• রোববার ১৯ মে ২০২৪ ||

  • জ্যৈষ্ঠ ৫ ১৪৩১

  • || ১০ জ্বিলকদ ১৪৪৫

মানসিক চাপ কমায় যোগব্যায়াম

– লালমনিরহাট বার্তা নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ২২ জুন ২০২৩  

মানসিক চাপ কমায় যোগব্যায়াম                                    
ইয়োগা বা যোগব্যায়াম একটি শাস্ত্রীয় কৌশল, যা পাঁচ হাজার বছরের পুরোনো। প্রাচীন ভারতীয় উপমহাদেশের মুনি ঋষিরা তাদের স্বাস্থ্য ঠিক রাখা এবং দীর্ঘজীবনের জন্য বিভিন্ন কলাকৌশল আবিষ্কার বা আয়ত্ত করেন। প্রায় ৪০০ বছর আগে সর্বপ্রথম ঋষি পতঞ্জলি কিছু আসনের কথা বলেন এবং এগুলো মানুষের মাঝে ছড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেন।

যোগব্যায়াম এক শক্তিশালী প্রাচীন অনুশীলন পদ্ধতি যা মন এবং শরীরের মধ্যে একটি সেতু হিসাবে কাজ করে। এর সাহায্যে একজন তার অভ্যন্তরীণ সত্ত্বার সঙ্গে সংযুক্ত অনুভব করে। যোগব্যায়াম অনুশীলনের মাধ্যমে আমরা চিন্তাভাবনা সম্পর্কে আরও সচেতন হই এবং আমাদের জীবনযাপন সম্পর্কেও সচেতন হই। যোগ মানসিক চাপ দূর করে আমরা আরও উৎপাদনশীল হয়ে উঠতে সাহায্য করে।

যোগ বিশেষজ্ঞ এবং আধ্যাত্মিক গুরু, অক্ষর যোগ ইনস্টিটিউটের প্রতিষ্ঠাতা হিমালয়ান সিদ্ধা অক্ষর স্ট্রেস কাটাতে, মননশীলতা উন্নত করতে এবং হৃদপিণ্ডের উন্নতির জন্য কিছু টিপস দিয়েছেন-

কীভাবে মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ করবেন?
ডায়েট এবং লাইফস্টাইলের মতো অন্যান্য বিষয়গুলোর মতই স্ট্রেস বা, মানসিক চাপ হৃদরোগের অন্যতম প্রধান কারণ। আপনার জীবন থেকে অবাঞ্ছিত স্ট্রেস এবং উদ্বেগ কমানোর জন্য সেরা উপায়  যোগ এবং আধ্যাত্মিকতা। যোগব্যায়াম একটি শৃঙ্খলাবোধ জন্ম দেয়, যা মননশীলতাকে উৎসাহিত করে।

যোগব্যায়াম মননশীল জীবনযাপনে সহায়তা করে 
মননশীলতা আপনাকে জীবনে চলার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিতে সহায়তা করে। যোগব্যায়াম আপনার শারীরিক এবং মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। সারা বিশ্বের তথ্যের ভিত্তিতে বেশ কয়েকটি গবেষণায় বলা হচ্ছে, মননশীলতা একজন ব্যক্তির সুস্থতার ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য একটি বিষয়।

যোগাসনের কৌশল
যোগব্যায়াম আপনার শ্বাস-প্রশ্বাসের সাথে সাথে অভ্যন্তরীণ শারীরিক ওঠা-নামা নিয়ন্ত্রণ করে। সপ্তাহে ন্যূনতম তিনবার নিয়মিত যোগাসন অনুশীলন করলে কোনো ব্যক্তি শারীরিক, মানসিক এবং আধ্যাত্মিক ভাবে উপকৃত হবেন। প্রতিদিনের ওয়ার্কআউট করার পাশাপাশি এই প্রাথমিক আসনগুলো অনুশীলন করুন। ৩০ সেকেন্ড পর্যন্ত প্রতিটি অবস্থান (পোজ) ধরে রাখুন, তারপর একই বারে তিনবার অনুশীলন করুন।

