হাদিসশাস্ত্রের উজ্জ্বল নক্ষত্র ইমাম বুখারি (রহ.)
ইমাম বুখারি (রহ.) হাদিসশাস্ত্রের এক জীবন্ত কিংবদন্তি। পুরো জীবনটাই তিনি হাদিস সংকলন, অধ্যয়ন ও পাঠদানের জন্য উৎসর্গ করেছেন। তাঁর জীবনের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ১৬ বছরের ফসল হলো ‘সহিহ বুখারি’। তিনি ছিলেন সমকালীন যুগের শ্রেষ্ঠ ইমাম ও দুর্লভ ব্যক্তি।
বাল্যকাল : তাঁর আসল নাম মুহাম্মদ। উপনাম আবু আবদুল্লাহ। উপাধি ছিল ‘আমিরুল মুমিনিন ফিল হাদিস’। বাবার নাম ইসমাঈল। তিনি ১৯৪ হিজরির ১৩ শাওয়াল জুমার সালাতের পর বর্তমান উজবেকিস্তানের বুখারা নগরীতে জন্মগ্রহণ করেন। এটি আগে সোভিয়েত ইউনিয়নের একটি গুরুত্বপূর্ণ শহর ছিল। শৈশবেই তিনি পিতৃহারা হন। বাল্যকালে মায়ের তত্ত্বাবধানে থাকা অবস্থায় বসন্ত রোগে দৃষ্টিশক্তি হারিয়ে ফেলেন। এক রাতে তাঁর মা স্বপ্নে ইবরাহিম (আ.)-কে দেখেন। ইবরাহিম (আ.) তাঁকে বলেন, ‘তোমার কান্নাকাটির কারণে আল্লাহ তাআলা তোমার সন্তানের দৃষ্টিশক্তি ফিরিয়ে দিয়েছেন।’ সকালে উঠে তিনি দেখতে পান যে তাঁর সন্তানের দৃষ্টিশক্তি ফেরত এসেছে। তিনি আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। (গোলাম রসুল সাঈদী, তাজকেরাতুল মোহাদ্দেসীন, পৃষ্ঠা ১৭২)
প্রাথমিক শিক্ষা গ্রহণ : বাল্যকাল থেকেই তিনি প্রখর স্মৃতিশক্তির অধিকারী ছিলেন। মাত্র ছয় বছর বয়সে তিনি পবিত্র কোরআন হিফজ করেন। ১০ বছর বয়সে প্রাথমিক শিক্ষা সম্পন্ন করে তিনি হাদিস শিক্ষার প্রতি আগ্রহী হন। তিনি বলেন, ‘মক্তবে প্রাথমিক লেখাপড়ার সময়ই হাদিস মুখস্থ করার প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে আমার মনে ইলহাম হয়।’ এ সময় তাঁর বয়স কত ছিল জিজ্ঞেস করায় তিনি বলেন, ‘১০ কিংবা তারও কম।’ (আনওয়ার শাহ কাশ্মীরি, ফায়জুল বারি, মুকাদ্দামা, পৃষ্ঠা ৩৩)
দেশভ্রমণ : ইমাম বুখারি (রহ.) ইলম হাসিলের জন্য বিভিন্ন দেশ ভ্রমণ করেন এবং তৎসময়ে বড় বড় মুহাদ্দিস ও ফকিহর সান্নিধ্যে অতিবাহিত করতে থাকেন। তিনি বসরা, বাগদাদ, সিরিয়া, মিসর, খোরাশান ইত্যাদি দেশ ভ্রমণ করেন। তিনি বলেন, ‘আমি দুইবার সিরিয়া ও মিসর ভ্রমণ করেছি, বসরায় গিয়েছিলাম চারবার। ছয় বছর হেজাজে অবস্থান করেছি, কুফা ও বাগদাদে কতজন মুহাদ্দিসের সাক্ষাৎ পেয়েছি, তা বর্ণনার বাইরে।’ (খতিব বাগদাদি, তারিখু বাগদাদ, খণ্ড ২, পৃষ্ঠা ৪)
