• শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

  • || ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

সর্বশেষ:
ছয়দিনের সফরে ব্যাংককে পৌঁছেছেন প্রধানমন্ত্রী গরমে ‘অতি উচ্চ ঝুঁকিতে’ বাংলাদেশের শিশুরা: ইউনিসেফ গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা: বেরোবি কেন্দ্রের পরীক্ষার্থী ৩১ হাজার ৯৪৬ জন বাংলাদেশ-ভারত ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করবে: ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী কাতারের আমিরের সফরে যা পেল বাংলাদেশ

বঙ্গবন্ধুর খুনিদের বিচারের অপেক্ষায় ৪৫ বছর ধরে চুল কাটেন নি জহির 

– লালমনিরহাট বার্তা নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ১১ মার্চ ২০২০  

বঙ্গবন্ধুর খুনিদের বিচারের অপেক্ষায় তার ছিল কঠিন পণ। ঘাতকদের যত দিন শাস্তি না হবে তত দিন চুল কাটবেন না। চুলে তেল দেবেন না। এমনকি চিরুনিও ব্যবহার করবেন না। আর এ অপেক্ষার সময়টা ক্রমেই দীর্ঘ হতে থাকে। এভাবেই কেটে গেছে ৪৫টি বছর। বঙ্গবন্ধুর প্রতি এ বিরল ভালোবাসার কারণে তাকে অনেক সময় বিড়ম্বনায়ও পড়তে হয়েছে। তবে তিনি নিজের সিদ্ধান্তে অটল থেকেছেন। শয়ন ঘরটি বঙ্গবন্ধুর ছবি আর আওয়ামী লীগের বিভিন্ন কর্মসূচির ব্যানার-পোস্টারে সাজিয়ে রেখেছেন।
আলোচিত ব্যক্তিটি হলেন মুক্তিযোদ্ধা হতদরিদ্র দিনমজুর জহির উদ্দিন। নওগাঁর রাণীনগর উপজেলার আনালিয়া খলিসাকুড়ি গ্রামের বাসিন্দা। তার দিন কাটে মাটির ঘরে। বয়সের ভারে অনেকটাই ন্যুব্জ। শারীরিক শ্রম দিয়ে অর্থ উপার্জনের ক্ষমতাও আর নেই। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুস্বাস্থ্য কামনা করে সাধ্যমতো মাঝেমধ্যেই দোয়া মাহফিলের আয়োজন করেন জহির উদ্দিন। তার একটাই আফসোস, একাত্তরের রণাঙ্গনের সক্রিয় যোদ্ধা হয়েও সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীলদের খুশি করতে না পারায় তিনি মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে সরকারি কোনো সুযোগ-সুবিধা পাননি আজও।

জানা যায়, ছোটবেলা থেকেই বঙ্গবন্ধুর আদর্শে অনুপ্রাণিত জহির উদ্দিন। যেখানে বঙ্গবন্ধুর ভাষণ কিংবা তার মিটিং-মিছিল আর আলোচনা সেখানেই হাজির হতেন তিনি। জাতির জনকের ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ভাষণে উদ্বুদ্ধ হয়ে দেশকে শত্রুমুক্ত করার প্রত্যয়ে বাড়ি ছাড়েন জহির উদ্দিন। ভারতের শিলিগুড়ি ও মধুপুর ক্যাম্পে প্রায় পাঁচ মাস প্রশিক্ষণ শেষে ক্যাম্প কমান্ডার উপজেলার সিম্বা গ্রামের তসলিম উদ্দিনের সঙ্গে যোগ দেন তিনি। পরে বিভিন্ন স্থানে হানাদার পাকিস্তানি বাহিনীর সঙ্গে সম্মুখযুদ্ধে লিপ্ত হন তারা।

পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট জাতির জনককে সপরিবারে হত্যার খবর শুনে শোকেস্তব্ধ হয়ে পড়েন। প্রতিজ্ঞা করেন, বঙ্গবন্ধুর খুনি এবং রাজাকার, আলবদর ও আল শামসদের বিচার না হওয়া পর্যন্ত মাথার চুল কাটবেন না। অবশেষে খুনিদের বিচার হয়েছে। তবে এরই মধ্যে পেরিয়ে গেছে ৪৫টি বছর। এ বঙ্গবন্ধুপ্রেমী আজ ৬৭ বছরের বৃদ্ধ। দীর্ঘদিন চুল না কাটায় এবং চিরুনি ব্যবহার না করায় মাথার সব চুল জট পাকিয়ে গেছে।

জহির উদ্দিনের সহযোদ্ধা মুক্তিযোদ্ধা শামসুর রহমান বলেন, সে যুদ্ধকালীন আমার সঙ্গেই থেকেছে। সরকারি সুযোগ-সুবিধার জন্য আবেদন করলেও রহস্যজনক কারণে আজও সে বঞ্চিত। অথচ তার দিন কাটছে খুবই অভাব-অনটনে।

জহির উদ্দিনের মতো একজন বঙ্গবন্ধুপ্রেমী মুক্তিযোদ্ধা হয়েও তালিকার বাইরে থেকে যাওয়া সম্পর্কে জানতে রাণীনগর থানা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার ইসমাইল হোসেনের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করলে তিনি এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি।

– লালমনিরহাট বার্তা নিউজ ডেস্ক –