শনি গ্রহের অজানা কিছু তথ্য
শনি গ্রহ নিয়ে জানার আগ্রহ বরাবরই সবার বেশি। শনি নিজেই তার প্রতি আগ্রহ সৃষ্টি করেছে আমাদের মনে। তাই আজ আমরা শনি গ্রহের কিছু অজানা তথ্য নিয়ে আলোচনা করবো। টাইটান আবিষ্কার এর পরে ক্রিশ্চিয়ান হাইগ্যান্স লক্ষ্য করলেন, টাইটানের শনিকে পরিক্রমণকালে এর কক্ষপথ কিছুটা হেলে আছে। তিনি বলেন এমনটা হওয়া সম্ভব, যদি গ্রহ নিজেও কিছুটা হেলে থাকে।
পরবর্তীতে আমরা জানতে পারি গ্রহটি তার কক্ষপথে ছাব্বিশ দশমিক সাত ডিগ্রি কোণে হেলে সূর্যকে পরিক্রমণ করে। গ্যালিলিওর চিত্রগুলি ব্যাখ্যা দেয়া তখনি সম্ভব যদি শনির চারপাশে বলয় আকৃতির কিছু থেকে থাকে। যা হবে সমতল উপবৃত্তাকার এবং ঢাল বিশিষ্ট। মূলত এভাবেই শনির বলয়ের ধারণাটি সবার সামনে আসে।
১৬৭৫ সালে ক্যাসিনি লক্ষ্য করলেন শনির বলয়ের মাঝে একটি ফাঁকা স্থান রয়েছে। যা বলয়টিকে সম্পূর্ণ দুই ভাগে বিভক্ত করে রেখেছে। পরবর্তীতে এই ফাঁকা স্থানকে ক্যাসিনির নামেই ক্যাসিনি ডিভিশন এবং দুটি রিংকে এ রিং এবং বি রিং নামে নামকরণ করা হয়।
ক্যাসিনি শনির ১২টি উপগ্রহ আবিষ্কার করেন। প্রথম দিকে শনির বলয়কে নিরেট কোনো পাত ভাবা হলেও পরবর্তীকালে বিজ্ঞানীরা তাদের এই ধারণা থেকে বের হয়ে আসেন। ১৮৫৭ সালে জেমস ক্লার্ক ম্যাক্সওয়েল বলেন বলয় আসলে অসংখ্য কণা দ্বারা সৃষ্ট। পায়োনিয়ার এগারো যখন ১৯৭৯ সালে শনিকে পরিক্রমণ করে তখন দেখতে পায় ক্যাসিনি ডিভিশন ও পুরোপুরি শূন্য নয় এখানেও ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র কণা রয়েছে যা আসলে সূর্যের আলোকে ভালোভাবে প্রতিফলন করতে পারে না বলে ফাঁকা এবং অন্ধকারাচ্ছন্ন ছিল মনে হয়। ছি ও ডি রিংটি দুইটি পাইনিয়ার এগারো খুঁজে বের করে। এফ রিংটি শনি থেকে প্রায় পঁচিশ মাইল দূরে এ গ্রহের প্রান্ত দেশে অবস্থিত। ই রিংটি সব থেকে দূরে অবস্থিত হলেও এফ এবং ই এর মাঝখানে জী নামের আরেকটি রিং রয়েছে।
আসলে বলয় বা রিংগুলো অনেকগুলো রিং এর সমষ্টি যা আলাদাভাবে বোঝা যায় না। বলয়ের বিস্তার একশো সত্তর হাজার মাইল হলেও সেই তুলনাই পূরত্ব খুবই নগণ্য, প্রায় ১০০ মিটার এর। ভয়জারের পাঠানো ছবি বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় যে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র বরফকনা মেঘ ও গ্যাসীয় উপাদানই বলয়ের মুল উপাদান। কয়েক সেন্টিমিটার থেকে কয়েক মিটার বড় কণা দিয়েই সৃষ্ট শনির বলয়।
মজার ব্যাপার হলো এই বস্তুগুলো রাডার সিগন্যাল প্রতিফলন করতে সক্ষম বিধায় এই সিগন্যালকে বিশ্লেষণ করে শনির বলয় সম্পর্কে বিজ্ঞানীরা ধারণা নিয়ে থাকেন। উচ্চ রেজুলাশনের ছবিতে দেখা যায় বলয়ের বিভিন্ন অংশের রঙ একেক রকম। এর থেকে ধারণা করা হয় বলয়ের সকল স্থানের গঠন ও উপাদানের কম্পোজিশন এক নয়। কালো অংশগুলোতে কার্বনের আধিক্য রয়েছে বলে মনে করা হয়।
