• বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১২ ১৪৩১

  • || ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

সর্বশেষ:
ছয়দিনের সফরে ব্যাংককে পৌঁছেছেন প্রধানমন্ত্রী গরমে ‘অতি উচ্চ ঝুঁকিতে’ বাংলাদেশের শিশুরা: ইউনিসেফ গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা: বেরোবি কেন্দ্রের পরীক্ষার্থী ৩১ হাজার ৯৪৬ জন বাংলাদেশ-ভারত ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করবে: ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী কাতারের আমিরের সফরে যা পেল বাংলাদেশ

লালমনিরহাটে বিয়ে করতে গিয়ে কারাগারে ভুয়া কনস্টেবল

– লালমনিরহাট বার্তা নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২০  

লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার সিঙ্গিমারী ইউনিয়নের কলেজ পড়ুয়া এক তরুনীকে বিয়ে করতে গিয়ে রাসেল শেখ (২৩) নামে এক ভুয়া পুলিশ কনস্টেবলের ঠাঁই হলো লালমনিরহাট কারাগারে।

রাসেল শেখ রাজবাড়ী জেলার বালিয়াকান্দি পূর্বমৌকুড়ি এলাকার মোঃ খোরশেদ আলী শেখ ও রাবেয়া বেগম দম্পতির সন্তান।

সোমবার (১৪ সেপ্টেম্বর) বিকালে জেলার হাতীবান্ধা থানা পুলিশ মোঃ রাসেল শেখকে লালমনিরহাট আদালতে সোপর্দ করলে বিজ্ঞ আদালত জামিন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। এরপর তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।

হাতীবান্ধা থানা পুলিশ ও মামলার বিবরণে জানা যায়, প্রেমের টানে গত ১২ সেপ্টেম্বর প্রেমিক মোঃ রাসেল শেখ নারায়ণগঞ্জ থেকে লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার টংভাঙা ইউনিয়নের আনন্দ আবাসিক হোটেলে ওঠেন। প্রেমের সূত্র ধরে ১৩ সেপ্টেম্বর দুপুরে সেখান থেকে একই উপজেলার সিঙ্গিমারী ইউনিয়নের দক্ষিণ গোড্ডিমারী এলাকার মোঃ আসাদুজ্জামানের ছেলে সুজন মিয়ার বাড়ীতে যান। এরপর স্থানীয় বিয়ে নিবন্ধক কাজী জাহাঙ্গীর আলমকে ডেকে এনে সুজন মিয়ার বাড়ীতে প্রেমিক রাসেল শেখের সাথে হাতীবান্ধা মহিলা ডিগ্রি কলেজের এইচএসসি দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মরিয়ম বেগম মনা(১৮) সাথে বিয়ে রেজিষ্ট্রি সম্পন্ন হয়। পরে রাসেল শেখের পূর্ব পরিচয় পুলিশ কনস্টেবল বিষয়টি যাচাই-বাছাই করতে গিয়ে পালানোর চেষ্টা করেন তিনি। এরপর লোকজন আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করলে ভূয়া পুলিশ কনস্টেবলের কথা স্বীকার করে। মোঃ রাসেল শেখকে প্রধান আসামী করে এই ঘটনায় জড়িত স্থানীয় কাজী জাহাঙ্গীর আলম ও সুজন মিয়াসহ আরো ৫ ব্যক্তিকে আসামী করে হাতীবান্ধা থানায় ওইদিন রাতে মামলা দায়ের করেন মরিয়ম বেগম মনার পিতা আমিনুর রহমান।

মরিয়ম বেগম মনা বলেন, ‘গত ৪ সেপ্টেম্বর হাতীবান্ধা রেলওয়ে স্টেশনে আমার এক বড় আপুর মাধ্যমে মোঃ রাসেল শেখের সাথে পরিচয় ঘটে। এরপর তিনি নিজেকে পুলিশ কনস্টেবল পরিচয়ে আমার সাথে মোবাইলে কথা বলার এক পর্যায়ে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে এবং বিয়ের প্রস্তাব দেয়। ১১ সেপ্টেম্বর ঢাকা থেকে হাতীবান্ধার পথে রওনা দেন আমাকে বিয়ে করার জন্য। স্থানীয় আনন্দ হোটেলের কর্মচারীর মাধ্যমে স্থানীয়দের ম্যানেজ করে ১৩ সেপ্টেম্বর সুজনের বাসায় কাজী জাহাঙ্গীর আলমকে এনে বিয়ে রেজিষ্ট্রি করার পর সবাই আমাদের দুইজনকেসহ বাবার নিকট নিয়ে যায়। এরপর আমার পরিবারের লোকজন জানতে পারেন তিনি ভুয়া পুলিশ সদস্য। এখন এ ঘটনায় মামলা হয়েছে।’

মরিয়মের বড় বোন তাসলিমা আক্তার জেমি ওই ছেলেকে নারী পাচারকারী হিসেবে সন্দেহ করে বলেন, ‘একটি সহজ সরল মেয়েকে কিভাবে এতো দূর থেকে বিয়ে করতে আসে? বিষয়টি খতিয়ে দেখে ওই ছেলেকে জেলখাতে সারাজীবন আটকে রাখা দরকার। আমার মা নেই। অসুস্থ্য বাবাকে নিয়ে এখন আমরা কিভাবে বিষয়টি সামলাবো। আদালতে যেন যেতে না হয়, বিচার যেন হয়।’

বাদী আমিনুর রহমান নিজে অসুস্থ্য দাবী করে বলেন, ‘আমার স্ত্রী মারা গেছে। চার মেয়ে। এরমধ্যে দুই মেয়ের বিয়ে হয়েছে। মনা তৃতীয়। তাকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে প্রতারণা করে বিয়ে রেজিষ্ট্রি করার ঘটনায় মোঃ রাসেল শেখসহ অপর ৫ জনের বিরুদ্ধে থানায় মামরা করেছি। আমি ন্যায় বিচার চাই।’    
 
হাতীবান্ধা থানার ওসি মোঃ এরশাদুল আলম মামলার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ধৃত আসামী মোঃ রাসেল শেখের নিকট পুলিশের পিবিআইয়ের একটি ভুয়া পরিচয়পত্র উদ্ধার করা হয়েছে। তাকে লালমনিরহাট আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। অপর আসামীদের গ্রেফতারে পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে।   

– লালমনিরহাট বার্তা নিউজ ডেস্ক –