• বুধবার ০১ মে ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৮ ১৪৩১

  • || ২১ শাওয়াল ১৪৪৫

কায় ক্ষমতায় আইসে আসুক, হামা কম দামে সার-বীজ চাই

– লালমনিরহাট বার্তা নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ২৭ নভেম্বর ২০২৩  

‘কায় ক্ষমতায় আসিল, আর কায় হামাক কি দিবি এল্লা নিয়ে চিন্তা করার সময় হামার নাই বাহে। হামা যদি জমিত আবাদ করির পাই তাহলে হামার পেটোত ভাত যাইবে। আর আবাদ করির না পাইলে হামার পেটোত ভাত জুটবে না। কায় ক্ষমতায় আইসে আসুক অইল্লা দেখার টাইম হামার নাই বাহে, হামা কম দামে সার, বীজ আর তেল চাই।’ এভাবেই কথাগুলো বলছিলেন লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার চর হলদীবাড়ি গ্রামের কৃষক আশরাফ আলী।

একদিকে ক্ষমতাসীন দল নির্বাচন নিয়ে ব্যস্ত, অন্যদিকে বিরোধী দল আন্দোলনে ব্যস্ত। এনিয়ে কোনো মাথা ব্যথা নেই গ্রামের সাধারণ মানুষজনের। তারা ব্যস্ত তাদের ক্ষেত খামারে চাষাবাদ নিয়ে। এ বছর সবজিসহ বিভিন্ন কাঁচামালের দাম ভালো পাওয়ায় কৃষকরা আরও বেশি পরিমাণ জামিতে সবজি আবাদ করছেন।
   
সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, আমন ধান ও বাদাম ঘরে তোলার পর পরই জমি পতিত না রেখে আবারও ফসল ফলানোর জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। স্থানীয় কৃষকরা ভুট্টাসহ আলু, পেঁয়াজ, রসুন ও মিষ্টিকুমড়া চাষাবাদে ব্যস্ত সময় পার করছেন। ফলে কর্মসংস্থান হয়েছে অনেক পুরুষ ও নারী শ্রমিকের। এ অঞ্চলে কৃষি সেক্টর ছাড়া, তেমন কোনো কাজের সুযোগ নেই ।

জানা গেছে, তিস্তা নদীটি নীলফামারী সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে লালমনিরহাট জেলার ৫ উপজেলা দিয়ে কুড়িগ্রাম জেলা হয়ে ব্রহ্মপুত্র নদে মিলিত হয়েছে। দেশের অভ্যন্তরে ১১৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের এ নদীটি লালমনিরহাট অংশে পড়েছে বেশির ভাগ অংশ।

লালমনিরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, জেলায় আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৬ হাজার ৩ শত হেক্টর জমিতে আর ভুট্টা ৩২ হাজার ৯শত ২০ হেক্টর জমিতে। এছাড়া পেঁয়াজ ৯শত হেক্টর ও রসুন ৪শত হেক্টর জমিতে চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে কৃষি বিভাগ।

কৃষিবিভাগ জানায়, লালমনিরহাটের বিভিন্ন চরাঞ্চলের ৬০ হাজার হেক্টর জমির মধ্যে ৬৫ হাজার হেক্টর জমিতে বিভিন্ন প্রকার আবাদ করা হয়ে থাকে।

হাতীবান্ধা উপজেলার চর সিন্দুর্না গ্রামের বৃদ্ধ মমতাজ আলী জানান, কে ক্ষমতায় আসলো তা নিয়ে আমাদের মাথা ব্যথা নেই। আমরা চাই কম দামে যেন সার, বীজ ও তেল ক্রয় করতে পারি। ভালোভাবে সার দিতে পারলে ভালো ফসল পাবো এতে আমাদের সব চাহিদা পুরণ হবে।

একই এলাকার মকবুল হোসেন বলেন, তিস্তার চরে আমার এক একর জমি আছে। সেই জমিতে প্রতিবছর বিভিন্ন ফসল আবাদ করি। চরের এক বিঘা জমিতে পেঁয়াজ চাষে সব মিলিয়ে খরচ হয় প্রায় ১৫-২০ হাজার টাকা। আর এক বিঘা জমিতে পেঁয়াজ উৎপাদন হবে ৩০-৩৫ মণ।

তিস্তার চরে কাজ করতে এসেছেন ছকিনা বেগম নামের এক নারী। তিনি জানান, সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত কাজ করলে মজুরি পাই ৪০০ টাকা। পুরুষরা পান ৬০০ টাকা। মজুরিটা একটু বেশি হলে ভালো হতো। তারপরেও নিয়মিত কাজ থাকার কারণে সংসারে অভাব কমেছে।

– লালমনিরহাট বার্তা নিউজ ডেস্ক –