১৯০০ সালের মধ্যবর্তী সময় পর্যন্ত ধারণা করা হত শনি উপগ্রহ সৃষ্টির পরে অবশিষ্ট বস্তুসমূহ রিংয়ের রূপ নিয়েছে। কিন্তু এখন আমরা জানি রিং এর গঠনকারী এই বস্তু সমূহ স্থায়ী নয়। বরং গ্রহের বিশাল গ্র্যাভিটেশনের ফলে প্রতিনিয়ত এগুলোর পরিবর্তন ঘটছে। এমনকি নতুন কণা বা বস্তু যোগ না হলে এক সময় রিঙগুলো অদৃশ্য হয়ে গেলও অবাক হবার কিছু নেই। শনির উপগ্রহগুলো রিং এর উপাদান এর যোগানদাতা। কারণ কোন বড় ধরনের সংঘর্ষের ফলে যে সকল বস্তু উপগ্রহ থেকে ছিটকে বেরিয়ে আসে তা যোগ হয় রিং এর অংশ হিসেবে। প্রতিটি গ্রহের গ্রাভিটেশনাল পুলিং এর একটি লিমিট লাইন আছে। একে বলা হয় রচি লিমিট। গ্রহের একটি নির্দিষ্ট ব্যাসার্ধের মাঝে চলে আসলে গ্রহের প্রচন্ড রকম গ্র্যাভিটেশনের ফলে ছোট বস্তুগুলো, যেমন উপগ্রহ গ্রহাণূ ও বাহির থেকে আগত কোন ধুমকেতু ভেঙে চুরে চুরমার হয়ে যায়। এভাবেও রিং এর সৃষ্টি হয়েছে বলে দাবি করা হয়।
স্পেস ক্র্যাফট পাইনিওর এর অন্যতম আবিষ্কার ছিল শনি গ্রহের চুম্বক বলয়, যা আমাদের পৃথিবীর চৌম্বক ক্ষেত্র থেকেও হাজারগুণ বেশি শক্তিশালী। সাধারণত গ্রহগুলোর তরু ম্যাগ্নেটিভ বল থেকে ম্যাগ্নেটিভ বল যা কম্পাস নির্দেশ করে এবং তা কিছুটা দূরে অবস্থান করে বা কিছুটা বিচ্যুতিও দেখা যায়। তবে এটি এদিক থেকে কিছুটা আলাদা এখানে কম্পাস প্রায় ১০০ শতাংশ সঠিক উত্তর দক্ষিণ নির্দেশ করে ৯৬ শতাংশ হাইড্রোজেনের আধিক্য পূর্ণ শনির নিরক্ষীয় অঞ্চলে বয়ে চলেছে মহাশক্তিশালী হারিকেন ঝড়।
আমরা আগেই জেনেছি শনির ভর প্রায় একশটি পৃথিবীর ভরের সমান কিন্তু মজার ব্যাপার হলো শনির ঘনত্ব এতই কম যে সৌরজগত যদি কোন বিশাল সমুদ্র হত তবে সেখানে শনি গ্রহ অনায়াসে সাঁতার কাটতে পারত অর্থাৎ ভেসে থাকত। হাইড্রোজেন ছাড়াও অন্য উপাদান হলো হিলিয়াম। শনি গ্রহ বৃহস্পতির মত উজ্জ্বল নয় কিছুটা হলদেটে। এখানে বৃহস্পতির মত রেড স্পট দেখতে পাওয়া না গেলেও নিরক্ষরই রেখা বরাবর কিছু কালো বেল্টের মত দেখা যায়।
শনির নিরক্ষীয় অঞ্চলের মেঘগুলো ১১০০ মিটার প্রতি ঘণ্টাই ছুটে চলে যা সৌরজগতের সব কিছু থেকে দ্রুত ধাবমান মেঘ। মেরু অঞ্চলের দ্রুত ও মন্থরগতির উভয় গতির বায়ু প্রবাহ দেখা যায়। পৃথিবীতে বায়ুপ্রবাহ উত্তর গোলার্ধে ঘড়ির কাটার দিকে আর দক্ষিণ গোলার্ধে ঘড়ির কাটার বিপরীত দিকে দেখা গেলেও শনির দুই গোলার্ধে একই দিক বায়ু প্রবাহ দেখা যায়। সূর্য থেকে দূরত্বের কারণে শনির উপরিভাগের উষ্ণতা প্রায় ২০০ ডিগ্রী ফারেনহাইট। যার ফলে এর বায়ুমন্ডলে গ্যাসের মেঘ ভাসতে দেখা যায়।