হজ পালন : ইমাম বুখারি (রহ.) ২১০ হিজরিতে ১৬ বছর বয়সে মা ও বড় ভাইকে সঙ্গে নিয়ে পবিত্র হজ পালনের জন্য মক্কায় গমন করেন। হজ পালন শেষে তাঁর মা ও ভাই দেশে ফিরে এলেও ইলমে হাদিস অর্জনের জন্য তিনি সেখানে থেকে যান। অতঃপর তিনি পবিত্র মদিনাতুল মনওয়ারায় গিয়ে ১৮ বছর বয়সে পবিত্র রওজায়ে পাকের পাশে বসে ‘কাজায়াস সাহাবা ওয়াত তাবেয়িন ও আত-তারিখুল কবির’ গ্রন্থ দুটি রচনা করেন। (আবদুল আজিজ দেহলভি, বুসতানুল মুহাদ্দিসিন, পৃষ্ঠা ২৯)
হাদিসের সূক্ষ্মজ্ঞান : ইমাম বুখারি (রহ.) হাদিসশাস্ত্রে অত্যন্ত সূক্ষ্ম বিষয়গুলোর জ্ঞান অর্জন করলে যেকোনো ভুলত্রুটি তাঁর দৃষ্টি এড়াতে পারত না। ফলে অনেক ক্ষেত্রে দেখা যেত তিনি কোনো শায়খের কাছে হাদিসের দরসে উপস্থিত থাকলে তাঁরাও ভুলত্রুটি নিয়ে ভয়ে থাকতেন, যেন কোনো ভুল হয়ে গেলে বিব্রতকর পরিস্থিতির সৃষ্টি না হয়। এ বিষয়ে ইমাম বুখারি নিজেই বলেন, “আমার ওস্তাদ ইমাম বায়কান্দি (রহ.) একদিন আমাকে বলেন, ‘হে বৎস, আমার গ্রন্থ ভালোভাবে যাচাই-বাছাই করো আর কোনো ভুল দেখলে নিঃসংকোচে তা সংশোধন করে দাও।’ বায়কান্দির এক সাথি এতে বিস্ময় বোধ করে জিজ্ঞেস করলেন, যুবকটি কে? আল্লামা বায়কান্দি (রহ.) বলেন, ‘সে এমন এক ব্যক্তি, হাদিসের জগতে তার সমকক্ষ কেউ নেই।’ (আবদুস সালাম মুবারকপুরি, সিরাতুল বুখারি, পৃষ্ঠা ৪৮)
হাদিস সংগ্রহে সতর্কতা : ইমাম বুখারি (রহ.) হাদিস সংগ্রহের ক্ষেত্রে অত্যন্ত সতর্কতা অবলম্বন করতেন। যার কাছ থেকে হাদিস সংগ্রহ করতেন আগে তাকে পরিপূর্ণভাবে পর্যবেক্ষণ করতেন। পর্যবেক্ষণের পরে তাকে বিশ্বস্ত আমানতদার এবং যাবতীয় নৈতিক গুণে গুণান্বিত দেখলেই তার কাছ থেকে হাদিস গ্রহণ করতেন। একদা কয়েক শ মাইল অতিক্রম করে জনৈক মুহাদ্দিসের কাছে পৌঁছলেন। তিনি দেখলেন সেই মুহাদ্দিসের সঙ্গে একটি ঘোড়া ছিল। হঠাৎ তাঁর হাত থেকে ঘোড়াটি ছুটে যায়। অনেক চেষ্টা করে তিনি ঘোড়াটি বশে আনতে না পেরে কৌশলের আশ্রয় নেন। তিনি একটি শূন্য পাত্র ঘোড়ার সামনে এমনভাবে উপস্থাপন করলেন যেন তাতে খাবার আছে বোঝা যায়। নির্বোধ পশু খাবারের আশায় কাছে এলে তিনি ঘোড়াটি ধরে ফেললেন। তা দেখে ইমাম বুখারি (রহ.) তাঁর কাছ থেকে সহিহ হাদিস পাওয়ার পরও তা গ্রহণ করলেন না। তিনি ফিরে এলেন এবং বলেন, ‘আমি এমন ব্যক্তির কাছ থেকে হাদিস গ্রহণ করব না, যে চতুষ্পদ জন্তুকে ধোঁকা দেয়।’ (মুহাম্মদ হানিফ গাঙ্গুহি, জফরুল মুহাসসিলিন বি-আহওয়ালিন মুসাননিফিন, পৃষ্ঠা ৯৬-৯৭)
