• রোববার ০৫ মে ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ২২ ১৪৩১

  • || ২৫ শাওয়াল ১৪৪৫

বঙ্গবন্ধুর সাহসের উৎস ছিলেন বঙ্গমাতা

– লালমনিরহাট বার্তা নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ১২ আগস্ট ২০২০  

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সংগ্রামের শক্তি ও সাহসের উৎস ছিলেন বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেসা। বঙ্গবন্ধুর বন্দীত্বের কালে দৃঢ়তার সঙ্গে সামলিয়েছেন সংসার, দলের কর্মীদের কাছে ছিলেন সাহসের প্রতিমূর্তি। আগরতলা মামলায় বঙ্গবন্ধুর নিঃশর্ত মুক্তি, সাত মার্চের ভাষণসহ নানা গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়ের নেপথ্যে কাজ করেছে বঙ্গমাতার পরামর্শ। 

মুক্তিকামী বাঙালির স্লোগানে উন্মাতাল ঐতিহাসিক রেসকোর্স ময়দান; দিনটি ছিলো ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ। কবির ভাষায় জনতার মঞ্চে দাঁড়ালেন, গণসূর্যের মঞ্চ কাঁপিয়ে কবি শোনালেন তাঁর অমর কবিতাখানি। বঙ্গবন্ধুর ১৮ মিনিটের সেই ভাষণে দেশ মাতৃকাকে মুক্ত করার শপথে দীক্ষিত হয়েছিল বাঙালি জাতি।

সাত মার্চের ভাষণের নেপথ্যে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেসা বঙ্গবন্ধুকে বলেছিলেন নিজের মনের কথাই যেন জনগণের সামনে তুলে ধরেন। বঙ্গবন্ধু তাই করেছিলেন। 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাবেক উপ-উপাচার্য নাসরিন আহমেদ বলেন, ‘চারপাশ থেকে ওনার কাছে এতো রকমের কথাবার্তা হচ্ছে। উনি শুধু বলেছিলেন তোমার মনে যা আসে, তোমার মন যা বলবে তুমি তাই করবে।’

১৯৬৮ সালে পাকিস্তান সরকারের দায়ের করা আগরতলা মামলায় প্যারোলে নয় শেখ মুজিবের নিঃশর্ত মুক্তির দাবি করেছিলেন বঙ্গমাতা, অটল ছিলেন নিজের সিদ্ধান্তে।

সাবেক উপ-উপাচার্য নাসরিন আহমেদ জানান, ‘দলের থেকেই অনেকে উঠেপড়ে লেগেছিলেন কিন্তু উনি বলেছিলেন যে না, প্যারোলে কিছুতেই না আসতে হলে একদম মুক্ত হয়ে। প্যারোলে যদি যেতেই হয় তাহলে আর যেন ৩২ নম্বরে ফেরা না হয়।’

বঙ্গবন্ধু জেলে থাকা অবস্থায় সংসারের দায়িত্ব, মামলা পরিচালনার ব্যবস্থা, দল সংগঠিত করা ও আন্দোলন পরিচালনায় বঙ্গমাতা ছিলেন ধৈর্য্য, দক্ষতা আর সাহসিকতার প্রতিমূর্তি।

নাসরিন আহমেদ বলেন, জেলে যেতেন টিফিনক্যারিয়ার নিয়ে। যে টিফিনক্যারিয়ারে নিজের হাতে রান্না করা খাবার নিয়ে যেতেন। আর ফিরে আসতেন সেই টিফিনক্যারিয়ারের মধ্যে বঙ্গবন্ধুর দেওয়া সব নির্দেশগুলো নিয়ে।

বঙ্গবন্ধুর আমৃত্যু ছায়াসঙ্গী শেখ ফজিলাতুন্নেসা। ১৯৭৫ সালে ১৫ আগস্টের সেই কালরাতে ধানমণ্ডির রক্তাক্ত ৩২ নম্বরেও তিনি বঙ্গবন্ধুর পরলোক যাত্রার সঙ্গী। 

এব্যাপারে শনিবার বঙ্গমাতা ফজিলাতুন নেছা মুজিবের ৯০তম জন্মবার্ষিকীতে স্মৃতিচারণা করে তাঁর বড় মেয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন- দেশের স্বাধীনতার জন্য জাতির পিতা যেমন স্বপ্ন দেখতেন আমার মাও স্বাধীনতার সেই একই স্বপ্ন দেখতেন। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ধারণ করেই নিজের জীবন উৎসর্গ করে গেছেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ত্যাগ আর সংগ্রামের মধ্য দিয়ে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছায়াসঙ্গী ছিলেন। সহধর্মিণী হিসেবেই শুধু নয়, রাজনৈতিক ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন ফজিলাতুন নেছা মুজিব। বঙ্গবন্ধুর পাশে থেকে সবসময়  প্রেরণা জুগিয়েছেন মা।

তিনি বলেন, ত্যাগের মধ্য দিয়ে একটা সংসারকে সুন্দর করা যায়, একটা প্রতিষ্ঠানকে সুন্দর করা যায়, একটা দেশকে সুন্দর করা যায়। চাওয়া-পাওয়ার ঊর্ধ্বে উঠে নিজেকে বিলিয়ে দেওয়ার চেয়ে বড় আর কিছু হয় না। আমার মা ফজিলাতুন নেছা মুজিব সেই দৃষ্টান্তই দেখিয়ে গেছেন। আমার মা প্রধানমন্ত্রীর স্ত্রী বলে তার মধ্যে কোনো অহমিকাবোধ কখনো ছিল না।

– লালমনিরহাট বার্তা নিউজ ডেস্ক –