• বৃহস্পতিবার ০২ মে ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৮ ১৪৩১

  • || ২২ শাওয়াল ১৪৪৫

বাড়ি বাড়ি গিয়ে নমুনা নেন এই আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা   

– লালমনিরহাট বার্তা নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ২৬ এপ্রিল ২০২০  

করোনাভাইরাসের কবল থেকে একটি উপজেলার মানুষকে রক্ষায় মাঠে নেমে পড়েছেন স্বয়ং একজন আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও)। বাড়ি বাড়ি গিয়ে সন্দেহভাজন রোগীর নমুনা সংগ্রহ করছেন তিনি।

কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আরএমও মুজিবুর রহমান এ পর্যন্ত ৬৮ জনের নমুনা সংগ্রহ করেছেন। এর বাইরে হাসপাতালে এসে নমুনা দিয়ে গেছেন ৯ জন।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, নমুনা সংগ্রহের কাজ একজন আরএমওর নয়। নিয়ম হচ্ছে, মেডিকেল টেকনোলজিস্টরা হাসপাতালে নমুনা সংগ্রহ করবেন। কিন্তু স্বপ্রণোদিত হয়ে যখন কেউ পরীক্ষা করাতে হাসপাতালে আসছেন না, তখনই মুজিবুর রহমান বাড়ি বাড়ি যাওয়ার উদ্যোগ নেন। মুজিবুর রহমান বলেন, একজন করোনা রোগী যত আগে শনাক্ত হবেন, ততই ভালো।


প্রথম দিনের নমুনা সংগ্রহের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করতে গিয়ে মুজিবুর রহমান বলেন, ‘দুরুদুরু মন নিয়ে হ্যান্ড-গ্লাভস ও মাস্ক পরে যখন বের হলাম, তখন ছোট্ট মেয়েটার কথা মনে পড়ল। ভাবলাম, একটু কথা বলে নিই। আবার চিন্তা করলাম, না থাক। মনের মধ্যে জেদ ছিল, এই যুদ্ধে জিততে হবে। পেকুয়াকে ভালো রাখতে হবে। ওই দিন নারায়ণগঞ্জফেরত পাঁচজনসহ ছয়জনের নমুনা সংগ্রহ করি।’
এই ৭৭ জনের মধ্যে নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর, ঢাকা, সাতকানিয়া, পটিয়া, চট্টগ্রাম, বাঁশখালীফেরত ব্যক্তিরা রয়েছেন। ৩ এপ্রিল কক্সবাজার মেডিকেল কলেজে পিসিআর ল্যাব স্থাপনের পর ৬ এপ্রিল থেকে পেকুয়ায় নমুনা সংগ্রহ শুরু হয়। তবে এ পর্যন্ত যত পরীক্ষা করা হয়েছে, তাতে কেউ পজিটিভ হননি।

পেকুয়া হাসপাতালে নয়জনের নমুনা নিয়েছেন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের দুই মেডিকেল টেকনোলজিস্ট আতিকুল বাহার ও জহির উদ্দিন।

তিক্ত অভিজ্ঞতাও আছে মুজিবুর রহমানের। রাজাখালী ইউনিয়নের সুন্দরীপাড়ায় নারায়ণগঞ্জফেরত এক ব্যক্তির নমুনা সংগ্রহ করতে গিয়ে বাধার মুখে পড়েন। এই চিকিৎসক বলেন, ‘যাঁর নমুনা সংগ্রহ করতে যাই, তিনি স্থানীয় এক রাজনীতিকের ছেলে। তিনি কোনোভাবেই নমুনা দেবেন না। অনেক বোঝানোর পর কাজ না হলে পরে পুলিশের সাহায্য নিয়ে নমুনা সংগ্রহ করতে হয়। তবে গালাগালও কম শুনতে হয়নি।’

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জেলার অন্য উপজেলাগুলোতে বাড়ি বাড়ি গিয়ে নমুনা সংগ্রহ করা হতো না। পেকুয়ার বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে গত সপ্তাহ থেকে রামু ও মহেশখালীতেও একই রকম কাজ শুরু হয়।

মুজিবুর রহমানের বাড়ি পেকুয়ার বারবাকিয়া ইউনিয়নের বারইয়াকাটা গ্রামে। ১৯৯৬ সাল থেকে টানা পেকুয়ায় চিকিৎসাসেবা দিয়ে যাচ্ছেন তিনি। ২০০১ সালে পেকুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যোগ দেন। এখন দায়িত্ব পালন করছেন আরএমও হিসেবে। স্ত্রী রেহেনা বেগম একটি বেসরকারি ব্যাংকে চাকরি করেন। তাঁদের তিন ছেলেমেয়ে ঢাকা ও চট্টগ্রামে লেখাপড়া করে।

– লালমনিরহাট বার্তা নিউজ ডেস্ক –