‘আ মরি বাংলা ভাষা’
বাংলাদেশ মানে বাঙালি, বাঙালি মানে বাংলা ভাষা, বাংলা ভাষা মানে ‘একুশ’ আর একুশ মানেই ‘মাথা নত না করা’। মূলত অমর ‘একুশ’-এর সূত্র ধরেই বাংলাদেশ নামক স্বাধীন-সার্বভৌম রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করে বীর বাঙালি। এই বীরের জাতির প্রকৃত ভিত্তিসূত্র হলো ‘বাংলা ভাষা’।
ভাষা, সংস্কৃতি, ইতিহাস ও ঐতিহ্যে অমিল থাকার পরও কেবলমাত্র ধর্মের দোহাই দিয়ে ১২০০ মাইল ব্যবধানের দুইটি পৃথক ভূখণ্ডকে এক করে পাকিস্তান নামক রাষ্ট্রের জন্ম হয়। সমগ্র পাকিস্তানে ৫৬ শতাংশ মানুষের ভাষা ছিল বাংলা; অন্যদিকে ৭.২ শতাংশ মানুষ কথা বলতো উর্দুতে। সেই উর্দুকেই রাষ্ট্রভাষা করার জন্য নীলনকশা শুরু করে পাকিস্তানের শাসকগোষ্ঠী! কিন্তু বাঙালি জাতি তা হতে দেয়নি। বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে শুরু হয় মিছিল-মিটিং-বিক্ষোভ-সংগ্রাম।
১৯৪৮ সালের ১৬ মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলায় ভাষা আন্দোলনকে বেগবান করার লক্ষ্যে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে এক সাধারণ ছাত্রসভা অনুষ্ঠিত হয়। বাংলা ভাষার আন্দোলন একটি গণ-আন্দোলন হিসাবে ছড়িয়ে পড়ে সমগ্র পূর্ববাংলায়। জনসভা, মিছিল আর স্লোগানে সমগ্র বাংলার মাটি প্রকম্পিত হয়ে ওঠে! রাস্তায়, দেওয়ালে দেওয়ালে পোস্টারে ছেয়ে যায়—‘রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই’। ২১ মার্চ মোহাম্মদ আলি জিন্নাহ রেসকোর্স ময়দানের সমাবেশে ঘোষণা করেন, ‘Let me make it very clear to you that the state language of Pakistan is going to be Urdu and no other language. Anyone who tries to mislead you is really the enemy of Pakistan….Therefore, so far as the state language is concerned, Pakistan’s shall be Urdu.’ শেখ মুজিবুর রহমান ও তাঁর নেতৃত্বে উপস্থিত ছাত্র-জনতা এই বক্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ জানান। আন্দোলন দানা বাঁধে। ক্ষোভ-বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে ওঠে বাংলার জমিন।
বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার প্রশ্নে পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর অনড় সিদ্ধান্তের প্রেক্ষাপটে বাংলায় আন্দোলন-সংগ্রাম চলতেই থাকে। এরই ধারাবাহিকতায় আন্দোলন দমনে ১৯৫২ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি ১৪৪ ধারা জারি করে পাকিস্তান সরকার। রাতভর বিভিন্ন হল ও ছাত্রাবাসে চলে ১৪৪ ধারা ভাঙার প্রস্তুতিমূলক সভা। ২১ ফেব্রুয়ারি ছাত্ররা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আমতলায় সমবেত হয়ে মিছিলে অংশগ্রহণ করেন। ২১ ফেব্রুয়ারি ও ২২ ফেব্রুয়ারি পুলিশের গুলিতে শহিদ হন সালাম, বরকত, রফিক, জব্বার, শফিউর, আব্দুস সালাম, অলিউল্লাহ প্রমুখ। বহু নেতাকর্মী পুলিশি নির্যাতনের শিকার হন। প্রতিবাদে সারা বাংলায় বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। এরপর বাধ্য হয়ে বাংলাকে রাষ্ট্রভাষার স্বীকৃতি দেয় পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী।
