• শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৬ ১৪৩১

  • || ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

সর্বশেষ:
ইসরায়েলের হামলার পর প্রধান দুটি বিমানবন্দরে ফ্লাইট চলাচল শুরু। ইসরায়েল পাল্টা হামলা চালিয়েছে ইরানে।

রংপুরের পাঁচ নদীর পানি বিপৎসীমার উপরে: প্লাবিত হচ্ছে নতুন এলাকা

– লালমনিরহাট বার্তা নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ১ জুলাই ২০২০  

রংপুর অঞ্চলের পাঁচ নদীর পানি বিপৎসীমার উপর দিয়ে বইছে। এতে প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা। পানিবন্দী হয়ে পড়ছেন হাজার হাজার মানুষ। ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে নদী ভাঙনও। নদী ভাঙন ও পানি থেকে রক্ষা পেতে অসহায় মানুষ বাড়ি ঘর ছেড়ে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ও উঁচু স্থানে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন।

মঙ্গলবার সরেজমিনে দেখা যায়, ভারী বর্ষণ আর উজান থেকে নেমে আসা ঢলে রংপুর অঞ্চলের প্রধান নদী তিস্তা, ধরলা, ব্রক্ষ্মপুত্র, সানিয়াজান ও দুধকুমার নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

তিস্তার পানি ব্যারেজ পয়েন্টে বিপৎসীমার ২২ সেন্টিমিটার, ধরলার পানি ব্রিজ পয়েন্টে ৭৩ সেন্টিমিটার ও ব্রক্ষ্মপুত্রের পানি চিলমারী পয়েন্টে ৭৩ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এ ছাড়া গাইবান্ধায় ব্রহ্মপুত্র, তিস্তা ও ঘাঘট নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। 

পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ব্রহ্মপুত্রের পানি তিস্তামুখ ঘাট পয়েন্টে বিপৎসীমার ৭৮ সেন্টিমিটার ও ঘাঘট নদীর পানি নতুন ব্রিজ পয়েন্টে বিপৎসীমার ৫৩ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোখলেছুর রহমান বলেন, পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় ব্রহ্মপুত্র বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ও গাইবান্ধা শহর রক্ষা বাঁধের বিভিন্ন পয়েন্ট ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। বাঁধ যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সেজন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।

এদিকে, নীলফামারীর ডালিয়া পয়েন্টে পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। ডালিয়া পয়েন্টের পানি বিপৎসীমার ১০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় তিস্তা ব্যারাজের ৪৪টি স্লুইস গেট খুলে দিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। 

তিস্তা ব্যারাজের গেজ পাঠক নুরুল ইসলাম জানান, ভারত থেকে নেমে আসা ঢল ও অনবরত বৃষ্টির ফলে পানি বৃদ্ধি পেয়ে সোমবার দুপুরের দিকে বিপৎসীমার ১০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়। 

তিস্তা ব্যারাজের উপ-সহকারী প্রকৌশলী (পানি শাখা) এ এস এম আমিনুর রশিদ জানান, উজানের পাহাড়ি ঢল ও ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এছাড়া ব্যারাজের সব গেট খুলে রাখায় ভাটি এলাকার খালিশা চাঁপনী ও বাইশপুকুর চর প্লাবিত হয়ে বাড়িঘর বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে।

কুড়িগ্রাম জেলার উলিপুরে পানি বৃদ্ধির কারণে প্রায় ১০ কোটি টাকা ব্যয়ে তিস্তা নদীর বাম তীর রক্ষায় নির্মিত টি-বাঁধটি ভাঙন দেখা দিয়েছে। বাঁধটি রক্ষায় পানি উন্নয়ন বোর্ড বালু ভর্তি জিও টেক্সটাইল ব্যাগ ডাম্পিং করছেন। ফলে যেকোনো মুহূর্তে বাঁধটি নদী গর্ভে বিলিন হলে পার্শ্ববর্তী গ্রামের শত-শত বাড়ি-ঘর ও ফসলি জমি হুমকির মুখে পড়বে।

উত্তরাঞ্চলের পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রধান প্রকৌশলী জ্যোতি প্রসাদ ঘোষ জানান, ভারতে ভয়াবহ বন্যা হওয়ায় তার প্রভাব বাংলাদেশেও পড়েছে। 

তিনি আরো জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় তিস্তা, ধরলা, সানিয়াজান, ব্রক্ষ্মপুত্র ও দুধকুমার নদীর ভাঙনে ১৫৩টি বসতবাড়ি নদীগর্ভে বিলিন হয়েছে। তাদের ক্ষতির বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।

– লালমনিরহাট বার্তা নিউজ ডেস্ক –