• রোববার ০৫ মে ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ২২ ১৪৩১

  • || ২৫ শাওয়াল ১৪৪৫

সাংবাদিকদের আপসহীন লেখা সমাজ-রাষ্ট্রকে পথ দেখায়-খায়রুজ্জামান লিটন

– লালমনিরহাট বার্তা নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ২১ ডিসেম্বর ২০২২  

সাংবাদিকদের আপসহীন লেখা সমাজ-রাষ্ট্রকে পথ দেখায়-খায়রুজ্জামান লিটন
আধুনিক বিশ্বে লেখক সাংবাদিকরা রাষ্ট্রকে সঠিক পথ-নির্দেশনা দিতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন।

মঙ্গলবার (২০ ডিসেম্বর) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের আব্দুস সালাম হলে ঢাকা সাব-এডিটরস কাউন্সিল (ডিএসইসি) আয়োজিত লেখক সম্মাননা অনুষ্ঠান-২০২২ এ তিনি এ মন্তব্য করেন। অনুষ্ঠানে ৫০ জন লেখককে বিশেষ সম্মাননা দেওয়া হয়। প্রত্যেককে নগদ পাঁচ হাজার টাকা, ক্রেস্ট, সনদ ও বিভিন্ন পুরস্কারসহ উত্তরীয় পরিয়ে দেওয়া হয়। প্রায় পাঁচ শতাধিক লেখক ও সাংবাদিকের পদচারণায় মুখরিত ছিল অনুষ্ঠানস্থল।

কবিতায় বিশেষ সম্মাননাপ্রাপ্ত তিনজন হলেন- অতনু তিয়াস, আলমগীর নিষাদ ও সুরাইয়া ইসলাম। গল-উপন্যাস ক্যাটাগরিতে সম্মননার জন্য মনোনীত হন পাঁচজন। তারা হলেন- শান্তনু চৌধুরী, ইমন চৌধুরী, লাবণ্য লিপি, কামাল আহমেদ টিপু ও রনি রেজা।

প্রবন্ধ-গবেষণায় লেখক সম্মননা পেয়েছেন পাঁচজন। তারা হলেন- কাজী আলিম উজ জামান, দীপংকর গৌতম, মুস্তফা মনোয়ার সুজন, মোহাম্মদ নূরুল হক, অঞ্জন আচার্য। ভ্রমণ-বিজ্ঞান শাখায় সম্মাননার জন্য মনোনয়ন দেওয়া হয় তিনজনকে। এই তিনজন হলেন- আসিফ, জাহাঙ্গীর সুর ও সুমন ইসলাম।

শিশু সাহিত্যে অদ্বৈত মারুত, মনসুর হেলাল, আশিক মুস্তাফাকে সম্মাননা দেওয়া হয়। এছাড়া অনুবাদের জন্য সম্মাননা পান প্রমিত হোসেন ও সাহাদত হোসেন খান।

অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, ‘অত্যন্ত উচ্চমানের এ অনুষ্ঠান আয়োজন করায় কৃতজ্ঞতা জানাই। ঢাকা সাব-এডিটরস কাউন্সিল প্রথমবারের মতো এ আয়োজন করেছে। অনেকেই বই জমা দিয়েছেন। যারা উদ্যোক্তা, এ বিষয়টি তাদের অত্যন্ত আশান্বিত করেছে। আমি আশা করি, এ সংখ্যা বাড়বে।’

খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, ‘সংবাদপত্রের মাধ্যমে আমরা জানতে পারি সব। কোথায় কী হলো, কী হচ্ছে কিংবা কী হওয়া উচিত? অনেক সময় এমন শুনি, সাংবাদিকদের বলা হয়, আপনি এটি লিখবেন, ওটা লিখবেন না।। হুকুম দেওয়া হয়, এটি বলা যাবে, এটি বলা যাবে না। কিন্তু আমাদের প্রধানমন্ত্রী সাংবাদিকবান্ধব। এখন বিদেশ থেকে এলেই সাংবাদিকদের সঙ্গে সংবাদ সম্মেলন করেন। সাংবাদিকদের সঙ্গে বসে কথা বলেন।’