সুস্থভাবে চলুন-ফিরুন 
হাঁটা, জগিং, যোগব্যায়াম ইত্যাদির মতো ব্যায়াম আমাদের প্রতিদিনের শারীরিক কার্যকলাপ উদ্বেগ, দুঃখ এবং অন্যান্য অপ্রীতিকর অনুভূতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। সুস্থতা, জীবনের সন্তুষ্টি, স্বনির্ভরতা, আত্মতুষ্টি, ব্যক্তিগত অগ্রগতির অনুভূতি ইত্যাদি ইতিবাচক অনুভূতিগুলোকে জাগাতে সাহায্য করে। ভালো শারীরিক স্বাস্থ্য আমাদের সৃজনশীলতাকে উৎসাহিত করে এবং আপনার পরিপূর্ণতার অনুভূতি জাগাতে সাহায্য করে। 

ধ্যানের সাহায্যে ধৈর্যশীল হয়ে উঠুন
রোপণ ধ্যান, স্থিথি ধ্যান, সুপার পাওয়ার মেডিটেশন, আরম্ভ ধ্যান এবং শ্বাস ধ্যান, যেগুলি সহজে শেখা যায় এবং গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে সেগুলি অনুশীলনের মাধ্যমে চিন্তা ও নিজের  আচরণ নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতা বৃদ্ধি করা সম্ভব। আপনি যদি দিনে মাত্র ৫ থেকে ১০ মিনিটের জন্যও ধ্যান অনুশীলন করেন, সেক্ষেত্রেও এর ফলে প্রেরণা, পরিকল্পনা এবং সমস্যা সমাধানের বিষয়ে আপনার মানসিক উন্নতি ঘটবে। স্ট্রেস বা, মানসিক চাপ এড়িয়ে ভালো মানসিক এবং শারীরিক স্বাস্থ্য পেতে পারেন ধ্যান অনুশীলনের মাধ্যমে।

আসনের মাধ্যমে সুস্বাস্থ্য গড়ে তুলুন-

১. সুখাসন
দণ্ডাসনা ভঙ্গিতে, আপনার পা প্রসারিত করে সোজা হয়ে বসুন। বাম পা ভাঁজ করে ডান উরুর মধ্যে আটকে রাখতে হবে। তারপর, ডান পা ভাঁজ করে বাম উরুর পেছনে টেনে দিতে হবে। আপনার হাতের তালু আপনার হাঁটুতে থাকতে হবে। এবার শিরদাঁড়া সোজা করে বসুন। 

২. দণ্ডাসন
বসার সময় আপনার পা আপনার সামনে প্রসারিত করুন। আপনার পা যোগ করার সময় এবং আপনার গোড়ালি একসাথে টানার সময় আপনার পিঠ সোজা রাখুন। আপনার উরু, কালভস এবং পেলভিক পেশীগুলোকে শক্ত করতে হবে। এবার, আপনার মেরুদণ্ডকে সোজ রাখার জন্য নিতম্বের পাশে আপনার তালুগুলো মাটিতে রাখুন।

৩. নৌকাসন
পেছনে হেলে শুয়ে পড়ুন। এবার, মাটি থেকে আপনার শরীর ৪৫ ডিগ্রি উপরে তুলুন। আপনার পায়ের আঙুল এবং চোখ একই লাইনে থালতে হবে। এরপর আপনার বাহুগুলিকে মাটির সমান্তরাল রাখুন।

৪. সান্তোলানাসন 
যখন আপনি উপুড় হয়ে শুয়ে থাকবেন তখন আপনার হাতের তালুগুলি আপনার কাঁধের নিচে রাখতে হবে। হাঁটু, শ্রোণি এবং শরীরের উপরের অংশগুলিকে উঁচু করে রাখতে হবে। এবার নিশ্চিত করুন যে আপনার মেরুদণ্ড, শ্রোণি এবং হাঁটু সব একই সারিবদ্ধভাবে আছে। আপনার বাহু অবশ্যই সোজা হতে হবে এবং আপনার কব্জি অবশ্যই আপনার কাঁধের নিচে থাকতে হবে।

– লালমনিরহাট বার্তা নিউজ ডেস্ক –