• বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১২ ১৪৩১

  • || ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

সর্বশেষ:
যুদ্ধের অর্থ জলবায়ু পরিবর্তনে ব্যয় হলে বিশ্ব রক্ষা পেত- প্রধানমন্ত্রী দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ উৎপাদনের রেকর্ড মেডিকেল কলেজের ক্লাস অনলাইনে নেয়ার নির্দেশ স্বাস্থ্যমন্ত্রীর ‘গণতান্ত্রিক রীতিনীতি না মানলে জনগণই বিএনপিকে প্রতিহত করবে’ লালমনিরহাটে হত্যা মামলায় বিএনপির দুই নেতা কারাগারে

কৃষক আব্দুর রহিম হত্যার ঘটনায় ইউপি সদস্য জাহানারা বেগম আটক

– লালমনিরহাট বার্তা নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৯  

লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার গোড়ল ইউনিয়নের লোহাকুচি বাজারে সরকারি গুদামে ধান জমার স্লিপ না দেওয়ার ঘটনায় ৬নম্বর ওয়ার্ড ইউপি সদস্য মফিজ উদ্দিনের  মামাতো ভাই আব্দুর রহিম (৪৫) নামের এক কৃষককে পিটিয়ে হত্যা করেছে একই ইউনিয়ন পরিষদের সংরক্ষিত ২ নম্বর ওয়ার্ড ইউপি সদস্য জাহানারা বেগমের ছেলে খালেকুজ্জামান মৌসুমসহ তার তিন ছেলে।

এই ঘটনায় ইউপি সদস্য জাহানারা বেগমকে আটক করা হয়েছে। জাহানারার পরিবারের অপর সদস্যরা প্রেফতার এড়াতে গা ঢাকা দিয়েছে। 
শবিবার (২১ সেপ্টেম্বর) সকালে গোড়ল ইউনিয়ের লোহাকুচি বাজারে এই ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার খবর পেয়ে লালমনিরহাট বি সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার তাপস সরকার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।

এসব বিষয়ে নিশ্চিত করেছেন ওসি আরজু মোঃ সাজ্জাদ হোসেন।             

নিহতের পরিবার, প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ জানায়, লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার সরকারি গুদামে ধান জমার স্লিপ না দেওয়ার কারণে গোড়ল ইউনিয়ন পরিষদের সংরক্ষিত ২ নং  ওয়ার্ড ইউপি সদস্য জাহানারা বেগমের ছেলে খালেকুজ্জামান মৌসুমসহ  তার  দুই ভাই একই ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ড  সদস্য মফিজ উদ্দিনকে অতর্কিতভাবে  বেধরক মারপিট শুরু করেন। মফিজ উদ্দিনকে তার মামাতো ভাই আব্দুর রহিম উদ্ধার করতে এগিয়ে যান। এসময় খালেকুজ্জামান মৌসুম ও তার দুই ভাই লোহার রড ও লাঠি দিয়ে উপর্যপুরি রহিমকে পেটালে ঘটনাস্থলেই তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। অবস্থা বেগতিক দেখে মৌসুম ও তাদের লোকজন ঘটনাস্থল থেকে সটকে পরেন। পরে স্থানীয় লোকজন গুরুতর আহত অবস্থায় আব্দুর রহিমকে উদ্ধার করে স্থানীয় কালীগঞ্জ উপজেলা হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে।

গোড়ল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ মাহমুদুল ইসলাম জানান, ৬ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য মফিজ উদ্দিন ৩ টি ও ২ নম্বর সংরক্ষিত ওয়ার্ড সদস্য জাহানারা বেগম ৩টি করে ধান জমা দেওয়ার স্লিপ পান।

ইউপি সদস্য মফিজ উদ্দিন জানান, সরকারি গুদামে কৃষকের ধান জমা দেওয়ার জন্য আমার ওয়ার্ডে  ৩টি স্লিপ বরাদ্দ পাই। এই স্লিপ গুলো চেয়ে আসছিলেন খালেকুজ্জামান মৌসুম ও তার মা। আমি দিতে না চাইলে তারা আমার উপর ক্ষুব্ধ হন। শনিবার সকালে লোহাকুচি বাজারে আমার যাওয়ার খবর পেয়ে  সংরক্ষিত ইউপি সদস্য জাহানারা বেগমের ছেলে খালেকুজ্জামান মৌসুম ও তার দুই ভাই আসে। এসেই সরকারি গুদামে ধান জমা দেওয়ার স্লিপ ৩টি চায়। এই স্লিপ না দিতে চাইলে হঠাৎ তারা আমার উপর চড়াও হয়ে মারপিট শুরু করতে থাকে। এসময় আমার মামাতো ভাই আব্দুর রহিম উদ্ধার করতে এগিয়ে আসলে তাকে লোহার রড ও লাঠি দিয়ে বেধরক পেটালে তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। পরে হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে।

তিনি আরো জানান, এই ঘটনায় তিনি মামলা দায়ের করায় বর্তমানে থানায় অবস্থান করছেন। 

অপরদিকে সংরক্ষিত সদস্য জাহানারা বেগম থানায় আটক থাকায় এবং তার ছেলেসহ পরিবারের সদস্যরা এই ঘটনার পর থেকে পলাতক থাকায় তাদের কারো বক্তব্য নেওয়া যায়নি।        

কালীগঞ্জ থানার ওসি আরজু মোঃ সাজ্জাদ হোসেন বলেন, সহকারী পুলিশ সুপার তাপস সরকার স্যারসহ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। মরদেহ উদ্ধার করে সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে। রবিবার মরদেহের ময়না তদন্তের জন্য লালমনিরহাট সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হবে। এই ঘটনায় একটি হত্যা মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। জড়িতদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। 

– লালমনিরহাট বার্তা নিউজ ডেস্ক –