ইলমে হাদিস শিক্ষাদানের আত্মনিয়োগ : ১৮ বছর বয়স থেকেই তিনি হাদিসের পাঠ দেওয়া শুরু করেন। তিনি এতটা জনপ্রিয়তা অর্জন করেন যে তিনি যেখানেই যেতেন ইলমে হাদিস অন্বেষণে ছাত্ররা তাঁর পেছনে পেছনে ছুটত। নিশাপুরের ছাত্ররা তাঁর জ্ঞানের গভীরতার খবর শুনে অন্যান্য শিক্ষকের শিক্ষায়তন ছেড়ে তাঁর কাছে চলে আসে। ফলে অনেক শিক্ষকের মজলিস ছাত্রশূন্য হয়ে পড়ে। সালেহ ইবনে মুহাম্মদ আল বাগদাদি বলেন, ‘মুহাম্মদ ইবনে ইসমাইল বুখারি বাগদাদে অবস্থানকালে আমি তাঁর কাছ থেকে হাদিস লিপিবদ্ধ করতাম। তাঁর মজলিসে ২০ হাজারেরও বেশি জ্ঞানান্বেষী সমবেত হতেন।’ ইসহাক ইবনে রাহবিয়াহ (রহ.) বলেন, ‘হে জ্ঞানান্বেষী হাদিসবিশারদরা! এই যুবকের দিকে দৃষ্টিপাত করো এবং তার কাছ থেকে যা পারো হাদিস লিপিবদ্ধ করো। কারণ সে যদি হাসান ইবনে আবুল হাসান বা হাসান বসরি (রহ.)-এর যুগেও এই পৃথিবীতে আগমন করত, তবু তার হাদিসের জ্ঞান ও প্রজ্ঞার প্রতি মানুষ মুখাপেক্ষী থাকত।’ (ইবনে কাসির, আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া, খণ্ড ১১, পৃষ্ঠা ২৮)
ইন্তেকাল : হাদিসজগতের উজ্জ্বল এই নক্ষত্র ১ শাওয়াল ২৫৬ হিজরিতে ঈদুল ফিতরের রাতে এশার নামাজের পর সমরকন্দে ইন্তেকাল করেন। ঈদের দিন জোহরের সালাতের পর তাঁকে দাফন করা হয়। দাফনের পর তাঁর কবর থেকে মিশক আম্বরের মতো সুগন্ধি বের হতে থাকে এবং কবর বরাবর আকাশে লম্বাকৃতি একটি সাদা রেখা দেখা দিলে মানুষ তা বিস্ময়করভাবে প্রত্যক্ষ করে। পরে আল্লাহর একজন নেককার বান্দা আল্লাহর দরবারে এই সুগন্ধি বন্ধ করার জন্য দোয়া করলে তা বন্ধ হয়ে যায়। (হাফিজ ইবনে কাসির, আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া, খণ্ড ১১, পৃষ্ঠা ২৩)
– লালমনিরহাট বার্তা নিউজ ডেস্ক –- জানা গেল এসএসসির ফল প্রকাশের তারিখ
- সাংবাদিকরা স্বাধীনভাবে কাজ করছেন: প্রেস কাউন্সিলের চেয়ারম্যান
- তিউনিসিয়ায় নৌকাডুবিতে মৃত ৮ বাংলাদেশির মরদেহ হস্তান্তর
- রাণীশংকৈলে ভুট্টাক্ষেত থেকে এক ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার
- উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে সুন্দরগঞ্জে ২৭ জনের মনোনয়ন দাখিল
- সর্বজনীন পেনশন স্কিম মেলা উপলক্ষে রংপুরে সংবাদ সম্মেলন
- বিভিন্ন দেশে নিষেধাজ্ঞার মুখে ভারতীয় খাদ্যপণ্য
- যে কারণে বিশ্বকাপ দল ঘোষণা করেনি বাংলাদেশ
- ৫৩ বছর বয়সে জীবনসঙ্গী খুঁজছেন মনীষা
- ইসলামের দৃষ্টিতে শ্রমিক মালিকের পরিবারভুক্ত
- `নতুন প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় গড়ে তুলতে হবে`
- সরকারি গুদামে হয়রানি করা হলে কঠোর ব্যবস্থা: খাদ্যমন্ত্রী
