• বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১১ ১৪৩১

  • || ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

সর্বশেষ:
যুদ্ধের অর্থ জলবায়ু পরিবর্তনে ব্যয় হলে বিশ্ব রক্ষা পেত- প্রধানমন্ত্রী দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ উৎপাদনের রেকর্ড মেডিকেল কলেজের ক্লাস অনলাইনে নেয়ার নির্দেশ স্বাস্থ্যমন্ত্রীর ‘গণতান্ত্রিক রীতিনীতি না মানলে জনগণই বিএনপিকে প্রতিহত করবে’ লালমনিরহাটে হত্যা মামলায় বিএনপির দুই নেতা কারাগারে

‘শতবর্ষ’ উদযাপনের নামে অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে নানা অনিয়মের অভিযোগ

– লালমনিরহাট বার্তা নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ২৬ ডিসেম্বর ২০১৯  

‘শতবর্ষ’ উদযাপনের নামে নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে রংপুরের কারমাইকেল কলেজের অধ্যক্ষ ও উৎসব কমিটির বিরুদ্ধে। একবার অনিয়মে ধরা খেলেও সরকারি ছুটির দিনে (বড়দিন) দ্বিতীয়বার দরপত্র আহবান করে বিতর্কের জন্ম দিয়েছেন কলেজের অধ্যক্ষ ড. শেখ আনোয়ার হোসেন। পরে নানামুখী চাপে বৃহস্পতিবার পুনরায় তিনি দরপত্র আহবান করেন। এ যেন এক ভেলকিবাজি।

অভিযোগ রয়েছে, অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারী করে এরইমধ্যে ‘শতবর্ষ’ উদযাপনের নামে কয়েক লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন অধ্যক্ষ ও কমিটির সদস্যরা।

কলেজ সূত্রে জানা গেছে, ২৯ ও ৩০ ডিসেম্বর কলেজের শতবর্ষ পূর্তি উৎসব উদযাপন করা হবে। এজন্য নেয়া হয়েছে ব্যাপক প্রস্তুতি। এরইমধ্যে কলেজের শতবর্ষ উৎসব নিয়ে অভিযোগের শেষ নেই।

রাষ্ট্র ও সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত ও অনেক খ্যাতনামা ব্যক্তি এ কলেজের শিক্ষার্থী ছিলেন। বর্তমানে যাদের অনেকেই দেশ-বিদেশে কর্মরত। শতবর্ষ উৎসব ঘিরে তাদের মাঝেও উদ্দীপনা শুরু হয়েছে।

এদিকে আকস্মিকভাবে ২৯ ও ৩০ ডিসেম্বর উৎসবের আয়োজন করায় অনেকেই অংশ নিতে পারবেন না বলে জানিয়েছেন। এছাড়া তারা ক্ষোভও প্রকাশ করেছেন।

অপরদিকে ১৫০০ টাকা করে ফি দিয়ে সাড়ে ১৩ হাজার প্রাক্তন ও বর্তমান শিক্ষক-শিক্ষার্থী রেজিস্ট্রেশন করেছেন। যার টাকার পরিমাণ ২ কোটি ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা। আর তাদের জন্য খাবারের ব্যয় বরাদ্দ ধরা হয়েছে মাথাপিছু ১২৫ টাকা।

জানা গেছে, ২১ ডিসেম্বর ছিল খাবারের দরপত্র আহবানের দিন। এদিনে নির্দিষ্ট সময়ের ২০ মিনিট পরে রংপুরের জান্নাত হোটেল নামে একটি খাবারের প্রতিষ্ঠান দরপত্র দাখিল করে। ২০ মিনিট পরে দরপত্র দাখিল এবং তা গ্রহণের বিষয়ে অন্যান্য সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা আপত্তি তোলেন। কিন্তু তা উপেক্ষা করে ওই প্রতিষ্ঠানকে এক রাতেই কার্যাদেশ দেয়া হয়। পরে বিষয়টি নিয়ে জোরালো আপত্তি জানানো হলে কার্যাদেশ বাতিল করে ২৫ ডিসেম্বর (বড়দিন) পুনরায় দরপত্র আহবান করা হয়।

ছুটির দিনে কী করে দরপত্র আহবান করা হয় এ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন প্রাক্তন ছাত্র-ছাত্রী ও সংশ্লিষ্টরা। তারা জানান, বুধবার ওই জান্নাত হোটেলসহ পাঁচটি প্রতিষ্ঠান দরপত্র দাখিল করে। দরপত্র শর্ত অনুযায়ী জামানত হিসেবে ব্যাংক ড্রাফট জমা দেয়ার বিধান রয়েছে। কিন্তু জান্নাত হোটেল তা না মেনেই নগদ টাকা জমা দিয়ে দরপত্র দাখিল করে। এ সময় আপত্তি জানান অন্যান্য দরদাতারা। কিন্তু তা সত্ত্বেও চিনিগুঁড়া চালের দেড় প্লেট পোলাও, ৮শ’ গ্রামের এক পিস মুরগি, একটি মুরগির ডিম, একটি করে খাসির টিকিয়া, বুটের ডাল, সালাদ, চাটনি, ৫০০ মিলিলিটার পানি ও নেটের ব্যাগসহ প্রতি প্যাকেট খাবারের দর দেয়া হয়েছে ১১৯ টাকা।

বিক্ষুব্ধ প্রাক্তন ছাত্র-ছাত্রী ও সংশ্লিষ্টদের অভিযোগ, প্রথমত সরকারি ছুটির দিন খুব জরুরি বিষয় ছাড়া কাজকর্ম হতে পারে না। দ্বিতীয়ত ব্যাংক ড্রাফটের পরিবর্তে নগদ টাকায় দরপত্র গ্রহণ করা যায় না। তৃতীয়ত ১১৯ টাকা দরে কী করে দরপত্রের চাহিদা অনুযায়ী এসব খাবার সরবরাহ করবে তারা। করলেও সেই খাবার কতটা মানসম্মত হবে? তারা প্রশ্ন তুলেছেন কর্তৃপক্ষের এত উৎসাহ কেন? কিন্তু তা সত্ত্বেও যোগসাজশের মাধ্যমে তা গ্রহণ করে ওই জান্নাত হোটেলকেই কার্যাদেশ দেয়ার প্রক্রিয়া চালাচ্ছিল কর্তৃপক্ষ।

কলেজ অধ্যক্ষ ড. শেখ আনোয়ার হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি বিষয়টি স্বীকার করেন। তিনি বলেন, ছুটির দিনে ও ব্যাংক ড্রাফট ছাড়া দরপত্র গ্রহণ ভুল হয়েছে। তাই তা বাতিল করে, গ্রহণ করা টাকা ও দাখিল করা দরপত্র সবাইকে ফেরত দিয়ে বৃহস্পতিবার তৃতীয়বারের মতো দরপত্র আহবান করা হয়েছে।

এর আগে শতবর্ষ উদযাপনের জন্য ১৩৫ টাকা দরে যে মানের গেঞ্জির দরপত্র আহবান করা হয়েছিল, সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান তা না দিয়ে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগসাজশে ১২০ টাকা দামের গেঞ্জি সরবরাহ করেছে। এ থেকেও কর্তৃপক্ষ হাতিয়ে নিয়েছেন লক্ষাধিক টাকা।

– লালমনিরহাট বার্তা নিউজ ডেস্ক –