• শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৬ ১৪৩১

  • || ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

সর্বশেষ:
মুজিবনগর সরকারের ভূমিকা ইতিহাসে অনন্য: রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিরা হস্ত‌ক্ষেপ করবে না: ওবায়দুল কাদের লালমনিরহাটে যুবলীগ কর্মীর পায়ের রগ কাটলেন যুবদল নেতা বাসার ছাদ থেকে পড়ে যুবকের রহস্যজনক মৃত্যু ঠাকুরগাঁওয়ে ঈদ-নববর্ষে ১০ জন নিহত, আহত ২ শতাধিক

কালীগঞ্জ উপজেলার কিছু দর্শনীয় স্থান

লালমনিরহাট বার্তা

প্রকাশিত: ১২ ডিসেম্বর ২০১৮  

১।সাহিত্য সাধক শেখ ফজলল করিমের বাড়ীঃ 

কালীগঞ্জ উপজেলার কাকিনা ইউনিয়নের কাকিনা মৌজায় শেখ ফজলল করিমের বাড়ী অবসিহত, যা "কবি বাড়ী' নামে বহুল পরিচিত।

 নীতিবাদী সাহিত্য সাধক শেখ ফজলল করিমের জন্ম- বাংলা ১২৮৯ সালের ৩০ চৈত্র (ইতিহাস গবেষক সমর পালের মতে ১৮৮৩ খ্রিষ্টাব্দের ১৪ এপ্রিল) সোমবার রাত্রি শেষে (মঙ্গলবার) তৎকালীন কালীগঞ্জ থানার কাকিনা গ্রামে। তাঁর মাতার নাম- কোকিলা বিবি।১৯৩৬ খ্রিষ্টাব্দের ২৮ সেপ্টেম্বর মধ্য রাতে কাকিনায় নিজ বাড়ীতে তিনি ইমেতকাল করেন। বাড়ীর সম্মুখে তাঁকে সমাহিত করা হয়। তাঁর স্মৃতিকে অম্লান করে রাখার জন্য লালমনিরহাট পৌরসভাধীন খোর্দ্দসাপটানা মৌজায় কালেক্টরেট মাঠের পূর্ব পাশে ১৯৮৫ খ্রিষ্টাব্দে প্রতিষ্ঠিত হয়- কবি শেখ ফজলল করিম শিশুনিকেতন ও বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়। একটি আদর্শ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে বিদ্যালয়টি সুখ্যাতি অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে।

২।কাকিনা জমিদারী বংশ ও জমিদার বাড়ী

 বৃহত্তর রংপুর জেলার অন্যতম জমিদারী ছিল কাকিনার জমিদার। ১৬৮৭ খ্রিস্টাব্দে মোগলদের দেয়া সনদমূলে কাকিনার জমিদারির সূচনা হয়। সে সময় ঘোড়াঘাটের মোগল ফৌজদার এবাদত খাঁ কোচ রাজা মহিন্দ্র নারায়নের সঙ্গে এক যুদ্ধে কোচ রাজ্যের ৬টি পরগনার মধ্যে কাকিনা, ফতেপুর ও কাজিরহাট দখল করে নেয়। ওই সময় দিল্লীতে মোগল সম্রাট ছিলেন আওরঙ্গজেব ও বাংলার সুবেদার ছিলেন তাঁর মামা শায়েস্তা খাঁ এবং ঘোড়াঘাটের ফৌজদার ছিলেন শায়েস্তা খাঁর ছেলে এবাদত খাঁ।

       এবাদত খাঁ পরগনা দখলের পর কোচবিহারের নাজির শত্ত নারায়নকে কর নির্ধারণ পূর্বক এর জমিদারির বন্দোবস্ত করতে অসম্মত হলে কাকিনা পরগনার প্রভাবশালী কর্মচারী রঘু রামের চার পুত্রের মধ্যে রামনারায়নকে কাকিনা জমিদারি সনদ প্রদান করেন। পরবর্তীতে রাজা রায় চৌধুরী জমিদারী  লাভ করেন। পরবর্তীতে রুদ্র রায় ও রসিক রায় হয়ে অলকা দেবী উক্ত জমিদারী প্রাপ্ত হন। অলকা দেবী অপুত্রক হওয়ায় রাম রাদ্ররায় চৌধুরীকে দত্তক গ্রহণ করেন। ১৮৮৪ সালে তৎকালীন রংপুর জেলা কালেক্টর পিটার মুর রাম রুদ্র রায় চৌধুরীকে কাকিনা জমিদার হিসাবে স্বীকৃতি প্রদান করেন। এ সময় বুকানন হ্যামিল্টন কাকিনা ভ্রমন করেন

       ১৮৪৯ সালে শম্ভুচরণ রায় চৌধুরী কাকিনার জমিদার হন। শম্ভুসাগর নামে বিরাট দিঘিটি তারই কীর্তি। ১৮৬০ সালের এপ্রিল মাসে ‘‘রঙ্গপুর প্রকাশ’’ নামে একটি সাপ্তাহিক পত্রিকা তার অর্থায়নে প্রকাশিত হয় । এটি বৃহত্তর রংপুর জেলার প্রথম পত্রিকা। এরপর তার দত্তক পুত্র মহিমা রঞ্জন রায় চৌধুরী ১৮৭৪ সালে জমিদারীর দায়িত্ব পান। মহিমা রঞ্জন প্রজা বৎসল এবং সাহিত্য-সংস্কৃতি সেবী জমিদার ছিলেন। তিনি কাকিনায় একটি বিশাল লাইব্রেরী গড়ে তোলেন। ১৯০৮ সালে বগুড়ার ‘‘উডবার্ণ’’ লাইব্রেরীটির তিনিই প্রতিষ্ঠাতা। রংপুর জেলার রেলপথ প্রসারে তার অবদান উল্লেখযোগ্য। মহেন্দ্রনগর এবং মহিমাগঞ্জ রেল স্টেশন দুটি তার পুত্র ও নিজ নামে কীর্তিকে স্মরণীয় করে রেখেছে। কাকিনায় তিনি একটি জাদুঘরও স্থাপন করেন। রংপুর সাহিত্য পরিষদের তিনি প্রথম সভাপতি (১৯০৭)।

   রংপুর শহরে কৈলাশ রঞ্জন উচ্চ বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন কাকিনার জমিদার। তাঁর ফেলে যাওয়া জমিদার বাড়ীর সামনে মহিমা রঞ্জন স্মৃতি উচ্চ বিদ্যালয়টি ‘‘হাই ইংলিশ স্কুল’’ প্রতিষ্ঠা পায় তাঁর মৃত্যুর পরপর ১৯০৯ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। যদিও এই বিদ্যালয়ের যাত্রা শুরু ১৮৫৮ সালে। জমিদারীর বিশাল ব্যাপ্তির কারণে কাকিনা জমিদারী ‘‘কাকিনা রাজবাড়ী’’ নামে পরিচিত ছিল।

 

 

– লালমনিরহাট বার্তা নিউজ ডেস্ক –