তিনি বলেন, রাজনীতি করার কারণে আওয়াজ আমরা তুলতে পারি না। অকপটে আমি স্বীকার করি। সেই আওয়াজ আপনারা তুলবেন—এই আশা আমি করি। আমরা জানি আপনাদের অনেক চ্যালেঞ্জ নিয়ে কাজ করতে হয়। এরপরও আপনাদের আপসহীন লেখা ও সংবাদ সমাজ এবং রাষ্ট্রকে পথ দেখায়।

খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দায়িত্ব নেয়ার পর থেকে তিনি সাংবাদিকদের সঙ্গে খোলামেলা কথা বলেন এবং যে কোনো সমস্যা সমাধানে ভূমিকা রাখেন।

জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্রের পরিচালক মিনার মনসুর বলেন,  যারা সাংবাদিকতা করতে আসেন, তারা মনে করেন তারা সাংবাদিক হয়ে সমাজ-দেশের জন্য কাজ করবেন। শোষিত-নিপীড়িতদের কণ্ঠস্বর হবেন। আসলে কি তাদের স্বাধীনতা আছে? পরাধীনতার বেদনা তাদের আছে।

কথাসাহিত্যিক হাসান অরিন্দম বলেন, সাংবাদিকতা পেশার প্রতি আলাদা ভালোবাসা আছে আমার। আমি বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের শিক্ষার্থী ছিলাম। সাংবাদিক হতে চেয়েছিলাম। সৌভাগ্য কিংবা দুর্ভাগ্যবশত ব্যাটে-বলে মেলেনি। তবে সাংবাদিকদের প্রতি মানুষের যেমন ভালোবাসা, তেমনি বিশ্বাস আছে।

তিনি বলেন, এ আয়োজন আমাকে আশান্বিত করেছে। সাব-এডিটরদের মধ্যে এত প্রতিষ্ঠিত ও গুণী লেখক আছেন, তা আমাকে আশান্বিত করেছে। এ ধারাবাহিকতা বজায় থাকুক।

লেখক সম্মাননা অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আবুল হাসান হৃদয় ও কোষাধ্যক্ষ কবীর আলমগীর, সভাপতিত্ব করেন মামুন ফরাজী।

ডিএসইসি লেখক সম্মাননা-২০২২ এর আহ্বায়ক কবীর আলমগীর বলেন, সংগঠনের দায়িত্ব নেয়ার অর্থ হলো কাজ করা। সে ব্যাপারে আমি সবসময়ই আন্তরিক। প্রতিষ্ঠার পর থেকে সংগঠনের দুই যুগ পেরিয়েছে। তবে এবারই প্রথম এমন আয়োজন। যারা বই জমা দিয়েছেন, তাদের ধন্যবাদ। জুরি বোর্ডের প্রতি কৃতজ্ঞতা। তারা খুব আন্তরিকভাবে কাজ করেছেন। সাধুবাদ জানিয়েছেন। এমন আয়োজন বারবার হোক—এমন আশা রাখি।

সভাপতির বক্তব্যে ঢাকা সাব-এডিটরস কাউন্সিলের সভাপতি মামুন ফরাজি বলেন, সাংবাদিক হলেই লেখক হওয়া যায় না। আমরা কিছু তথ্যসহ কাজ করি। লেখক হলো তারাই যারা নিজস্ব চিন্তা দিয়ে, ভাবনা দিয়ে দেশের জনগণকে প্রভাবিত করতে পারে। আজকের এ সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠানে যারা বিভিন্নভাবে সহায়তা করেছেন, সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ।

অনুষ্ঠানে কবিতা ক্যাটাগরিতে ২০ জন, ইতিহাস ও গবেষণায় ২১ জন, গল্প-উপন্যাস ক্যাটাগরিতে ৩০ জন, অনুবাদ ক্যাটাগরিতে ৪ জন, শিশু সাহিত্য ক্যাটাগরিতে  ১২ জন ও ভ্রমণ-বিজ্ঞান ক্যাটাগরিতে ৮ জন লেখককে সম্মাননা প্রদান করা হয়।

অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন- জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমীন, সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস খান, দৈনিক ভোরের কাগজের সম্পাদক শ্যামল দত্ত, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ আলম খান তপু, ঢাকা সাব-এডিটরস কাউন্সিলের সাবেক সভাপতি শাহ মোহাম্মদ মোতাসিম বিল্লাহ, কে এম শহীদুল হকসহ অনেকে।

– লালমনিরহাট বার্তা নিউজ ডেস্ক –