• বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৪ ১৪৩০

  • || ১৭ রমজান ১৪৪৫

আ’লীগের রাজনীতি হলো মৃত্যুভয়কে উপেক্ষা করে মানুষের পাশে দাঁড়ানো

– লালমনিরহাট বার্তা নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ৬ জুলাই ২০২০  

‘আওয়ামী লীগের রাজনীতিই হলো অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানো, তাদের সহায়তা করা। জন্মলগ্ন থেকে তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা সব সময় মৃত্যুভয়কে উপেক্ষা করে মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন। দেশ ও দলের দুর্দিনে আওয়ামী লীগের ত্যাগী ও দুর্দিনের ত্যাগী নেতাকর্মীরাই অসহায় মানুষের সামনে ঢাল হয়ে দাঁড়িয়েছেন। তবে আওয়ামী লীগেরও অনেক দুর্যোগ এসেছে, তখন সুবিধাবাদীরা পাশকাটিয়ে চলেছেন। পরবর্তীতে তারা আঁস্তাকুড়ে নিক্ষিপ্ত হয়েছেন।’

শনিবার রাত সাড়ে ৮টায় করোনাকালীন সংকট নিয়ে বিশেষ ওয়েবিনার ‘বিয়ন্ড দ্যা প্যানডেমিক’ এর নবম পর্বে বক্তারা এসব কথা বলেন । বরাবরের মতোই পর্বটি সরাসরি প্রচারিত হয় আওয়ামী লীগের অফিশিয়াল ফেসবুক পেজ এবং অফিশিয়াল ইউটিউব চ্যানেলে।

নবম পর্বের আলোচনার বিষয় ছিলো ‘করোনা সংকট মোকাবিলায় তৃণমূলের ভূমিকা’। এই সংকটে মানুষকে সচেতন করতে আওয়ামী লীগের পদক্ষেপ, করোনা চিকিৎসা নিয়ে গুজব মোকাবিলা, দলের জনপ্রতিনিধিদের জন্য আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় বার্তা, ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের পূর্বাভাস পাওয়ার পর ক্ষয়ক্ষতি কমাতে কী ধরনের পদক্ষেপ নেয়া হয়েছিল এবং পরবর্তীতে কর্মহীনদের সহায়তা নিয়ে আলোচনা করা হয়। 

ধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ব্যারিস্টার শাহ আলী ফরহাদের সঞ্চালনায় আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কৃষিবিদ আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক এ্যাডভোকেট আফজাল হোসেন, চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনে মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন, ভোলা- ৪ আসনের সংসদ সদস্য আবদুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব, কক্সবাজার-২ আসনের সংসদ সদস্য আশেক উল্লাহ রফিক, খুলনা-৬ আসনের সংসদ সদস্য আক্তারুজ্জামান বাবু এবং কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক উম্মে কুলসুম স্মৃতি এমপি।

আলোচনায় যুক্ত হয়ে বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, দেশ ও দলের দুর্দিনে আওয়ামী লীগের তৃণমূল কর্মীরা বারবার ঢাল হয়ে দাঁড়িয়েছেন। সমগ্র আন্দোলন-সংগ্রামে এই দুর্দিনের নেতাকর্মীরাই সবার আগে এগিয়ে এসেছেন। আমাদের দলীয় জনপ্রতিনিধিরা তৃণমূলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে সমন্বয় করে জনগণের পাশে থেকেছেন। এখনও আছেন। করোনামুক্ত বাংলাদেশ হওয়ার আগ পর্যন্ত আমাদের তৃণমূলের নেতাকর্মী ও জনপ্রতিনিধিরা যে কোন পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য জনগণের পাশে আছে এবং থাকবে।

দলে ঢুকে পড়া অনুপ্রবেশকারীদের সম্পর্কে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকার কারণে দলে কিছু সুবিধাবাদী লোক ঢুকে পড়েছে। সকল ক্ষেত্রে আমরা এদের ঢোকার পথ বন্ধ করতে পারিনি, এটা সত্য। তবে এদের দল থেকে বের করে দেয়ার প্রক্রিয়া চলমান। তিনি বলেন, এই করোনা দুর্যোগেও কিন্তু আমাদের নেতাকর্মী চেনার সুযোগ করে দিয়েছে যে, কারা জনগণের পাশে আছে। আওয়ামী লীগের ত্যাগী ও দুর্দিনের নেতা-কর্মীরাই মৃত্যুভয়কে উপেক্ষা করে মানুষের পাশে আছেন। আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ নেতা মোহাম্মদ নাসিম মানুষের পাশে দাঁড়াতে গিয়েই করোনা আক্রান্ত হয়ে শহীদ হয়েছেন। দলের অনেক নেতাকর্মী জীবন দিয়ে প্রমাণ করেছেন তারা দুর্যোগ-দুর্বিপাকে মানুষের পাশে আছেন। কিন্তু যারা সুবিধাভোগী তাদের অনেককেই এখন আর খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।

