• রোববার ১৯ মে ২০২৪ ||

  • জ্যৈষ্ঠ ৫ ১৪৩১

  • || ১০ জ্বিলকদ ১৪৪৫

পলিযুক্ত চরে ভাগ্য খুলেছে তিস্তাপাড়ের কৃষকদের

– লালমনিরহাট বার্তা নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ১৬ নভেম্বর ২০২৩  

কিছুদিন আগেও যে তিস্তা নদীতে ছিল থৈ থৈ পানি। সেই প্রমত্তা নদী এখন ধু ধু বালু চর। নদী শুকিয়ে এর বুকে জেগে উঠেছে চর। যে দিকেই তাকাবেন শুধু চর আর চর। আর এই চরেই আলু, পেঁয়াজ, রসুন ও মিষ্টি কুমড়াসহ অন্যান্য শাক-সবজি রোপণ করতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন তিস্তাপাড়ের কৃষকরা।

লালমনিরহাট জেলা কৃষিনির্ভর হওয়ায় চরাঞ্চলের নারী-পুরুষদের বেশিরভাগ সময় এই কৃষি কাজেই ব্যস্ত থাকতে দেখা যায়। চরে ব্যাপক পরিসরে চাষাবাদ হওয়ায় সেখানকার নারী-পুরুষদের কর্মসংস্থানও বেড়েছে।

কৃষকরা জানান, কিছুদিন আগে ভারত থেকে হঠাৎ কাদাযুক্ত পানি এসে তিস্তা নদীর জেগে উঠা চরগুলোতে পলি জমেছে। তাই তারা মনে করছেন এবার তাদের ভাগ্য খুলে গেছে। এসব জমে উঠা পলি জমিতে ভালো আবাদ হওয়ার সম্ভাবনা দেখছেন তারা।

বুধবার (১৫ নভেম্বর) দুপুরে লালমনিরহাট জেলার আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা ইউনিয়নের তিস্তার পাড়ে গেলে এমনই দৃশ্য চোখে পড়ে।

লালমনিরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, তিস্তার চরে এবার ৮৫ হাজার হেক্টর জমিতে রোপা আমন ধানের ফলন হয়েছে। যা লক্ষ্যমাত্রার থেকে প্রায় দ্বিগুন। লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে ভুট্টার আবাদও ৩১ হাজার ৯০০ হেক্টর জমিতে চাষাবাদ করা হয়। এছাড়াও জেলায় এবার ১২০০ হেক্টর জমিতে আলু আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। ২০০ হেক্টর জমিতে মিষ্টি কুমড়ার আবাদ অর্জিত হয়েছে। এখনো পেঁয়াজ ও রসুনের পরিসংখ্যান পায়নি কৃষি বিভাগ।

কৃষি বিভাগ জানায়, লালমনিরহাটের বিভিন্ন চরাঞ্চলের প্রায় ৫০ হাজার হেক্টর জমিতে বিভিন্ন প্রকার কৃষি আবাদ হয়ে থাকে। এর মধ্যে আলু, পেঁয়াজ, রসুন ও ভুট্টা বেশি আবাদ হয়।

সদর উপজেলার রাজপুর ইউনিয়নের কৃষক শ্রী মনো রঞ্জন রায় জানান, তিস্তার চরে তার আড়াই একর জমি আছে। বর্ষার পর এসব জমিতে চর জেগে উঠলে তিনি আলু, পেঁয়াজ, রসুন ও মিষ্টি কুমড়াসহ বিভিন্ন সবজি আবাদ করেন। এসব সবজি বিক্রির পর খরচ বাদ দিয়ে তার প্রায় অর্ধেকের বেশি মুনাফা হয়। এবার মুনাফাটা একটু বেশি হওয়ার আশা করছেন তিনি।

গোকুন্ডা ইউনিয়নের কৃষক সামসুক হক জানান, তিস্তার চরে তার দেড় একর জমি রয়েছে। চরের জেগে ওঠা জমিতে প্রচুর পলি দেখতে পেয়েছেন। তাই তিনি সিদ্ধান্ত নিয়েছেন এবার সম্পূর্ণ জমিতে আলু আবাদ করবেন।

লালমনিরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক হামিদুর রহমান বলেন, এবার চরাঞ্চলের জমিগুলোতে পলি জমায় ধান ও ভুট্টার আবাদ লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে গেছে। এছাড়াও আলু, পেঁয়াজ, রসুন ও মিষ্টি কুমড়ার ফলনও ভালো হবে। এজন্য কৃষি অফিস থেকে চরাঞ্চলের কৃষকদের এসব ফসল আবাদে পরামর্শ ও বিনামূল্যে বীজ দেওয়া হবে বলেও জানান তিনি

– লালমনিরহাট বার্তা নিউজ ডেস্ক –