• রোববার ০৫ মে ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ২২ ১৪৩১

  • || ২৫ শাওয়াল ১৪৪৫

বিশ্ববিদ্যালয়ে সুযোগ পেয়েও ভর্তি অনিশ্চিত শরিফুলের

– লালমনিরহাট বার্তা নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩  

চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) ভর্তি সুযোগ পেয়েও টাকার অভাবে পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়া নিয়ে চিন্তিত মেধাবী শিক্ষার্থী শরিফুল ইসলাম। চবির সংস্কৃত বিভাগে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন শরিফুল। তবে সেখানে ভর্তি হতে পারবেন কিনা তা জানা নেই তার।

শরিফুল ইসলাম লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার ভেলাবাড়ি ইউনিয়নের ভাতিটারী গ্রামের পঙ্গু প্রতিবন্ধী রুহুল আমিনের ছেলে। সড়কের কার্পেটিং লেবার হিসেবে কাজ করেন তিনি। শ্রম বিক্রির পাশাপাশি চালিয়ে গেছেন পড়ালেখা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার ভেলাবাড়ি ভাতিটারী গ্রামের পঙ্গু রুহুল আমিন ও সেফালী দম্পতির দুই ছেলেই মেধাবী। বাবা রুহুল আমিন দিনমজুর আর মা সেফালী বেগম কার্পেটিংয়ের শ্রমিক হিসেবে কাজ করে যা আয় হয় তা দিয়েই চলত তাদের সংসার। এরই মধ্যে ৮ বছর আগে সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়ে পঙ্গুত্ববরণ করেন রুহুল আমিন। মা সেফালী বেগমের একার আয়ে সংসার চালানো প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ে।

এরপরই বাবার চিকিৎসা আর সংসার খরচ যোগাতে মায়ের সঙ্গে কার্পেটিং কাজে যোগদেন দুই ছেলে সোহেল রানা আর শরিফুল ইসলাম। কাজের ফাঁকেই লেখাপড়া চালিয়ে যান শরিফুল ইসলাম। কিছুদিন ধরে মা সেফালী বেগমে আলসারে ভোগছেন। এখন দুই ছেলের আয়ে চলছে সংসার।

শরিফুল ইসলাম কাজের ফাঁকে লেখাপড়া করে স্থানীয় হাজীগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ২০২০ সালে জিপিএ -৪.২৮ ও ২০২২ সালে বেগম কামরুন নেছা ডিগ্রী কলেজ থেকে জিপিএ ৪.৭৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হন। এরপরই চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে বি ইউনিটে অংশ নিয়ে শরিফুল ইসলাম সংস্কৃত বিভাগে ভর্তির সুযোগ পান।

দরিদ্রতার কষাঘাতের পরও শরিফুল ইসলাম অর্থের কাছে হেরে যেতে নারাজ। লেখাপড়া করে এডমিন ক্যাডার হতে চান তিনি। দেশের সেবায় নিজেকে নিয়জিত করতে চান। এসএসসি পরীক্ষার ফরম পূরণের টাকাও নিতে হয়েছে ঋণ করে। যা পরীক্ষা শেষে কাজ করে পরিশোধ করেন তিনি। একই অবস্থা এইচএসসিতেও। এমনকি টাকার অভাবে সব বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায়ও অংশ নিতে পারেননি।

এখন বড় ভাই সোহেল রানার কার্পেটিংয়ের কাজের আয়ে সংসার, মা-বাবার চিকিৎসা, ছোট দুই বোনের লেখাপড়া খরচ যোগাতে হিমশিম খেতে হয়। তার পক্ষে শরিফুলকে বিশ্ববিদ্যালয় পড়ানো অসম্ভব। এতে করে অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে শরিফুলের লেখাপড়ার স্বপ্ন।

তবে শরিফুল নিজের স্বপ্ন পূরণের জন্য সব চেষ্টাই করতে চান। তাই নিজের লেখাপড়ার খরচ চালানোর জন্য সবার সহায়তা চান।

শরিফুলের মা বলেন, এক সময় কাজ করে ছেলেকে লেখাপড়ার টাকা দিতাম। এখন আমিই ওষুধের জন্য চেয়ে থাকি ছেলের দিকে। শরিফুল ক্যাডার অফিসার হতে চায়। কোথায় পাবে এত টাকা? কে দিবে তাকে এত টাকা। সবাই যদি আমার ছেলেকে সহায়তা করেন তাহলে হয়তো তার স্বপ্ন পূরণ হবে।

শরিফুলের প্রতিবেশি সরকারি আদিতমারী কলেজের দর্শন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক কেরামত আলী শাহিন বলেন, শরিফুলের লেখাপড়ায় প্রায় সময় সহায়তা করেছি। সে অত্যন্ত মেধাবী ছাত্র। তাকে সহায়তা করলে সে তার স্বপ্ন পূরণ করতে পারবে। তাই তাকে সহায়তার জন্য সমাজের বিত্তবানদের আহ্বান জানান তিনি।

– লালমনিরহাট বার্তা নিউজ ডেস্ক –