• শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৫ ১৪৩০

  • || ১৮ রমজান ১৪৪৫

সর্বশেষ:
বাংলাদেশকে হুমকির মুখে ফেলেছে ক্রমবর্ধমান জলরাশি: গবেষণা উত্তরবঙ্গের মহাসড়কে চার লেন চালু, ঈদযাত্রা হবে স্বস্তির সব উন্নয়ন সহযোগীদের এক প্ল্যাটফর্মে আসা প্রয়োজন: পরিবেশমন্ত্রী বিডিএস ভূমি ব্যবস্থাপনায় বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনবে: ভূমিমন্ত্রী বিএনপির নিগৃহীত নেতাকর্মীদের তালিকা দিতে হবে: ওবায়দুল কাদের

ঠাকুরগাঁওয়ে বেড়েছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা

– লালমনিরহাট বার্তা নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ২০ জুন ২০২১  

উত্তরের জেলা ঠাকুরগাঁওয়ে দিন দিন বাড়ছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। সেইসঙ্গে বেড়েছে মৃত্যুর সংখ্যাও।

করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় জেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটি বিশেষ বিধি-নিষেধ জারি করলেও বেশিরভাগ মানুষের মধ্যে তা না মানার প্রবণতা লক্ষ করা গেছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করা হলেও মানা হচ্ছে না স্বাস্থ্যবিধি। এবিষয়ে আরো কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার পরামর্শ সচেতন জেলাবাসীর।

গত বছরের ১১ এপ্রিল ঠাকুরগাঁওয়ে প্রথম করোনা সংক্রমিত রোগী শনাক্ত হয়। তবে আশঙ্কার বিষয় হলো, বিগত সময়ের চেয়ে করোনা সংক্রমণ বেড়েছে অনেক বেশি। শুধু চলতি মাসেই (১ থেকে ১৯ জুন) এখন পর্যন্ত  করোনায় আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন ৬০১ জন এবং ১৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। সংক্রমণ বাড়ার কারণে এরইমধ্যে সব ধরনের সভা-সমাবেশ , সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান বন্ধসহ কঠোর বিধি-নিষেধের নির্দেশনা দিয়েছে জেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটি।

কিন্তু বিধি-নিষেধ অমান্য করে সবকিছুই চলছে স্বাভাবিক সময়ের মতোই। সরকারি অফিস, হাটবাজার, শপিংমল, হোটেল রেস্তোরাঁগুলোতে প্রতিদিনই শত শত মানুষের সমাগম ঘটছে। এদের বেশিরভাগই মানছে না স্বাস্থ্যবিধি। এতে করোনা সংক্রমণ প্রতিদিনই উর্ধ্বমুখী হচ্ছে। বেশিরভাগ মানুষের মুখে নেই মাক্স, নেই সামাজিক দূরত্বও। অনেকেই বিভিন্ন অজুহাত দিয়ে স্বাস্থ্যবিধি না মানতে নিজের পক্ষে যুক্তি দিচ্ছেন। এ অবস্থায় স্বাস্থ্যবিধি মানাতে স্থানীয় প্রশাসনকে আরো কঠোর হওয়ার পরামর্শ দিয়েছে সচেতন জেলাবাসী।

পৌর শহরের হাজিপাড়া গ্রামের বাসিন্দা বলেন, বিধি-নিষেধ বেশিরভাগ মানুষই মানছে না। মাস্ক ছাড়াই হাটবাজারে শত শত মানুষের সমাগম ঘটছে। কেউ ইচ্ছে করেই মাস্ক  পড়ছেন না, আবার কেউ মাস্ক মুখের নিচে ঝুলিয়ে রেখে চলাফেরা করছেন। 

সরকারপাড়ার বাসিন্দা আবু সোহেল বলেন, শহরের বিভিন্ন হোটেলগুলোতে স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে না। প্রতিদিন বিভিন্ন বয়সের মানুষ হোটেলগুলোতে মুখরোচক খাবার খেতে ভিড় জমাচ্ছে। এতে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি অনেক বেশি।

গোবিন্দনগরের বাসিন্দা ধরেন্দ্র নাথ বলেন, কঠোর বিধি নিষেধের পরও  শহরের বড় মাঠে প্রতিদিন অনেক তরুণ-তরুণী মাস্ক ব্যবহার না করেই বসে আড্ডা জমাচ্ছেন এবং অনেকেই অহেতুক ঘোরাফেরা করছেন। অনেকে অনলাইন গ্রুপের ১৫-২০ জন সদস্য নিয়ে উন্মুক্ত সভাও করছেন। এবিষয়ে প্রশাসনের নিয়মিত তদারকি দরকার।

জেলা আইনজীবি সমিতির সদস্য অ্যাড. ইমরান বলেন, যে হারে সংক্রমণ বাড়ছে, তা উদ্বেগজনক। এখনই করোনা প্রতিরোধ কমিটিকে আরো কঠোর হয়ে আইন ও স্বাস্থ্যবিধি অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থ্য গ্রহণ করা উচিত। তা না হলে পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে যেতে পারে, তখন আরো বড় বিপর্যয় নেমে আসবে।

ঠাকুরগাঁও সিভিল সার্জন ডা. মো. মাহফুজার রহমান সরকার বলেন, দিন দিন করোনা সংক্রমিত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। এবিষয়ে প্রতিদিন জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে প্রচারণা চালানো হচ্ছে। এর পরও সাধারণ মানুষ স্বাস্থ্যবিধি মেনে না চললে সংক্রমণ ঝুঁকি বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। 

পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, সংক্রমণ প্রতিরোধে পুলিশ জেলার প্রবেশদ্বারসহ অন্যান্য উপজেলায়ও চেকপোস্ট বসিয়েছে। যাতে সবাই মাস্ক  ব্যবহার করে এবং সামাজিক দূরত্বসহ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলাচল করেন।

জেলা প্রশাসক ড. কে এম কামরুজ্জামান সেলিম বলেন, করোনা মোকাবেলায় জনসচেতনতামূলক প্রচারণার পাশাপাশি জেলার বিভিন্ন হাটবাজার, শপিংমল ও গণপরিবহনসহ জনসাধারণকে মাস্ক পরা নিশ্চিত করতে  এবং সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে ভ্রাম্যমাণ আদালতের  অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। সরকারি বিধি-নিষেধ না মানলে জনস্বার্থে আইন অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে আইনি  ব্যবস্থ্যা নেওয়া হবে।

২০২০ সালের ১১ এপ্রিল ঠাকুরগাঁওয়ে করোনা সংক্রমিত রোগী প্রথম শনাক্ত হয়। গত ২৪ ঘণ্টায় জেলায় ১৫৬টি নমুনা পরীক্ষা করে ৫৬ জন সংক্রমিত রোগী শনাক্ত করা হয়েছে। আগের রিপোর্টসহ এ নিয়ে ঠাকুরগাঁও জেলায় মোট করোনা সংক্রমিত রোগীর সংখ্যা ২৩৩৩ জন, যাঁদের মধ্যে চিকিৎসা শেষে সুস্থ হয়ে ছাড়পত্র পেয়েছেন ১৬৩২ জন এবং মোট মৃত্যু ৫৪ জন।

– লালমনিরহাট বার্তা নিউজ ডেস্ক –