• শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১২ ১৪৩১

  • || ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

সর্বশেষ:
ছয়দিনের সফরে ব্যাংককে পৌঁছেছেন প্রধানমন্ত্রী গরমে ‘অতি উচ্চ ঝুঁকিতে’ বাংলাদেশের শিশুরা: ইউনিসেফ গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা: বেরোবি কেন্দ্রের পরীক্ষার্থী ৩১ হাজার ৯৪৬ জন বাংলাদেশ-ভারত ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করবে: ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী কাতারের আমিরের সফরে যা পেল বাংলাদেশ

হাজার মাসের চেয়েও শ্রেষ্ঠ রাত লাইলাতুল কদর যেভাবে পাবেন 

– লালমনিরহাট বার্তা নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ১২ এপ্রিল ২০২২  

লাইলাতুল কদর (আরবি: لیلة القدر‎‎) এর অর্থ হল, অতিশয় সম্মানিত ও মহিমান্বিত রাত বা পবিত্র রজনী। আরবি ভাষায় ‘লাইলাতুন’ অর্থ হলো রাত্রি বা রজনী এবং ‘কদর’ শব্দের অর্থ সম্মান, মর্যাদা, মহাসম্মান। এ ছাড়া এর অন্য অর্থ হলো- ভাগ্য, পরিমাণ ও তাকদির নির্ধারণ করা।

রমজানের তৃতীয় ভাগ বা শেষ দশকের তাৎপর্য অপরিসীম। নবীজি (সা.) এবং তার সাহাবিরা এই সময়কে খুব গুরুত্ব দিতেন। রমজানের অন্যান্য দিনে যেই আমলগুলো করতেন, শেষ দশকে এসে তার পরিমাণ অনেক বেড়ে যেত।

হযরত আয়েশা (রা.) বলেন, রমজানের শেষ দশকে নবীজি (সা.) ইবাদতের জন্য লুঙ্গি শক্ত করে বেঁধে ফেলতেন। অর্থাৎ ইবাদতের জন্য পরিপূর্ণ প্রস্তুতি গ্রহণ করতেন। সারা রাত জাগ্রত থেকে ইবাদত করতেন এবং স্বীয় পরিবার-পরিজনকে জাগিয়ে দিতেন। (সহিহ বুখারি ও মুসলিম)

রমজানের শেষ দশক এত গুরুত্বপূর্ণ হওয়ার মূল কারণ হল, লাইলাতুল কদর বা হাজার মাসের চেয়েও শ্রেষ্ঠ রাতের কারণে।

আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘নিশ্চয়ই আমি এটি (কুরআন) নাজিল করেছি লাইলাতুল কদরে। তোমাকে কীসে জানাবে লাইলাতুল কদর কী? লাইলাতুল কদর হাজার মাসের চেয়েও শ্রেষ্ঠ। এ রাতে ফেরেশতারা ও রূহ (জিবরাইল) তাদের রবের অনুমতিক্রমে সকল সিদ্ধান্ত নিয়ে অবতরণ করেন। শান্তিময় সে রাত ফজরের সূচনা পর্যন্ত। (সূরা কদর: ১-৫)

মুসলিম বিশ্বাস অনুসারে কদরের রাতে মানুষের ভাগ্য নির্ধারণ করা হয় এবং এ রাতে কোনো আমল করলে তার সওয়াব অনেক অনেক গুণ বৃদ্ধি করে দেয়া হয়। তাই এর গুরুত্ব ও তাৎপর্য রমজানের অন্যান্য দিনগুলো থেকে একটু ব্যতিক্রম। অনেক বেশি।

হাদিসে আছে, নবীজি (সা.) নির্দেশ দিয়েছেন, “তোমরা রমজানের শেষ দশকে লাইলাতুল-কদর খোঁজ করো”। (বুখারী শরীফ: ২০২০)

অন্য বর্ণনায় আরও স্পষ্ট করে বলেছেন, “তোমরা রমজানের শেষ দশকের বে-জোড় রাতগুলোতে লাইলাতুলকদর তালাশ করো”। (বুখারী শরীফ: ২০১৭)

একারণেই রমজানের শেষ দশকে ইতিকাফ করার বিধান দেয়া হয়েছে। এর মাধ্যমে কদরের রাত পাওয়াটা নিশ্চিত হয়।

ইতিকাফ হলো সকল কাজ থেকে মুক্ত হয়ে আল্লাহ তায়ালার ইবাদতের জন্য মসজিদে অবস্থান করা। এর পারিভাষিক সংজ্ঞায় বলা হয়, আল্লাহ তায়ালার নৈকট্য লাভের উদ্দেশ্যে একটি নির্দিষ্ট সময় মসজিদে অবস্থান করা।

হযরত আয়েশা (রা.) বলেন, নবীজি (সা.) রমজানের শেষ দশকে মসজিদে ইতিকাফ করতেন। যতদিন না আল্লাহ তাকে মৃত্যু দান করেছেন ততদিন তিনি এ আমল অব্যাহত রেখেছিলেন। তার ইন্তেকালের পর তার স্ত্রী-গণ ইতিকাফ করেছেন। (বোখারি)

ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত নবীজি (সা.) বলেছেন, ইতিকাফকারী যাবতীয় গোনাহ থেকে মুক্ত থাকেন এবং তার জন্য ওই পরিমাণ নেকি লেখা হয়, যে পরিমাণ আমলকারীর জন্য লেখা হয়ে থাকে। (মিশকাত, হাদিস নং: ২০০৪)

আয়েশা (রা.) বলেন, রমজানে নবীজি (সা.)-এর দান সদকা করার ব্যাপারে উৎসাহ উদ্দীপনা অনেক বেড়ে যেত। তিনি রমজান মাসকে শাহরুল মুয়াসাত তথা সহানুভূতির মাস বলে ঘোষণা করেছেন। তাই আমাদের গ্রাম বা আত্মীয় স্বজনদের মধ্যে যারা অভাবগ্রস্থ আছেন, নববি শিক্ষা গ্রহণ করে আমরা তাদের পাশে দাঁড়াতে পারি। 

কুরআন তিলাওয়াত, অধিক পরিমাণে জিকির, বেশি বেশি নফল নামাজ এবং কাকুতি মিনতি করে দুআ করার মাধ্যমে আমরা রমজানের বাকি দিনগুলো যাপন করতে পারি।

– লালমনিরহাট বার্তা নিউজ ডেস্ক –