শনির অভ্যন্তর বৃহস্পতি গ্রহের মতই। এর অভ্যন্তরে রয়েছে বিশাল গ্যাসের সমুদ্র। এর কেন্দ্রের চাপ এতই বেশি যে সেখানে হাইড্রোজেন গলিত ধাতুর মতো আচরণ করে। তুলনামূলকভাবে বৃহস্পতি গ্রহ থেকে শনি গ্রহের কেন্দ্রের দিকের ভর বেশি ঘনীভূত হতে দেখা যায়। শনির কেন্দ্রে কিছু পরিমাণ লিহা ও পাথর রয়েছে বলে ধারণা করা হয়। শনি থেকে আগত রেডিয়েশন বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় সূর্য থেকে যে পরিমান শক্তি গ্রহটি গ্রহণ করে এর থেকে বেশি পরিমাণ শক্তি সে মহাকাশে ছড়িয়ে দেয়। শনি গ্রহটি সব সম্য আগ্রহের ক্রেন্দ্র বিন্দুতে ছিল।
১৯৭৯ সালে পাইনিওর এর মাধ্যমে প্রথম কাছাকাছি অবস্থান থেকে শনি গ্রহের তথ্য সংগ্রহ করা শুরু করা হয়। ১৯৮০ এবং ১৯৮১ সালে যথাক্রমে সে কাজটি করে ভয়েজার ১ এবং ভয়েজার ২। তার ধারাবাহিকতায় শনির উদ্দেশ্যে পুরনাজ্ঞ মিশন ক্যাসিনি, হাইগেন্সের পরিকল্পনা করা হয় আশির দশকে। ক্যাসিনি মিশন মানুষকে নিরাশ করেনি। অক্টোবর ১৫, ১৯৯৭ সালে উৎক্ষেপণের পরে প্রায় ৮০০ কোটি কিলোমিটার পাড়ি দিয়ে ২০০৪ সালের ৩০ জুলাই ক্যাসিনি প্রবেশ করে শনির কক্ষপথে।
২০০৮ সালে মিশন সম্পন্ন হবার কথা থাকলেও পরপর দুইবার মিশনের সময় বৃদ্ধি করা হয় যথাক্রমে ২০০৮ ও ২০১০ সালে। বিশ বছরে মিশনের পরি সমাপ্তি হয় ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৭ সালে। ইস্টার্ন সময় অনুসারে সকাল ৬টা ৩২ মিনিটে ক্যাসিনি তার অন্তিম সিগন্যাল পৃথিবীর উদ্দেশ্যে প্রেরণ করে যা এসে পৌঁছায় সাতটা পঞ্চান্ন মিনিটে। ততক্ষণে শেষবারের মত ফ্লাই বাই করে ক্যাসিনি ঝাপ দেয় শনির বুকে। ক্যাসিনি কেবল শনি গ্রহের নয় বরং তথ্য দিয়েছে বৃহস্পতির এবং শনির উপগ্রহগুলো সম্পর্কেও। শনির হাজারও রকমের তথ্যের মাঝে অন্যতম ছিল উত্তর মেরু সরভুজ সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ। এই ক্যাসিনি রিং এর বাইরেও ফিভি রিং নামের আর একটি রিং এর আবিষ্কার করে আট মিলিয়ন কিলোমিটারের এই রিং এখন পর্যন্ত আবিষ্কৃত সব থেকে বেশি ব্যাসার্ধের রিং। মহাকাশ বিজ্ঞানের ক্যাসিনি মিশন সর্ব কালের একটি গুরুত্বপূর্ণ মিশন হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
– লালমনিরহাট বার্তা নিউজ ডেস্ক –- লালমনিরহাট জেলা সমিতির নতুন কমিটি গঠন
- বাজুস এখন শক্তিশালী সংগঠন
- ধূমপান বা তামাক স্বাস্থ্যের জন্য কতটা ক্ষতিকর
- সত্যি কী আমিরাতের গোল্ডেন ভিসা পাচ্ছেন শাকিব খান?
- হজের জন্য মাহরাম না পেলে নারীদের করণীয় কী?
