আলমিরাতে শিক্ষার্থীকে আটকে রাখার অভিযোগে গ্রামবাসীর আন্দোলন

লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার পাটগ্রাম ইউনিয়নের ১ নং ঘোনাবাড়ী সরকারি প্রাথমিক বালিকা বিদ্যালয়ের মামুন ইসলাম নামে চতুর্থ শ্রেণির এক ছাত্রকে স্কুলের আলমিরার ভেতরে ঢুকিয়ে রাখার অভিযোগে স্কুলে তালা ঝুলিয়ে দিয়ে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের বিচারের দাবীতে অভিভাবক ও গ্রামবাসী শিক্ষার্থীদের নিয়ে সড়ক অবরোধ ও মানববন্ধন করেছে। বুধবার এই ঘটনা ঘটে। 

এই ঘটনার খবর পেয়ে পাটগ্রাম উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রুহুল আমীন বাবুল, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মশিউর রহমান ও সহকারী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা বুলবুল আহম্মেদ খান ঘটনাস্থলে ছুটে গিয়ে সুষ্ঠু বিচারে আশ্বাসে অবরোধ প্রত্যাহার এবং স্কুলের তালা খুলে দেন। 

পাটগ্রাম উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে,  মঙ্গলবার দুপুরের পর ওই বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের নির্দেশে অফিস সহায়ক মামুন ইসলাম নামে এক ছাত্রকে দুষ্ঠুমি করার অভিযোগে স্কুলের আলমিরাতে ঢুকে রাখা হয়। পরে প্রায় দুই থেকে তিন ঘন্টা পর তাকে আলমিরা থেকে বেড় করা হলে ওই শিক্ষার্থী অসুস্থ্য হয়ে পড়ে। পরবর্তীতে তাকে মাথায় পানি ঢেলে সুস্থ্য করে বাড়ীতে পাঠানো হয়। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে স্থানীয় অভিভাবকরা পাটগ্রাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে বিষয়টি সরসারি অবহিত করে বিচার দাবী করেন। কিন্তু ইউএনও এই বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ না নেওয়ায় বুধবার সকালে স্কুলে তালা লাগিয়ে দিয়ে স্থানীয় অভিভাবক ও গ্রামবাসী ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নিয়ে আউলিয়ারহাট-পাটগ্রাম সড়ক অবরোধ করে মানববন্ধন করে। খবর পেয়ে সকাল ১১টায় পাটগ্রাম উপজেলা চেয়ারম্যান রুহুল আমীন বাবুল, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মশিউর রহমান ও সহকারী উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বুলবুল আহমেদ খাঁন ঘটনাস্থলে গেলে পরিস্থিতি আরো উত্তেজিত হয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে পাটগ্রাম উপজেলা চেয়ারম্যান রুহুল আমীন বাবুল ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মশিউর রহমান উত্তেজিত জনতাকে সুষ্ঠু বিচারের আশ্বাস দিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেন এবং বিদ্যালয়ের তালা খুলে দেওয়ার ব্যবস্থা করেন। 

জানতে চাইলে পাটগ্রাম উপজেলার সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার বুলবুল আহমেদ খাঁন বলেন, ‘ওই বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের বিষয়ে তদন্ত কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত হয়েছে। এছাড়া ইতোমধ্যে শোকজের চিঠি করা হয়েছে। ১৩ ফেব্রুয়ারি তাকে পাঠানো হবে।’ 

পাটগ্রাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মশিউর রহমান বলেন, ‘বিষয়টি অত্যন্ত দুঃখজনক ঘটনা। উপজেলা চেয়ারম্যান মহোদয় ও আমরা গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে স্কুলের তালা খুলে দিয়েছি। গ্রামবাসীকে সুষ্ঠু বিচারের আশ্বাসে শান্ত করা হয়েছে। এখন তদন্ত কমিটি গঠন করে পরবর্তী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

১ নং ঘোনাবাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ইকবাল রাবেয়া লারা মনির সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ না করায় বক্তব্য পাওয়া যায়নি। 

তবে ওই বিদ্যালয়ের দপ্তরি কাম অফিস সহায়ক ফিরোজ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে এক ভিডিও বার্তায় বলেন, ‘মানিক নামে এক ছাত্রকে মারধর করেছে মামুন। প্রধান শিক্ষকের নির্দেশে মামুন নামের ওই শিক্ষার্থীকে আলমিরাতে দুই-তিন মিনিট ঢুকে রাখে। পরে তাকে সেখান থেকে বেড় করা হয়। কিন্তু মামুনের মাথা ঘুরছে বলে জানালে তাকে মাথায় পানি দিয়ে সুস্থ্য করে বাড়ীতে পাঠিয়ে দেই। কিন্তু বিষয়টিকে একটু বাড়াবাড়ি করা হচ্ছে।’