• রোববার ০৫ মে ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ২২ ১৪৩১

  • || ২৫ শাওয়াল ১৪৪৫

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা কি মানুষকেও ছাড়িয়ে যাবে?

– লালমনিরহাট বার্তা নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ২ জুলাই ২০২৩  

 
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা একেবারে নতুন কোনো ধারণা নয়। বিশেষত সায়েন্স ফিকশনে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা-চালিত রোবট কিংবা অসম্ভব ক্ষমতাধর রোবটের দৃশ্য দেখা গেছে বিস্তর। কিন্তু সম্প্রতি চ্যাটজিপিটি নামে একটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়েছে। 

লার্জ ল্যাঙ্গুয়েজ মডেলের ওপর ভিত্তি করে বানানো এই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা আপনাকে যেকোনো লেখা লিখে দিতে পারে। এমনকি এটি কোডিং করতেও সক্ষম। চ্যাটজিপিটির কাজ এখানেই সীমাবদ্ধ নয়। এটি আপনার সঙ্গে আলাপ করতে পারে। চাইলে গল্প, কবিতা, রম্যরচনা লিখে দিতে পারে। চ্যাটজিপিটির পাশাপাশি আরও কিছু কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা চালু হয়েছে। কিছু কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ছবি বানিয়ে দিতে পারে। আপনি কমান্ড দিলেই হলো। 

এড ব্লকারের কার্যকারীতা কমবে ইউটিউবেএড ব্লকারের কার্যকারীতা কমবে ইউটিউবে
গুগল, মাইক্রোসফট, মেটা, রেডিটের মতো টেক জায়ান্টরা ইতোমধ্যে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করতে শুরু করে দিয়েছে। মাইক্রোসফট তাদের সার্চ ইঞ্জিন বিং এবং চ্যাটবটের মাধ্যমে টেক্কা দিচ্ছে গুগলকে। গুগলও তাদের বার্ড কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দিয়ে ব্যবহারকারীদের সুবিধা বাড়াচ্ছে। গুগলে অন্য কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার প্রজেক্টও চালু হয়েছে। 

কেন এই তর্ক?
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা চালু হওয়ার পর অনেক প্রযুক্তিবিদ নড়েচড়ে বসেন। বিশেষত কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সব করে দিলে শিক্ষাখাতে বড় ধরনের সমস্যা তৈরি হতে পারে বলে আশঙ্কা করেন। এখন শিক্ষার্থীরা কোনোকিছু না পড়েই উত্তরটি বের করে অ্যাসাইনমেন্ট আকারে জমা দিতে পারে। কিন্তু সেটার বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। কারণ আগেও কপি ধরার সফটওয়ার ছিল। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তায় কোনো লেখা বানানো হলে সেটা ধরারও ব্যবস্থা আছে। তাছাড়া চ্যাটজিপিটি যেকোনো লেখার ক্ষেত্রে গাণিতিক মডেল অনুসরণ করে। 

চ্যাটজিপিটি এখন ওয়েবসার্চেও সক্ষমচ্যাটজিপিটি এখন ওয়েবসার্চেও সক্ষম
চ্যাটজিপিটি বা এমন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার কাছে তথ্যভাণ্ডার আছে। তারা এই তথ্যভাণ্ডার থেকে অনেক কিছু জেনারেট করে। তবে জেনারেট করার সময় তাদের সীমাবদ্ধতা আছে। চ্যাটজিপিটির কাছে ওয়েব এক্সেস নেই। অনেক ওয়েবসাইট এআই অথবা চ্যাটবট ব্লক করে দেয়। আপাতত এর কাছে পুরোনো কিছু তথ্যই রয়েছে। তাও ২০২১ সাল নাগাদ।

অর্থাৎ চ্যাটজিপিটি দিয়ে কেউ গবেষণার কাজ সহজ করতে পারে। তাছাড়া চ্যাটজিপিটি যে সবসময় নির্ভুল উত্তর দেয় তা কিন্তু নয়। সবকিছুই তার তথ্যভাণ্ডারে নেই। আমরা ইতোমধ্যে টেক্সাসের এক স্কুলে দেখেছি চ্যাটজিপিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সব শিক্ষার্থীর অ্যাসাইনমেন্ট সে লিখেছে বলে দাবি করেছে। পরে দেখা যায় দাবিটি ভুল। তাছাড়া নিরাপত্তা-জনিত বিষয় নিয়েও চ্যাটজিপিটিকে ভাবতে হচ্ছে। অনেক সমস্যা রয়েছে এখানে। চ্যাটজিপিটির তথ্যভাণ্ডার অনেক সমৃদ্ধ। তাই কিছু কিছু ক্ষেত্রে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাটি এগিয়ে যেতেই পারে। তবে মানুষকে ছাপিয়ে যাওয়ার ক্ষমতা তার পুরোপুরি নেই। কারণ মানুষই তাকে কমান্ড দেয় ও মানুষই তার প্রয়োজন অনুসারে তাকে নিয়ন্ত্রণ করছে। যদিও অনেকে বিষয়টি খেয়াল করছেন না। 

চাকরি যাওয়ার আশঙ্কা কেন তবে?
ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটের কথাই ধরা যাক। অনেকে ডাটা এন্ট্রি, কন্টেন্ট রাইটিং বা ছোটখাটো কাজ করতেন। স্ক্রিপ্ট রাইটিং থেকে শুরু করে প্রেজেন্টেশন তৈরিও করার কাজ করে আয় করা যেত। সেসব কাজ তো বন্ধ হয়ে গেছে। তাছাড়া সোশ্যাল মিশিয়ায় ক্লায়েন্টদের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য আলাদা লোক নিয়োগ দেয়ার বদলে চ্যাটবট রাখা সুবিধার। তাই এসব জায়গায় কর্মসংস্থান তো নষ্ট হয়েছেই। কিন্তু নতুন কর্মসংস্থান গড়ে ওঠেনি তা বলা যাবে না। এখন অনেক সহজেই অনেকে কন্টেন্ট লিখে ঘষামাজা করে আরও ভাল করতে পারেন। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সব তথ্য তাকে এনে দেন এবং তিনি কম সময়ে তা সাজিয়ে নেন। এভাবে নতুন পদ্ধতিতে আরও সহজে অনেকে কাজ করতে পারছেন। 

শঙ্কা কোথায় আসলে?
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিজেই শিখে ফেলেছে বাংলা। গুগলের সিইও সুন্দর পিচাই বলেছেন 'ব্ল্যাকবক্স' নামে একটি ঘটনার কারণে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিজেই কিছু সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলে। এই ব্ল্যাকবক্স ঘটনাটিকে এখনও বোঝা যাচ্ছে না। তাই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার নিজস্ব সিদ্ধান্ত নেওয়ার একটি বিষয় চলে আসে। মূলত কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা যখন নৈতিক বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে যাবে তখনই বিপত্তি বাঁধবে। আর এখানেই অনেকের শঙ্কা। কিন্তু ইয়ুভা নোয়াহ হারিরি বলেছিলেন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে দর্শনের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিতে হবে। তাই বিষয়টি এখনো সম্ভাবনার পর্যায়ে রয়েছে। প্রযুক্তি নিয়ে সবসময় প্রাথমিকভাবে শঙ্কা থেকেছে। এখনও আছে। তাই সামনের দিনের অপেক্ষাই করতে হবে। 

– লালমনিরহাট বার্তা নিউজ ডেস্ক –