• শুক্রবার ০৩ মে ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ২০ ১৪৩১

  • || ২৩ শাওয়াল ১৪৪৫

ইউএফও দেখার কয়েকটি সত্য ঘটনা

লালমনিরহাট বার্তা

প্রকাশিত: ১৫ ডিসেম্বর ২০১৮  

এলিয়েন নামটা আমাদের কাছে খুব আকর্ষণীয়। কারণ আমরা এর অস্তিত্ব সম্পর্কে জানতে চাই। আসলেই এর কোনো অস্তিত্ব আছে কি না, আর এর ফলে লাখ লাখ বছর ধরে যে প্রশ্ন বারবার মানুষের মনে উঁকি দিচ্ছে সে প্রশ্নগুলোর উত্তর পাওয়া খুবই কঠিন।

আপনারা হয়তো অনেকে জানেন না যে, শুধুমাত্র আমাদের গ্যালাক্সিতে নক্ষত্রের সংখ্যা রয়েছে প্রায় চারশ' বিলিয়ন। হয়ত আপনারা সবাই এটা জানেন যে এক বিলিয়নে হয় একশ' কোটি। এই মহাবিশ্বে বিলিয়ন বিলিয়ন গ্যালাক্সি রয়েছে। আর এই বিলিয়ন বিলিয়ন গ্যালাক্সিতে রয়েছে বিলিয়ন বিলিয়ন নক্ষত্র। যদি প্রতি বিলিয়নে একটিও গ্রহ থেকে থাকে তারপরেও গ্রহের সংখ্যা হিসেবের বাইরে চলে যাবে। ১৯৬১ সালে একটি সমীকরণে বিজ্ঞানীরা দেখিয়েছেন যে, কমপক্ষে দশ হাজার গ্রহে প্রাণের অস্তিত্ব থাকা সম্ভব।

অন্য গ্রহে প্রানের অস্তিত্ব আছে কি নেই এটার উত্তর দিনে জানা সম্ভব না। মানুষ বহু বছর ধরে এটি জানার জন্য চেষ্টা করছে। কিন্তু এখনো এ বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারেনি। হয়তো আরো বহু বছর চেষ্টা করবে তারপরও অনিশ্চিত যে এ বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত পৌছাতে পারবে কি না। এ বিষয় নিয়ে জল্পনা-কল্পনার শেষ নেই। তবে এ রহস্য আরো রহস্যময় করে রেখেছে যে জিনিসটি তার নাম হচ্ছে ইউএফও বা ভিনগ্রহের যান।

পৃথিবীর আকাশের মাঝে দেখতে পাওয়া উড়ন্ত এই অদ্ভুত বস্তু মানুষের কাছে এখনো রহস্য হয়ে রয়েছে। এ যানগুলোই প্রমাণ করে অন্য গ্রহে প্রাণের অস্তিত্ব রয়েছে। তেমনি আমাদের আজকের আলোচনায় আপনাদের বলব পৃথিবীর আকাশে দেখতে পাও কিছু ভিন্ন গ্রহের যান সম্পর্কে। আজকের আলোচনার পরে হয়তো আপনাদের মধ্যে অনেকেই বিশ্বাস করতে বাধ্য হবেন যে অন্য গ্রহেও প্রাণের অস্তিত্ব রয়েছে। পৃথিবীর কোন দেশে কবে ভিন্ন গ্রহের এই যান দেখা গেছে তেমন কিছু তথ্য আমাদের আজকের আয়োজন।

মানুষ কল্পনা প্রবণ এ কথাটি মিথ্যা নয়। তবে ইউএফও বা ভিনগ্রহের যান পুরোটাই যে মানুষের কল্পনা এ কথাটি বলা খুবই কঠিন কাজ। মানুষ নাকি বিভিন্ন আকৃতির ভিন গ্রহের যান দেখেছে। ইউএফও দেখার কমপক্ষে হাজার খানেক বা তার থেকেও বেশি দাবি ব্যাপারটাকে অনেক বেশি প্রতিষ্ঠা করে গেছে দিনের পর দিন। পৃথিবীর বিভিন্ন জায়গায় দেখতে পাওয়া ভিন গ্রহের যান মানুষের মনে বিভিন্ন ধারণা জন্মেছে যে, পৃথিবীর বাইরেও প্রাণের অস্তিত্ব আছে এবং তারা মানুষের থেকে অনেক বুদ্ধিমান হতে পারে।

ইউএফও প্রথম দেখার ঘটনা, প্রাচীন মিশরে অনেক লিপিতেই উড়ন্ত চাঁদ বা ভিন গ্রহের যানের উল্লেখ আছে। তার মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য যেটি সেটি হচ্ছে মিশরের আঠারোতম রাজবংশের তৃতীয় ফারাও টথ মউজের একটি লিপি। তৃতীয় ফারাও আকাশে আগুনের গোলক দেখতে পান বলে লিপিবদ্ধ করার নির্দেশ দেন। এটি যিশুখ্রিস্টের জন্মেরও পনেরশ বছর আগের ঘটনা।

