• রোববার ০৫ মে ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ২২ ১৪৩১

  • || ২৫ শাওয়াল ১৪৪৫

প্যান্টের চেইন খুলে অধ্যক্ষের সামনে উত্তেজিত প্রভাষক, শাস্তি দাবি

– লালমনিরহাট বার্তা নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩  

লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের অধ্যক্ষের রুমে ঢুকে প্রভাষক জাহাঙ্গীর আলম শাহীন নিজের প্যান্টের বেল্ট ও চেইন খুলে অধ্যক্ষ সরওয়ার আলমের সঙ্গে অশালীন আচরণ করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ওই ঘটনার ৩৭ সেকেন্ডের একটি ভিডিও ক্লিপ ঘুরছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।

রোববার (৩ সেপ্টেম্বর) বিকেলে ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়ার পর মহিষখোচা উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল বের করে ওই শিক্ষকের শাস্তিসহ অপসারণ দাবি করেছে।

ভিডিওতে দেখা যায়, উত্তেজিত কলেজশিক্ষক জাহাঙ্গীর আলম শাহীন নিজের প্যান্টের বেল্ট ও চেইন খুলে অধ্যক্ষের উদ্দেশ্যে বলছেন, ‘আপনাকে ন্যাংটা হয়ে দেখাবো...’। অধ্যক্ষের কক্ষে কয়েকজন শিক্ষকের সামনে যিনি এ অশালীন আচরণ করেছেন। তবে এ সময় অধ্যক্ষের কক্ষে থাকা অপর শিক্ষকরা তাকে এ কাজ করা থেকে প্রতিহত করেন। পরে তিনি হাজিরা খাতায় সই করে সেখান থেকে বেরিয়ে যান। 

জাহাঙ্গীর আলম শাহীন লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের সাচিবিক বিদ্যা ও অফিস ব্যবস্থাপনা বিষয়ের জ্যেষ্ঠ প্রভাষক।  

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রোববার দুপুর ১২টা ২০ মিনিটে কলেজে আসেন জাহাঙ্গীর আলম শাহীন। অথচ সকাল ৯টায় আসার কথা শিক্ষক-কর্মচারীদের। পরে অধ্যক্ষের কক্ষে ঢুকে সই করার জন্য হাজিরা খাতা চান ওই শিক্ষক। এ সময় তাকে অধ্যক্ষ সরওয়ার আলম বলেন, ‘আপনি যতটার সময় এসেছেন ততটার সময় সই করেন।’ এতে রেগে গিয়ে প্যান্টের চেইন খোলার ঘটনা ঘটান তিনি। এ ঘটনার সময় আরও কয়েকজন শিক্ষক-কর্মচারী সেখানে উপস্থিত ছিলেন।  

ঘটনাস্থলে উপস্থিত সহকারী শিক্ষক আব্দুল জলিল বলেন, কলেজ আসার টাইম অনুযায়ী হাজিরা খাতায় সই করতে বলায় রেগে যান শাহীন স্যার। এরপর বাগবিতণ্ডার একপর্যায়ে নিজের প্যান্টের চেইন খুলতে থাকেন তিনি। কিন্তু আমি তাকে বাধা দিয়ে সরিয়ে দিয়েছি। 

অপর প্রত্যক্ষদর্শী ক্রীড়া শিক্ষক আনিছুর রহমান বলেন, ঘটনার সময় শাহীন প্যান্টের বেল্ট ও হুক খুলে ফেলেন। একপর্যায়ে তিনি চেইন খোলারও চেষ্টার পাশাপাশি প্রিন্সিপ্যাল স্যারকে দেখে নেওয়ারও হুমকি দেন।

অপর প্রত্যক্ষদর্শী শিক্ষক একরামুল হক বলেন, শিক্ষকরা যদি শিক্ষার্থীরা স্কুলে থাকা অবস্থায় তিনি এমন করেন তাহলে শিক্ষার্থীরা কী শিখবে তাদের কাছে। জাহাঙ্গীর আলম শাহীনের এটা চরম অন্যায় হয়েছে। ফলে তাকে শাস্তির আওতায় আনা হোক।

অভিযোগের বিষয়ে প্রভাষক জাহাঙ্গীর আলম শাহীন বলেন, পরিকল্পিতভাবে আমাকে চাকরিচ্যুত করার জন্য আমার বিপক্ষে একটি পক্ষ উঠেপড়ে লেগেছে। পুরো অডিও-ভিডিও প্রকাশ করা হোক তাতে আমার দোষ প্রমাণিত হলে আমার শাস্তি হবে।

কলেজের অধ্যক্ষ সরওয়ার আলম বলেন, রোববার আমার কক্ষে জাহাঙ্গীর আলম শাহীন যে আচরণ করেছেন সেটা অত্যন্ত ন্যাক্কারজনক। সবার সঙ্গে কথা বলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

কলেজ সূত্রে জানা যায়, গত ৬ আগস্ট অধ্যক্ষ সরওয়ার আলম কারণ দর্শানোর নোটিশ দেন জাহাঙ্গীর আলম শাহীনকে। এতে বলা হয় গত ২০ জুলাই থেকে ৩১ জুলাই পর্যন্ত ছুটি ছাড়াই অনুপস্থিত থেকে প্রতিষ্ঠানের শৃঙ্খলা ও শিক্ষার পরিবেশ বিঘ্নিত করেছেন। যা প্রতিষ্ঠানের শৃঙ্খলাবিরোধী। এ ছাড়াও দৈনিক ক্লাস রুটিনে ক্লাস থাকা সত্ত্বেও আপনি ক্লাস করেন না। যার কারণে শিক্ষার্থীদের লেখাপড়া চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। নোটিশ পাওয়ার সাত দিনের মধ্যে সশরীরে উপস্থিত হয়ে জবাব প্রদান করা না হলে বিধি মোতাবেক পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।  

– লালমনিরহাট বার্তা নিউজ ডেস্ক –