সাংগঠনিক সম্পাদক আফজাল হোসেন বলেন, একজন সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে আমার সাংগঠনিক এলাকার উপজেলা ইউনিয়নের নেতা কর্মীদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছি। আমাদের তৃণমূলের নেতাকর্মীরা ব্যক্তিগত উদ্যোগে মানুষের ঘরে ঘরে খাদ্য সহায়তা পৌঁছে দিয়েছে এবং এখনও দিচ্ছে। এছাড়া আমাদের সকল স্তরের জনপ্রতিনিধিরা নিজস্ব এলাকায় সরকারী ও ব্যক্তিগর উদ্যোগ মিলিয়ে মানুষের পাশে থেকেছেন। আমরা কেন্দ্র থেকে সবকিছু সার্বক্ষণিক মনিটরিং করছি।

মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন বলেন, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ও চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে আমি দায়িত্ব পালন করছি। স্বাভাবিক কারণে আমার ওপর নির্ভর করে দলের ভাবমূর্তি। দলের গ্রহণযোগ্যতা এবং পাশাপাশি সরকারের একটা ভাবমূর্তিও নির্ভর করে। সেই কারণে আমি প্রথম থেকেই গুরুত্ব ও অগ্রাধিকার দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চট্টগ্রামের রাজপথে, ৪১টি ওয়ার্ডের এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্তে ছুঁটে গিয়েছি, এখনও যাচ্ছি।

ভোলা-৪ আসনের এমপি আবদুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব বলেন, এই দুর্যোগে যেভাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিয়মিত দ্বীপ জেলা ভোলাবাসীর খোঁজ নিয়েছেন, আমি তার নিকট ভোলা-৪ আসনের জনগণের পক্ষ থেকে কৃতজ্ঞতা জানাই। করোনা সংকটের এই মহামারিতে ডাক্তাররা কাজ করে যাচ্ছেন, আমি তাদের প্রতি শ্রদ্ধা রাখছি। আমরা অনেক দুর্যোগ দেখেছি, কিন্তু করোনার মত নতুন দুর্যোগ এইবারই প্রথম। নতুন এই দুর্যোগ মোকাবিলায় আমরা একেবারে প্রস্তুত ছিলাম না। কিন্তু শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এই সংকট মোকাবিলায় আমরা কাজ করছি।  

খুলনা-৬ আসনের এমপি আক্তারুজ্জামান বাবু বলেন, বাংলাদেশের সর্ব দক্ষিণের জনপদ পাইকগাছা কয়রায় করোনা শনাক্ত হওয়ার পর থেকে আমরা কাজ করেছি। এই করোনার সময়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে আমার দুই উপজেলার নেতাদের নিয়ে কাজ করে যাচ্ছি। আমরা মসজিদের ইমাম, মোয়াজ্জিনসহ মন্দিরে সহায়তা পৌঁছে দিয়েছি। 

কক্সবাজার- ২ আসনের এমপি আশেক উল্লাহ রফিক বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসার পরেই উপকূলে সিসি ব্লকের কাজ করা হয়। আম্ফানে ক্ষতিগ্রস্থ বেড়িবাঁধ আমরা এরইমধ্যে নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছি। করোনা মোকাবিলায় আমরা একে অপরের কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করেছি। শেখ হাসিনার নির্দেশে আমাদের প্রত্যেক নেতা-কর্মী তৃণমূলের মানুষদের পাশে ছিলাম। 

বাংলাদেশ কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক উম্মে কুলসুম স্মৃতি বলেন, কৃষকদের পাশে আমরা সব সময় আছি এবং থাকবো। ১৯৮৪ সালের পর থেকে এখন পর্যন্ত বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি চলমান রেখেছে বাংলাদেশ কৃষক লীগসহ অন্যান্য সহযোগী সংগঠন। সারাদেশে মুজিববর্ষে এক কোটি গাছ লাগাবে বাংলাদেশ কৃষক লীগ। করোনার এই মহামারির সময়ে ২৫ হাজার ৫৩৩ শতক জমির ধান আমাদের কৃষকলীগের নেতা-কর্মীদের সাহায্যে কাটা হয়। পাশাপাশি ধানকাটা থেকে শুরু করে ধান ক্রয়ে সাহায্য করেছে আমাদের নেতা-কর্মীরা। আমার নির্বাচনী এলাকা গাইবান্ধার পলাশবাড়ী এবং সাদুল্লাপুরে আমি নিয়মিত ভিজিট করেছি। 

এর আগে বিয়ন্ড দ্যা প্যান্ডেমিকের আটটি পর্ব অনুষ্ঠিত হয়েছে। সর্বশেষ পর্বটি প্রচারিত হয়েছে গত ৩০ জুন। এই পর্বে আলোচকরা করোনা পরবর্তী বাংলাদেশের তরুণদের মধ্যে শিক্ষা ও দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য নতুন ভাবনা নিয়ে আলোচনা করেছেন। শিক্ষামন্ত্রী ডা. দিপু মনি এবং শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী ছিলেন এই অনুষ্ঠানের অন্যতম আলোচক।

– লালমনিরহাট বার্তা নিউজ ডেস্ক –