ত্রিশ বছর আগের একটি ঘটনা এরপরও বহুবার ইউএফও এর দর্শনের কথা শোনা যায়। তবে বর্তমানে পৃথিবীর ইতিহাস অনুসারে স্বীকৃতি প্রাপ্ত ইউএফও দর্শনের তারিখ ১৫৬১ সালের ১৪ এপ্রিল, স্থান নুরেমবার্গ জার্মানি। ত্রিশ বছর আগের একটি ঘটনা বলি। ১৯৮৭ সাল, হুয়াইট ভিল ভারজেনিয়া এর একটি শান্ত শহর। ওই শহরের একটি রেডিও স্টেশনে কাজ করে ড্যানি গরডম নামের এক যুবক। প্রতি রাতের মতো রেডিও বার্তা চেক করতে গিয়ে তিনি বেশকিছু অস্বাভাবিক রিপোর্ট পান। রিপোর্টকারীদের মধ্যে তিন জন হুয়াইট ভিলের আকশে একগুচ্ছ আলো দেখতে পান বলে দাবি করেন।

ড্যানি প্রথমে এই বিষয়টি হেসে উড়িয়ে দিলেন কিন্তু মুহূর্তের মধ্যে হুয়াইট ভিল থেকে আরো অনেকে তাৎক্ষণিকভাবে রিপোর্ট করেন যে, তাদের চোখে এ বিষয়টি পড়েছে। ড্যানি এটিকে ভার্জিনিয়ার এয়ার বেস এর কোনো এক এক্সপেরিমেন্টকে ভাবলেও তাদের সাথে যোগাযোগ হলে তারা জানিয়ে দেন সে রাতে এমন কিছু পরীক্ষা করা হয়নি। ব্যাপারটি ধীরে ধীরে সবার মনে একটা খটকা তৈরি করে। এর প্রায় দুই সপ্তাহ পরে ড্যানি এবং তার বন্ধু রজার হল দুই জনেই খুব কাছ থেকেই ইউ এফ ও বা ভিন গ্রহের যান দেখতে পান।

এই ঘটনার তিন মাসের মধ্যে প্রায় শতাধিক লোক ইউএফওগুলোকে বারবার দেখতে পান। এর কয়েকটি ছবিও তোলা হয়েছিল। তা আপনারা নেট সার্চ করলেই দেখতে পাবেন। হুয়াইট ভিল এর এই অদ্ভুত ঘটনার ব্যাখ্যা পায় না হুয়াইট ভিলের মানুষ।

মেক্সিকোর ঘটনা ১৯৯১ সালের পূর্ণ সূর্য গ্রহণ। পৃথিবীর সবচেয়ে আলোড়ন সৃষ্টিকারী সূর্য গ্রহণ। সমস্ত পৃথিবী যেন সূর্য গ্রহণ অবলোকন উৎসবে মেতে উঠেছিল সেদিন। কিন্তু কেউ তখন ভাবতে পারেনি তাদের পুরো দেশকে এই দিনটা বদলে দেবে ইউএফও এর হিস্টোরিতে। সেই দিন দুপুরে একজন টেলিভিশন এক্সিকুইটিভ ছাদের উপর বসে সূর্য গ্রহনের ভিডিও ধারণ করছিল। এ জিনিসটা ঠিক তখনই তার দৃষ্টিতে পরে। আর পরবর্তীতে সূর্য গ্রহনের ভিডিওটি একটি ম্যাক্সিকান টিভি চ্যানেলে সম্প্রচার করেন। সূর্য গ্রহনের ঠিক আট দিন পরে এই তেপ্টির সাথে ইউএফও এর টেপটিও সম্প্রচার করেন।

মুহূর্তের মধ্যে তারা প্রায় চল্লিশ হাজার ফোন পান একই সাথে। এটা এতটাই দ্রুত ছিল যে মুহূর্তের মধ্যেই সমস্ত নেটওয়ার্ক বিকল হয়ে যায়। বহু প্রত্যক্ষদর্শী তাদের জানায় যে, তারা ঠিক একি বস্তু দেখেছেন ওই দিন ম্যাক্সিকোর আকাশে। পরবর্তীতে তারা ম্যাক্সিকানদের ধারণকৃত কমপক্ষে ১৫টা ভিডিও পাঠান। যেগুলো টেলিভিশন এক্সিকুইটিভের করা ইউএফও এর ভিডিওর সাথে সম্পূর্ণ মিলে গিয়েছিল।

রসওয়েল এর অমীমাংসিত রহস্য এটি ইউ এফ ও এর সাথে সম্পর্কযুক্ত সব থেকে আলোচিত ঘটনা । ঘটনার সূত্রপাত ১৯৪৭ সালের একটি বজ্রপাতসহ ঝড় এর মাধ্যমে। ম্যাক নামের এক ভদ্র লোক তার ঘরে বসে ঝড় দেখছিলেন। হঠাৎ তার বাড়ি সংলগ্ন ক্ষেত থেকে বড় এবং অস্বাভাবিক এক বজ্রপাতের শব্দ শুনতে পান। পরের দিন তিনি যখন তার ছেলেকে নিয়ে তার ক্ষেত দেখার জন্য যান তখন তিনি একটা বিষয় দেখে অবাক হয়ে গেলেন। বজ্রপাতের কোন চিহ্ন নেই বরং সারা মাস জুড়ে পড়ে রয়েছে কিছু ধ্বংসাবশেষ।

