• শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৫ ১৪৩০

  • || ১৮ রমজান ১৪৪৫

সর্বশেষ:
বাংলাদেশকে হুমকির মুখে ফেলেছে ক্রমবর্ধমান জলরাশি: গবেষণা উত্তরবঙ্গের মহাসড়কে চার লেন চালু, ঈদযাত্রা হবে স্বস্তির সব উন্নয়ন সহযোগীদের এক প্ল্যাটফর্মে আসা প্রয়োজন: পরিবেশমন্ত্রী বিডিএস ভূমি ব্যবস্থাপনায় বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনবে: ভূমিমন্ত্রী বিএনপির নিগৃহীত নেতাকর্মীদের তালিকা দিতে হবে: ওবায়দুল কাদের

শীতের সকালের রোদের যত গুণ!

লালমনিরহাট বার্তা

প্রকাশিত: ১২ ডিসেম্বর ২০১৮  

শীতের সকালের মিষ্টি রোদ কার না পছন্দ। কিন্তু অনেকের মতে সূর্যালোকের অত্যাধিক তাপ শরীর ও ত্বকের পক্ষে উপযোগী নয়। কারণ সূর্যালোকের অত্যাধিক তাপের ফলে ত্বকে ক্যান্সার, রোদে পোড়া দাগ ও তাড়াতাড়ি বয়সের ছাপ পড়ে। ফলে শরীরের অন্যান্য অঙ্গের চেয়ে হাত, পা ও মুখের ত্বক বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

কিন্তু একথা সত্যি যে গ্রীষ্মকালে সূর্যালোকের প্রখর তাপমাত্রায় এ সমস্যাগুলো বেশি দেখা দেয়। তাই বিশেষজ্ঞরা সূর্যের প্রখর রোদ থেকে দূরে থাকার পরামর্শ দেন। শীতে কিন্তু ভিন্ন রকম। শীতের সকালের মিষ্টি রোদ মোটেও শরীরের পক্ষে ক্ষতিকারক নয়। বরং ত্বকের যোগায় ভিটামিন। কর্মে আনে উদ্দীপনা।

 

1.সকালের রোদের যত গুণ!

সকালের মিষ্টি রোদ একটি ব্যক্তির সামগ্রিক শরীরের পক্ষে বেশ উপযোগী। সকালের রোদ ভিটামিন ডি-তে পরিপূর্ণ থাকে। খাবারের মাধ্যমে ভিটামিন ডি এর অভাব পূরণ করা যায় কিন্তু সকালের রোদের যে ভিটামিন ডি পাওয়া যায় সেটি শরীরের বেশ সহায়ক। সম্ভবত ভিটামিন ডি অর্জনের একটি সহজ উপায় সকালের রোদ। শীত হোক বা গ্রীষ্ম সকালের রোদ সব ঋতুতেই উপকারী। শরীরের জন্য সকালের রোদ পোহানোর আরো কিছু সুবিধা রয়েছে:

(১) শরীরে অনাক্রমতা যোগায়:

সকালের সূর্যের আলো শরীরে অনাক্রমতা বা ইমিউন সিস্টেম বৃদ্ধি করে। সকালের রোদে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ডি থাক। ইমিউন সিস্টেম উন্নত করতে সহায়তা করে। শরীরের কোষ এর কার্যকারিতা বৃদ্ধি করে, শরীরের প্রতিরক্ষা বাড়ায়, ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই করে, দেহকে সুরক্ষিত রাখে। এছাড়াও সকালের সূর্যালোক সহজাত ও অভিযোজিত অনাক্রম্য প্রতিক্রিয়া নিয়ন্ত্রণ করে।

(২) হাড় গঠনে:

শরীরের হাড় গঠনের অন্যতম উপাদান হলো ভিটামিন ডি। সকালের সূর্যালোকে ভিটামিন ডি এর উপস্থিতিতে হাড়ে ক্যালসিয়াম যোগায়। যা বাচ্চাদের হাড় গঠনে সহায়তা করে। অনেক সময় ক্যালসিয়াম বা ভিটামিন ডি এর অভাবে বাচ্চাদের হাড় গঠন সঠিকভাবে হয় না বা এর ফলে ভবিষ্যতে নানারকম শারীরিক সমস্যা দেখা দেয়। নিয়মিত ভিটামিন ডি গ্রহণের ফলে আর্থারিস, অস্টিওপোরোসিস, ফ্র্যাকচার এর মত রোগগুলোর ঝুঁকি কমায়। সকালে অন্তত ১০-১৫ মিনিটের রোদ পোহানো উচিত।

