৎপাদন বাড়াতে হবে। এতে ভর্তুকি বাড়বে। এখন কেবল ডিজেলেই বিপিসির বছরে ৮০ কোটি টাকা ভর্তুকি দিতে হচ্ছে।’ রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে গজপ্রোম ও ঘোড়াশালে উৎপাদনে কোনো ঝামেলা হয়নি বলে জানান বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী।

তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী, সাহসী ও সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও বাস্তবায়নের ফলে বিদ্যুৎখাতে বিগত ১৩ বছরে অভূতপূর্ব সাফল্য অর্জিত হয়েছে। ‘শীত মৌসুমে এবং অফ পিক আওয়ারে উদ্বৃত্ত বিদ্যুৎ রপ্তানির পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। মোট ৫ হাজার ২১৩ সার্কিট কিলোমিটার সঞ্চালন লাইন নির্মাণ করা হয়েছে ৩ লাখ ৬১ হাজার কিলোমিটার বিতরণ লাইন নির্মাণ করা হয়েছে।’

নতুন গ্রাহক সংযোগ ৩ কোটি ১৩ লাখ
বিদ্যুৎ সুবিধাভোগী জনসংখ্যা শতকরা ৪৭ ভাগ থেকে ৯৯ দশমিক ৮৫ ভাগে উন্নীত ও মাথাপিছু বিদ্যুৎ উৎপাদন ২২০ কিলোওয়াট আওয়ার হতে ৫৬০ কিলোওয়াট আওয়ারে উন্নীত হয়েছে বলে জানান বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। 
তিনি বলেন, ‘বিদ্যুতের বিতরণ লস এখন ৫ দশমিক ৮৫ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে।’

প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘এর মধ্যে ৪৬ লাখ ৭৭ হাজার প্রি-পেইড ও স্মার্ট প্রি-পেইড মিটার স্থাপন করা হয়েছে। সেচ কাজে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করা হয়েছে।

‘বাংলাদেশ-চায়না পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেডের উদ্যোগে পায়রা ২×৬৬০ মেগাওয়াট থার্মাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ইউনিট-১ (৬২২ মেগাওয়াট) এবং ইউনিট-২ (৬২২ মেগাওয়াট) এর বাণিজ্যিক উৎপাদন সফলভাবে শুরু হয়েছে।’

এ ছাড়া বিদ্যুৎ বিতরণ থেকে সব ধরনের ব্যবস্থা সফটওয়্যারভিত্তিক করতে কাজ এগিয়ে চলছে বলে জানানো হয়।

মন্ত্রী জানান, পায়রা ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রটি এখন পর্যন্ত স্থাপিত দেশের সবচেয়ে বড়। বাংলাদেশ এখন বিশ্বের ১৩তম আলট্রা সুপারক্রিটিক্যাল প্রযুক্তি ব্যবহারকারী দেশ। জ্বালানি সাশ্রয়ী পরিবেশবান্ধব ক্লিন কোল প্রযুক্তির বিদ্যুৎ কেন্দ্রটির দক্ষতা ৪৪ দশমিক ২৯ শতাংশ। সালফার নিঃসরণ নিয়ন্ত্রণে বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সাথে ফ্লু গ্যাস ডিসালফারাইজেশন (এফজিডি) স্থাপন করা হয়েছে। ফ্লাই অ্যাশ কমাতে ৯৯ শতাংশ দক্ষতাসম্পন্ন ইলেক্ট্রো স্ট্যাটিক প্রেসিপিটেটর (ইএসপি) বিদ্যুৎকেন্দ্রের সঙ্গে সংযোজিত হয়েছে।

প্রতিমন্ত্রী জানান, টেকসই উন্নয়ন এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অব্যাহতভাবে এগিয়ে নিতে বিদ্যুৎ খাত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। বিদ্যুৎ খাতের পরিকল্পনা সফলভাবে বাস্তবায়িত হলে প্রধানমন্ত্রীর ভিশন বাস্তবায়ন করে ২০৪১ সালের মধ্যে দেশ একটি উন্নত-সমৃদ্ধ দেশে পরিণত হবে।

– লালমনিরহাট বার্তা নিউজ ডেস্ক –