• রোববার ১৯ মে ২০২৪ ||

  • জ্যৈষ্ঠ ৫ ১৪৩১

  • || ১০ জ্বিলকদ ১৪৪৫

দিনাজপুরে বোম্বাই-মাদ্রাজি-চায়না থ্রি’র মুকুলে সয়লাব

– লালমনিরহাট বার্তা নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ১৭ মার্চ ২০২২  

ফাল্গুনের প্রথম দিকে লিচু গাছে নতুন পাতার পাশাপাশি মুকুল আসা শুরু করে। এখন দিনাজপুরের প্রতিটি লিচু গাছ মুকুলে ভরপুর। এখন বোম্বাই, মাদ্রাজি, বেদেনা, চায়না থ্রিসহ নানা জাতের লিচুর মুকুলে ভরে গেছে প্রতিটি গাছ। চলতি বছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ফলন ভাল হাওয়ার আশা লিচু চাষিদের। এ কারণে মুকুল ও গাছের পরিচর্চায় ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা।

এ বছর মাঘ মাসের শেষদিকে বৃষ্টি হওয়ায় দিনাজপুরের লিচুর গাছগুলোতে নির্ধারিত সময়ের পরও প্রচুর মুকুল এসেছে। এরই মধ্যে লিচু বাগানগুলোতে তামাটে পাতার ভেতর দিয়ে উঁকি দিচ্ছে সোনালী ফুল।

দিনাজপুর সদর ছাড়াও বিরল, চিরিরবন্দর, বীরগঞ্জ, ফুলবাড়ী, বিরামপুর, নবাবগঞ্জ, খানসামা ও কাহারোল উপজেলায় উল্লেখযোগ্য লিচু উৎপাদন হয়। এই অঞ্চলের মাটি লিচু চাষের উপযোগী ও অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হওয়ায় এ জেলার মানুষের কাছে দিনদিন সমাদৃত হচ্ছে লিচুর বাগান।

দিনাজপুর সদরের ৬নং আউলিয়াপুর ইউনিয়নের মাশিমপুর গ্রামের বেদেনা লিচুর খ্যাতি দেশজুড়ে। এ লিচুর খোসা পাতলা, শাশ পুরো রসালো ও বিচি ছোট হয়। জেলার চাহিদা মিটিয়ে এই বেদেনা লিচু মৌসুমের মধ্যভাগে সৌখিন লিচুপ্রেমীদের হাতে পৌঁছে যায়। সরেজমিনে সেখানকার লিচুর বাগানে দেখা গেছে, গাছে গাছে শোভা পাচ্ছে লিচুর সোনালী মুকুল। বাগানগুলোতে লিচুর মুকুল থেকে কুঁড়ি আসা শুরু হবে। শিগগিরই কুঁড়ি থেকে ফুটবে গুঁটি লিচু। সবুজ গুঁটি থেকে বৈশাখের শেষে থোকা থোকা শোভা পাবে লাল টকটকে লিচু।
মাশিমপুরের লিচু বাগানের মালিক আকবর আলী বলেন, এখানকার বেদেনা লিচুর খ্যাতি দেশজুড়ে। সম্প্রতি চায়না থ্রি লিচুর চাহিদা বাড়লেও স্বাদের দিক থেকে বেদেনা লিচু অপ্রতিদ্বন্দ্বী। প্রতি বছর আমার বাগান থেকে ঢাকা, নারায়নগঞ্জ, নরসিংদী, সিলেট থেকে ব্যাপারীরা এসে বেদেনা লিচু নিয়ে যান। করোনার কারণে গত ২-৩ বছর ব্যাপারীরা কম এলেও এ বছর বেচাকেনা ভালো হওয়ার আশা করছি।

কৃষি বিভাগের তথ্যমতে, চলতি মৌসুমে দিনাজপুরে ৫ হাজার ৪৮১ হেক্টর জমিতে লিচু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে ৩ হাজার ১৭০ হেক্টর জমিতে বোম্বাই, ১ হাজার ১৬৬ হেক্টর জমিতে মাদ্রাজি, ৭০২ দশমিক ৫ হেক্টর জমিতে চায়না-থ্রি, ২৯৪ দশমিক ৫ হেক্টর জমিতে বেদেনা, ২১ হেক্টর জমিতে কাঠালি এবং ১ হেক্টর জমিতে মোজাফ্ফরপুরী লিচু আবাদ হচ্ছে।

দিনাজপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক (শস্য) মো. খালিলুর রহমান বলেন, বর্তমানে সারাদেশে লিচু চাষ হলেও দিনাজপুরের লিচুর ব্যাপক চাহিদা ও খ্যাতি এখনো দেশ জোড়া। চলতি মৌসুমে জেলায় ৫ হাজার ৪৮১ হেক্টর জমিতে ১৩ লাখ ৭০ হাজার ২৫০টি গাছে লিচুর ফলন হবে। এছাড়া বিভিন্ন বসতবাড়িতে প্রায় ৬ লাখ গাছে লিচুর ফলন আসবে।

তিনি আরো বলেন, লিচু দিনাজপুর জেলার একটি প্রধান অর্থকারী ফসল হিসেবে বিবেচিত। দিনদিন এর অর্থনৈতিক পরিধি আরো বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ ফসলের সঙ্গে বাঁশের ঝুড়ি তৈরির পরিমাণ, বাগান শ্রমিকের কর্মসংস্থান ও পরিবহন ব্যবসার ব্যাপক প্রসার ঘটছে।

– লালমনিরহাট বার্তা নিউজ ডেস্ক –