(৩) দৃষ্টিশক্তি উন্নত করে:

একটা বয়সে এসে চোখের দৃষ্টি শক্তি একেবারে কমে আসে। ম্যাকুলার ডিজেনারেশন এর ফলে এ ঘটনাটি ঘটে। ভিটামিন ডি-৩ ম্যাকুলার ডিজেনারেশন প্রতিরোধ একটি মূল ফ্যাক্টর। সূর্য রশিতে থেকে এই ভিটামিন পাওয়া যায়। তাই বয়স্কদের প্রতিদিন অন্তত ১০-১৫ মিনিট রোদ পোহানো উচিত। এতে দৃষ্টিশক্তি দীর্ঘদিন পর্যন্ত প্রখর থাকে। বিশেষ করে সূর্যোদয়ের সময়টা বেশি কার্যকরী।

(৪) শরীরের বিপাক ক্রিয়ায় বৃদ্ধিতে:

সকালে সূর্যালোক শরীরের বিপাক ক্রিয়া বাড়ানোর জন্য দারুণ কার্যকরী। দেহকে সুস্থ রাখতে ও ওজন নিয়ন্ত্রণ রাখতে সহায়তা করে বিপাক ক্রিয়া। বিপাক ক্রিয়ার হার ত্বরান্বিত করে সকালের সূর্যালোক। এক গবেষণায় দেখা গেছে, সকালে সূর্যালোকের অতি বেগুনি রশ্মি স্থূলতা দমনেও সহায়তা করে। ভিটামিন ডি অভাব গ্রস্ত ব্যক্তি স্বাভাবিক ব্যক্তির চেয়ে চর্বি বেশি হবে। তাই স্থূল ব্যক্তি দৈনিক কমপক্ষে ১০-১৫ মিনিট সকালের সূর্যালোকে হাঁটার অভ্যাস করা উচিত। তাহলে ত্বকে জমে থাকা নাইট্রিক অক্সাইড এর দহনের ফলে চর্বি কমতে শুরু করে। ডায়াবেটিস প্রতিরোধে সহায়তা করে সকালের মিষ্টি রোদ।

(৫) পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুম:

সকালের রোদে হাঁটার অভ্যাস করলে কখনো ঘুমের ঘাটতি হয় না। অনেকের ঘুম না হওয়ার অভ্যাস থাকে এটি স্বাস্থ্যের পক্ষে মোটেও ভালো নয়। সকালের সূর্যালোকে হাটা একটি ব্যক্তির স্বাভাবিক ঘুম চক্র বজায় থাকে। পাশাপাশি শরীরবৃত্তীয় আচরণগত প্রক্রিয়াগুলো নিয়ন্ত্রণ করে সকালের রোদ।

(৬) হাইপার টেনশন থেকে মুক্তি:

যখন একটি ব্যক্তি সকালে সূর্যালোকের মুখোমুখি হয় তখন শরীরে নাইট্রিক অক্সাইড মুক্ত হতে শুরু করে, যা রক্তচাপ কমায় ও কার্ডিওভাসকুলার রোগ প্রতিরোধে সহায়তা করে।

 

2.সকালের রোদের যত গুণ!

সংক্ষেপে বলা যায় সকালে সূর্যালোকটি শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী। সূর্যোদয়ের সময় কয়েক মিনিট রোদ আপনাকে ভিটামিন ডি উপভোগ করতে সাহায্য করে। সূর্যালোকে থাকা ভিটামিন ডি আপনাকে যে স্বাস্থ্য গুনগুলো দেয় তা অতুলনীয়। তবে সূর্যালোকের উত্থান ও তাপ বেড়ে যাওয়ার ফলে সূর্যের তাপ এর সুবিধা হ্রাস পায়।

– লালমনিরহাট বার্তা নিউজ ডেস্ক –