• বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১২ ১৪৩১

  • || ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

সর্বশেষ:
ছয়দিনের সফরে ব্যাংককে পৌঁছেছেন প্রধানমন্ত্রী গরমে ‘অতি উচ্চ ঝুঁকিতে’ বাংলাদেশের শিশুরা: ইউনিসেফ গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা: বেরোবি কেন্দ্রের পরীক্ষার্থী ৩১ হাজার ৯৪৬ জন বাংলাদেশ-ভারত ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করবে: ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী কাতারের আমিরের সফরে যা পেল বাংলাদেশ

লালমনিরহাটে কাজ না করেই প্রকল্পের টাকা লুটপাটের অভিযোগ

– লালমনিরহাট বার্তা নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ১৭ জানুয়ারি ২০২০  

লালমনিরহাটের হাতীবান্ধায় কাজ না করে প্রকল্পের ১৮ লাখ টাকা লুটপাটের অভিযোগ উঠেছে উপজেলা সহকারী জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী প্রকাশ কান্তি রায় ও স্থানীয় ঠিকাদারের বিরুদ্ধে। 
প্রকল্পের ২০ ভাগ নিমার্ণ কাজের বিপরীতে ১৮ লাখ টাকার বিল-ভাউচার দাখিল করে ঠিকাদারের কাছ থেকে আর্থিক সুবিধা নিয়ে ওই টাকা উঠাতে ঠিকাদারকে সুযোগ করে দিয়েছেন প্রকৌশলী প্রকাশ কান্তি রায়। সেই সুবিধার টাকা বৈধ করতে তিনি এখন চিঠি-পত্র চালাচালি করে ফন্দি তৈরি করছেন প্রকল্পটি যেন এখানেই শেষ হয়ে যায়। নিম্ন মানের কাজ ও অপরিকল্পিতভাবে বোমা মেশিন দিয়ে পুকুর খনন করায় সামান্য বৃষ্টিতেই ভেঙে গেছে পুকুরের পাড়।

জানা যায়, ওই উপজেলার ডাকবাংলোর পাশে জেলা পরিষদের একটি পুকুর খনন করে দৃষ্টি নন্দন পুকুর তৈরির পাশাপাশি ওই এলাকায় বসত বাড়িতে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহের একটি পাইলট প্রকল্প গ্রহণ করে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতর। ওই প্রকল্পটি বাস্তবায়নের জন্য ২০১৭-১৮ অর্থ বছরে ২৫ লাখ ৭৬ হাজার ৩ শত ৯০ টাকা ব্যয়ে একটি প্রকল্প বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয়া হয়। কাজটি বাস্তবায়নের দায়িত্ব পান শহিদ ব্রাদার্স নামে ঢাকার মতিঝিলের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। 

ওই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের দায়িত্ব ক্রয় করে নেন শরিফুল হক শাকিল নামে লালমনিরহাট জেলা শহরের এক ঠিকাদার। প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ শুরু হয় ২০১৮ সালের ডিসেম্বর মাসে। ১৮০ দিনের মধ্যে কাজ সম্পন্ন করার নিয়ম থাকলেও গত ১ বছরেও কাজের ২০ ভাগ শেষ করতে পারেনি ঠিকাদার। অথচ ২০ ভাগ নিমার্ণ কাজের বিপরীতে প্রায় ২৬ লাখ মোট টাকার মধ্যে ১৮ লাখ টাকার বিল-ভাউচার দাখিল করে টাকা উঠিয়ে নিয়েছেন ঠিকাদার। এ দিকে নিম্নমানের কাজ ও অপরিকল্পিতভাবে বোমা মেশিন দিয়ে পুকুর খনন করায় সামান্য বৃষ্টিতে ভেঙে গেছে পুকুরের পাড়।

অভিযোগ রয়েছে, বিলুপ্ত ছিটমহলগুলোতে নলকূপ ও স্যানিটেশন প্রকল্পে নানা অনিয়মের মাধ্যমে লাখ লাখ টাকা লুটপাট করেছেন হাতীবান্ধা উপজেলা সহকারী জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী প্রকাশ কান্তি রায়। এ ছাড়া নিয়মিত অফিস না করার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। অনিয়মের প্রাথমিক তথ্যের প্রমাণ পাওয়ায় এরইমধ্যে ওই  প্রকৌশলীর চাকরি সংক্রান্ত একটি ফাইল আটক করে দিয়েছে নিবার্হী।

দরপত্রের নিয়ম অনুযায়ী যতটুকু কাজ হবে ততটুকু কাজের বিল দিবেন জনস্বাস্থ্য অধিদফতর। কিন্তু উপজেলা সহকারী জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী প্রকাশ কান্তি রায় সেই নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করেই ১৮ লাখ টাকার বিল দিয়ে দিয়েছেন ওই ঠিকাদারকে।  

এ বিষয়ে ঠিকাদার শরিফুল হক শাকিল বলেন, বিভিন্ন কারণে কাজটি যথা সময়ে শেষ করা সম্ভব হয়নি। দুই এক দিনের মধ্যে আবারো কাজ শুরু হবে। তবে সহকারী জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী প্রকাশ কান্তি রায় বললেন ভিন্ন কথা। তার দাবি, এ প্রকল্পের সফলতা দেখা যাচ্ছে না। এ ছাড়া এই প্রকল্পের জন্য টাকা বরাদ্দ নেই। তাই মন্ত্রণালয় সিদ্ধান্ত নিয়েছেন যতটুকু হয়েছে সেখানেই শেষ।

২০ ভাগ নিমার্ণ কাজ হয়েছে কিন্তু ১৮ লাখ টাকার বিল দিলেন কেন এমন প্রশ্নের উত্তরে সহকারী জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী প্রকাশ কান্তি রায় বলেন, ঠিকাদার টাকা পেয়ে যে কাজ করবে না তা ধারণাই ছিল না আমার। 

হাতীবান্ধার ইউএনও সামিউল আমিন বলেন, দীর্ঘ দিনেও ওই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন না হওয়ার বিষয়টি দুঃখজনক। আমি উচ্চ পযার্য়ে পত্র দিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধও করেছি।

লালমনিরহাট জেলা জনস্বাস্থ্য বিভাগের নিবার্হী প্রকৌশলী মাইনুদ্দিন বলেন, সহকারী জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী প্রকাশ কান্তি রায় যে তথ্য দিয়েছেন তা সঠিক নয়। আমি সবে মাত্র যোগদান করেছি। কাজ শতভাগ বাস্তবায়ন করা হবে। অতিরিক্ত বিল দেয়ায় ওই সহকারী জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলীর চাকরি সংক্রান্ত একটি ফাইল আটকে দেয়া হয়েছে।

– লালমনিরহাট বার্তা নিউজ ডেস্ক –