• শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

  • || ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

সর্বশেষ:
ছয়দিনের সফরে ব্যাংককে পৌঁছেছেন প্রধানমন্ত্রী গরমে ‘অতি উচ্চ ঝুঁকিতে’ বাংলাদেশের শিশুরা: ইউনিসেফ গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা: বেরোবি কেন্দ্রের পরীক্ষার্থী ৩১ হাজার ৯৪৬ জন বাংলাদেশ-ভারত ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করবে: ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী কাতারের আমিরের সফরে যা পেল বাংলাদেশ

আরইবির মডেল গ্রাম ফর্মুলা বদলে দিতে পারে গ্রামীণ অর্থনীতি 

– লালমনিরহাট বার্তা নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ১ ফেব্রুয়ারি ২০২২  

নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সুবিধা বদলে দিতে পারে গ্রামীণ অর্থনীতি। বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের (আরইবি) ‘মডেল গ্রাম’ ফর্মুলা বিশ্লেষণে উঠে এসেছে সেই চিত্র। দেখা গেছে, এক বছরেই কৃষির নানা খাতে মডেল গ্রামগুলোতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ২৫ থেকে ১২২ ভাগ।

নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের ফলে মডেল গ্রামে গড়ে উঠছে ভারী শিল্প। ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পের বিকাশ হয়েছে প্রত্যাশার চেয়ে বেশি। বলা হচ্ছে এক বছরেই গ্রামগুলোতে কর্মসংস্থান বেড়েছে ৪৪ ভাগ।

গ্রামে গ্রামে বিদ্যুৎ পৌঁছে গেলেও নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ না পাওয়ার পুরনো অভিযোগ রয়েই গেছে। আরইবি বলছে, গ্রামীণ জনপদেও শহরের সেবা সম্প্রসারণ করতে চায় তারা। এ জন্য দেশের ৮০টি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি থেকে ৮০টি মডেল গ্রাম বেছে নেওয়া হয়েছিল। যেখানে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সুবিধা দেওয়া হয়েছে।

সরকারের হাতে উদ্বৃত্ত বিদ্যুৎ রয়েছে। কিন্তু অবকাঠামোগত জটিলতায় সবখানে সবসময় নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সুবিধা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। বিশেষ করে গ্রীষ্মে চাইলেই চাহিদার পুরো বিদ্যুৎ দেওয়া যায় না। বর্ষাতেও ঝড়ের কারণে সংকটে পড়ে আরইবি।

কিন্তু কোনও গ্রামে বিদ্যুৎনির্ভর শিল্প গড়ে তোলা হলে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ না পেলে বিনিয়োগকারী সংকটে পড়বেন। সেক্ষেত্রে মুনাফার বদলে লোকসান গুনতে হতে পারে।

আরইবি বলছে, সারাদেশে এখন গ্রাম আছে ৮৮ হাজার ৭৭৮টি। এরমধ্যে আরইবির ভৌগোলিক এলাকায় পড়েছে ৮৪ হাজার ৭০০টি। এসব গ্রামের প্রায় সবগুলোতেই বিদ্যুৎ আছে। এরমধ্যেই ৮০টি মডেল গ্রামে দেওয়া হয়েছে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ। আরইবি বলছে, এক বছরেই যে ইতিবাচক পরিবর্তন ঘটেছে তা চোখে পড়ার মতো।

ওই ৮০টি গ্রামে আগে আরইবি বিদ্যুৎ বিক্রি করতো ২০ কোটি ৫৪ লাখ ২৯ হাজার টাকার। এখন তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৫ কোটি ৯ লাখ ৫৭ হাজার টাকায়। এতে যে শুধু গ্রাহক উপকৃত হয়েছেন তা নয়, আরইবিও লাভবান হয়েছে। এখানে গ্রাহকও বেড়েছে ২৪ হাজার ৮৮১ জন। শতকরার হিসাবে যা ১৫ ভাগ।

কৃষি সেচের সংখ্যা আগে ছিল ৫১৬, এখন ১৪৬টি বেড়ে হয়েছে ৭১৬টি। বৃহৎ ও মাঝারি শিল্প সংযোগ ছিল ২৮৯, এখন ৩০৬। পোল্ট্রি শিল্পের সংখ্যা ১৫৫ থেকে ২৮৭টি হয়েছে। আগে যেখানে ৫০টি মাছের খামার বিদ্যুৎ ব্যবহার করতো এখন সেখানে ১১১টি মাছের খামার বিদ্যুৎ নিচ্ছে।

বলা হচ্ছে, এসব গ্রামে আগে শিল্প কারখানায় ১৭ হাজার ৮৯৪ জন কাজ করতো। এখন সেখানে কাজ করছে ২৫ হাজার ৭২৮ জন। অর্থাৎ ৭ হাজার ৮৩৪ জনের নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে। শতকরা হিসাবে যা ৪৪ ভাগ বেড়েছে।

নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ পেলে গ্রামে শিল্পের বিকাশ হলে শহরের ওপর চাপ কমবে বলে মনে করা হচ্ছে।

আরইবির এই মডেল গ্রাম নিয়ে বুয়েটের সাবেক অধ্যাপক ও জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ইজাজ হোসেন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, আরইবির এই উদ্যোগ প্রশংসনীয়। এমন গ্রাম সারা দেশেই হতে পারে। আরও গ্রামে এই উদ্যোগ নেওয়া উচিত।

তিনি বলেন, কর্মসংস্থান বাড়ানোর এই উদ্যোগে আরইবি ছাড়া অন্য বিতরণ কোম্পানিও অনুসরণ করতে পারে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে আরইবির সদস্য আমজাদ হোসেন বলেন, আমরা সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী ৮০টি গ্রামকে মডেল গ্রাম বানিয়েছি। এসব গ্রামে বিদ্যুৎ দেওয়া হয়েছে নিরবচ্ছিন্ন। বিদ্যুৎ দেওয়ার ফলে সেখানে অনলাইন সেবাগুলোও দ্রুতগতিতে চলছে। পাশাপাশি গড়ে উঠেছে নানা শিল্প। আমরা আরও গ্রামকে এভাবে আলোকিত করে তুলতে চাই। অন্যরাও এই মডেল অনুসরণ করে গ্রামগুলো আলোকিত করতে পারে।

– লালমনিরহাট বার্তা নিউজ ডেস্ক –