- সংসদ অধিবেশন চলবে ৯ মে পর্যন্ত
- ভারত-বাংলাদেশের আন্তঃসীমান্ত নদীর বন্যার তথ্য আদান-প্রদান শুরু
- গরমে ত্বকের সৌন্দর্য ধরে রাখতে যা করবেন
- মুস্তাফিজের আইপিএল অভিজ্ঞতা কাজে দেবে: শান্ত
- সাংবাদিক হতে গিয়ে যেভাবে নায়িকা হলেন আনুশকা
- শ্রমিক ঠকানোর ভয়াবহ পরিণতি
- স্বস্তির পরশ ছড়িয়ে রংপুরে ঝরল বৃষ্টি
- হাতপাখায় চলে আজিজুলের সংসার
- বিভিন্ন যানবাহনে অবৈধ স্টিকার ব্যবহার
- শ্রম আইন সংশোধনে প্রস্তুত বাংলাদেশ
- পরিবহন ও যোগাযোগ খাতে বড় বিনিয়োগের পরিকল্পনা সরকারের
- সরাসরি মুসলিমদের নিশানা করে ভোট প্রচারে মোদি
- জলবায়ু সহনশীলতা অ্যাডভোকেসি জোরদার করবে বাংলাদেশ
- সরকারি অফিস চলবে ‘এআই’ প্রযুক্তিতে
- যুক্তরাষ্ট্রে মানবাধিকার লঙ্ঘন নিয়ে প্রশ্ন তুললেন প্রধানমন্ত্রী
- শ্রমিকদের কল্যাণে বিশেষ নজর দিতে হবে: প্রধানমন্ত্রী
- শিক্ষকরাই স্মার্ট নাগরিক গড়ার কারিগর: শিল্পমন্ত্রী
- অবশেষে আজ তাপমাত্রা কমার পূর্বাভাস
- আদিতমারীতে জুয়ার আসর থেকে স্কুলশিক্ষকসহ আটক ৮
- দেশজুড়ে আরো ৩ দিন হিট অ্যালার্ট জারি
- বোরো মৌসুমের ধান-চালের মূল্য নির্ধারণ করল সরকার
- রোগীর প্রতি চিকিৎসকের অবহেলা সহ্য করবো না: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
- সরকারি সুবিধা নিয়ে নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নিলে প্রার্থিতা বাতিল
- ভ্যানামি চিংড়ির পোনা আমদানির অনুমোদন দিল সরকার
- কারিগরির সনদগুলো কারা কিনেছেন বের করা হবে: ডিবিপ্রধান
- ইসরায়েলের এই বর্বরতা মেনে নেয়া যায় না: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
- শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আবার কবে বন্ধ হবে, জানালেন শিক্ষামন্ত্রী
- আইকনিক লিডার এখন কুন্তলা চৌধুরী
- প্রত্যেকের উচিত প্রধানমন্ত্রীকে সহায়তা করা: গণপূর্তমন্ত্রী
- ইসরায়েলি আগ্রাসনে ২৪ হাজারের বেশি নারী ও শিশু নিহত
- বেরোবি উপাচার্যের নামে ভুয়া ই-মেইল, থানায় জিডি
- লালমনিরহাট জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে শ্যামল জয়ী
- সৌদিতে ভারী বৃষ্টিতে ডুবে গেছে রাস্তাঘাট, ভেসে গেছে গাড়ি
- হাতীবান্ধায় মাদক ব্যবসায় বাঁধা দেয়ায় স্ত্রীকে মারধর
- আইপিএলে পান্ডিয়াদের বিরুদ্ধে জোচ্চুরির অভিযোগ!
- পুলিশের প্রতি ১১ নির্দেশনা
- ঢিলেঢালা পোশাক ও যথাসম্ভব ছায়ায় থাকুন: চিফ হিট অফিসার
- আদিতমারীতে স্বামীর থাপ্পড়ে প্রাণ গেল স্ত্রীর