প্রায় তিন মাইল এরও বেশি লম্বা এবং দুই তিনশো ফুট প্রসস্থ জুড়ে ধ্বংসাবশেষগুলো ছড়িয়ে ছিটিয়ে ছিল। ম্যাকের ভাষ্য অনুসারে উদ্ধারকৃত টুকরোগুলোকে রক কথায় ধাতু বলা যায় না। টুকরোগুলো বেশ মজবুত প্লাস্টিকের মতো অথচ প্লাস্টিক নয় দুই তিন ফুট লম্বা টুকরোগুলো খবরের কাগজের মত হালকা ছিল বলেন ম্যাক। তবে টুকরোগুলো তিনি কাটতেও পারেননি এবং আগুনেও পোড়াতে পারেননি। পরের দিন রসুইল আর্মি হেয়ার বেসে ঘটনাটি জানানো হয়। সেদিন বিকেলে আর্মি ইন্টেলিজেন্সের কিছু কর্মকর্তা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করতে আসেন। তাদের মধ্যে একজন ছিলেন মেজর জেসি মারলেজ।

যার উপরে ঘটনাটি তদন্তের মূল দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল। তিনিও টুকরোগুলো দেখে হতভম্ব হয়ে যান। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি বলে গেছেন যে এটি তাঁর জীবনের দেখা শ্রেষ্ঠ একটি অস্বাভাবিক ঘটনা। তিনিও টুকরোগুলো আগুনে পোড়াতে পারেননি। তিনি দৃঢ়ভাবে দাবি করেন এটা কোনভাবেই বেলুন অথবা পৃথিবীর তৈরি কোন মহাকাশ যানের ধ্বংসাবশেষ নয়। তার কাছে সব চেয়ে আশ্চর্য লেগেছে যে টুকরোটি সেটি একটি আল্বিন এর মত টুকরো। এর ওপরে কিছু অদ্ভুত চিহ্ন এবং কিছু অক্ষর খোদাই করা ছিল। এটা থেকে তার মনে আরও বিশ্বাস প্রবল হয় যে এটি পৃথিবীর বাইরে থেকে আসা কোন এক মহাকাশ যানের।

এই খবরটা নিউজ প্যাপারে চলে আসে মুহূর্তের মাঝেই। ঠিক অইদিন মাক্সিক থেকেও কিছি ইউএফও দর্শন এর কিছু রিপোর্ট পাওয়া যায়। এ ঘটনাটি রসওয়েলে বেশ চাঞ্চল্যকর অবস্থার সৃষ্টি করে। তবে রসওয়েল এয়ার বেস কোন এক অজ্ঞ্যাত কারণে এই খবরটা ধামাচাপা দেয়ার প্রানপন চেষ্টা করে। ল্যান দ্যানিস নামের ২২ বছর বয়সের একটি ছেলে ম্যাক এর মাঠটি পর্যবেক্ষণ করছিলেন। পরবর্তীতে তাকেও মিলিটারি ক্যাম্পে নিয়ে যাওয়া হয় এবং তাকে বলা হয় এটি নিয়ে আর কোনরকম উচ্চ বাক্য না করার জন্য।

এছাড়া ঠিক ওই সময় একজন নার্স দাবি করেন তাকে এয়ার বেস ক্যাম্পে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল তিনটি বডি অটোপসি করার জন্য। তিনি বলেন, তিনটি বডির অটোপসি করি আমি। প্রানির কোনটিও পৃথিবীর নয়, এ ব্যাপারে তিনি শতভাগ নিশ্চিত। তিনি প্রাণী তিনটির বর্ণনা দিয়েছিলেন এভাবে যে, তাদের ওখানে একটা বড় ক্রাস ব্যাগ ছিল যেটির মধ্যে দুমড়ানো মোচড়ানো খুব ছোট ছোট দুটি বডি ছিল। যাদের মাথা দেহের তুলনায় অনেক বড়। তাদের কান ছিল না কিন্তু কানের জায়গায় ছিদ্র ছিল। তাদের নাক ছিল কিন্তু তাদের দাঁত ছিল না।

পরবর্তীতে নার্সটিকে অনেক খোঁজার চেষ্টা করা হয়েছিল যদিও তার কখনো কোন খোঁজ পাওয়া যায়নি। এটি প্রমাণিত হলে এয়ার বেস মিলিটারি থেকে বলা হয় যে, তাদের প্রাপ্ত প্রাণীগুলো আসলে একটি এয়ার বেলুনের ড্রাম ছিল। যদিও তারা সন্দেহ দূর করতে গিয়ে আরো সন্দেহ বাড়িয়ে দিয়েছিল।

– লালমনিরহাট বার্তা নিউজ ডেস্ক –