- রাশিয়ার সাথে সম্ভাব্য সংঘাতের প্রস্তুতি নিচ্ছে ন্যাটো: মস্কো
- অপসাংবাদিকতা মূল সাংবাদিকতাকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে: তথ্য প্রতিমন্ত্রী
- ট্রেন সুবিধায় আরো এক ধাপ এগিয়ে গেল দক্ষিণবঙ্গ: রেলমন্ত্রী
- ‘যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের মাধ্যমে আমরা পাপমুক্ত হয়েছি’
- ‘মৎস্যসম্পদ রক্ষার মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করতে হবে’
- উপজেলা নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার নিয়ে যে নির্দেশনা দিল ইসি
- টেনিস খেলাকে জনপ্রিয় করতে কাজ করা হচ্ছে: নৌপ্রতিমন্ত্রী
- ট্রেন সার্ভিসের মাধ্যমে রাজধানীর চাপ কমে আসবে: চিফ হুইপ
- ‘উদ্যোক্তারাই দেশের ভবিষ্যৎ অর্থনৈতিক অগ্রগতির কাণ্ডারি’
- তীব্র গরমেও শীতল বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস
- চাই না মুক্তিযুদ্ধ চেতনাবিরোধী শক্তি ক্ষমতায় আসুক
- ২০৩০ সালের মধ্যে ৩৫ শতাংশ কার্বণ নিঃসরণ কমাতেই হবে
- খুলেছে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান
- হাতীবান্ধায় মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের নতুন কমিটি ঘোষণা
- গ্রীষ্মকালে শীতল ত্বক : শসার মাস্ক
- মুসলিম উম্মাহর একাত্মতা ফিলিস্তিন সংকট সমাধানে ভূমিকা রাখতে পারে
- বাংলাদেশ-গাম্বিয়া জয়েন্ট বিজনেস টাস্কফোর্স গঠনের প্রস্তাব
- ডর্টমুন্ডের সঙ্গে এক যুগের সম্পর্ক ছিন্ন করছেন এই ফুটবলার
- ব্যাভিচারের বিরুদ্ধে লড়াই করে পুরস্কার পেলেন ‘অভাগী’ মিথিলা
- হজের ক্ষেত্রে শয়তান যেসব ওয়াসওয়াসা দেয়
- মার্কিন বাহিনীর ওপর হামলার পরিকল্পনা ভেস্তে দিলো কুয়েত
- যেসব জেলায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শনিবার বন্ধ থাকবে
- আমাদের কাছে সব প্রার্থী সমান: ইসি রাশেদা
- খাড়িয়া ভাষা সংরক্ষণের আহ্বান প্রধান বিচারপতির
- রোহিঙ্গা গণহত্যার বিচার দ্রুত নিষ্পত্তি চায় বাংলাদেশ-গাম্বিয়া
- আদিতমারীতে জুয়ার আসর থেকে স্কুলশিক্ষকসহ আটক ৮
- দেশজুড়ে আরো ৩ দিন হিট অ্যালার্ট জারি
- বোরো মৌসুমের ধান-চালের মূল্য নির্ধারণ করল সরকার
- রোগীর প্রতি চিকিৎসকের অবহেলা সহ্য করবো না: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
- সরকারি সুবিধা নিয়ে নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নিলে প্রার্থিতা বাতিল
- ‘যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের মাধ্যমে আমরা পাপমুক্ত হয়েছি’
- কারিগরির সনদগুলো কারা কিনেছেন বের করা হবে: ডিবিপ্রধান
- ইসরায়েলের এই বর্বরতা মেনে নেয়া যায় না: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
- শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আবার কবে বন্ধ হবে, জানালেন শিক্ষামন্ত্রী
- আইকনিক লিডার এখন কুন্তলা চৌধুরী
- প্রত্যেকের উচিত প্রধানমন্ত্রীকে সহায়তা করা: গণপূর্তমন্ত্রী
- বেরোবি উপাচার্যের নামে ভুয়া ই-মেইল, থানায় জিডি
- সৌদিতে ভারী বৃষ্টিতে ডুবে গেছে রাস্তাঘাট, ভেসে গেছে গাড়ি
- হাতীবান্ধায় মাদক ব্যবসায় বাঁধা দেয়ায় স্ত্রীকে মারধর
- আইপিএলে পান্ডিয়াদের বিরুদ্ধে জোচ্চুরির অভিযোগ!
- পুলিশের প্রতি ১১ নির্দেশনা
- আদিতমারীতে স্বামীর থাপ্পড়ে প্রাণ গেল স্ত্রীর
- ঢিলেঢালা পোশাক ও যথাসম্ভব ছায়ায় থাকুন: চিফ হিট অফিসার
- চতুর্থ ধাপের উপজেলা নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা
- অপবিত্র জায়গায় আল্লাহর নাম উচ্চারণ করা, শরিয়ত কী বলে?