উল্লেখ করতেই হয়, বাঙালির রক্তে মুক্তির চেতনা জাগিয়ে তোলে ‘বাংলা ভাষার বিজয়’। পরবর্তী সময়গুলোতে পাকিস্তানি শোষকরা যখনই বাঙালির ওপর দমনপীড়ন চালিয়েছে, তার জবাবে রুখে দাঁড়িয়েছে বাঙালিরা। ৫৪-এর যুক্তফ্রন্ট নির্বাচনে বিজয় লাভ, ৫৮-এর সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে দুর্বার আন্দোলন করে রুখে দাঁড়ানো, ৬২-এর শিক্ষা আন্দোলনে তীব্র প্রতিরোধ গড়ে তোলা কিংবা ৬৬-এর ‘মুক্তির সনদ’, ৬৯-এর রক্তলাল সংগ্রাম ও ৭০-এর নির্বাচনে ভূমিধস বিজয়—চূড়ান্ত মুক্তিলাভের এই সিঁড়িগুলো পার হতে বাঙালিকে শক্তি জুগিয়েছে ’৫২-এর ভাষা আন্দোলনে সফলতা এবং এই ৫২-এর শক্তিতে বলীয়ান বাঙালি জাতি অস্ত্র হাতে তুলে নেয় ’৭১-এর রণাঙ্গনে। যে জাতি মায়ের ভাষাকে রক্ষার জন্য বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দিতে পারে হাসতে হাসতে, দেশমাতৃকাকে রক্ষার প্রশ্নে সে জাতি কতটা বুক চিতিয়ে লড়াই করে যেতে পারে, ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর তা দেখেছে গোটা বিশ্ব। এরপর আর ‘বাঙালি জাতি’কে নতুন করে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার দরকার পড়েনি বিশ্বমঞ্চে। বিশ্ব অঙ্গন বাঙালি ও বাংলাদেশকে আজ চেনে খুব ভালোমতো।
স্বাধীন বাংলাদেশে ১৯৭২ সালের ১৬ ডিসেম্বর সংবিধান প্রণীত হয়। এটি ছিল পৃথিবীর ইতিহাসে প্রথম বাংলা ভাষায় প্রণীত সংবিধান। বাংলা ভাষার পরিচয়-আখ্যানে নতুন পালক যুক্ত হয় ১৯৭৪ সালে। সে বছর ২৫ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘে বাংলায় ভাষণ দিয়ে এক অনন্য নজির স্থাপন করেন বঙ্গবন্ধু। জাতিসংঘের তথা, বিশ্বমঞ্চের মাইক্রোফোনে বাংলার সেই উচ্চারণ ইতিহাসের পাতায় স্বর্ণাক্ষরে লেখা হয়ে যায়। বিশ্বসভায় বাংলাকে এর আগে কেউ এভাবে তুলে ধরেননি। জাতির পিতার পদাঙ্ক অনুসরণ করে বাংলার মর্যাদা বিশ্বে সুপ্রতিষ্ঠিত, সমুন্নত করেন তাঁরই সুযোগ্যকন্যা আধুনিক বাংলাদেশের রূপকার মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা। তিনি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করে ১৯৯৬ সালের ২৪ অক্টোবর জাতিসংঘের ৫১তম অধিবেশনে প্রথম বাংলায় বক্তব্য দেন। এরপর থেকে তিনি প্রতি বছর জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনের সভা-কর্মসূচিতে বাংলায় বক্তব্য প্রদান করে আসছেন। বিশ্বে বাংলা ভাষার এই মহিমা নজর কাড়ে বিশ্ব নেতৃত্বের। ১৯৯৯ সালের ১৭ নভেম্বর ইউনেসকো ২১ ফেব্রুয়ারিকে ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ ঘোষণা করে। এই মর্যাদাপূর্ণ স্বীকৃতির মধ্য দিয়ে বাংলা ভাষার কপোত খুঁটি প্রথিত হয় মহাবিশ্বের মাটিতে।
বর্তমানে ২১ ফেব্রুয়ারি ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ হিসেবে জাতিসংঘ সদস্যভুক্ত রাষ্ট্রে পালিত হয়—চাট্টিখানি কথা! বিশ্বের প্রায় ৩০ কোটি মানুষের প্রথম ভাষা বা মাতৃভাষা বাংলাকে জাতিসংঘের দাপ্তরিক ভাষামাধ্যম হিসেবেও বিবেচনা করা হচ্ছে। এই সংবাদ আমাদের পথচলায় সাহস দেয়, জোগায় অফুরাণ প্রেরণা। আজ পৃথিবীর বহু দেশে বাংলা ভাষার অনুশীলন হচ্ছে। তথ্যপ্রযুক্তিতেও বাংলার ব্যবহার বেড়ছে ব্যাপকভাবে। বাংলা ভাষায় তৈরি হয়েছে, হচ্ছে নানা রকম অ্যাপ্লিকেশন সফটওয়ার, অ্যাপস। সত্যিই, প্রাণের বাংলা ভাষার দুর্বার গতিতে এগিয়ে চলার এই দৃশ্য আমাদেরকে গর্বিত, আপ্লুত করে।
১০ জানুয়ারি ১৯৭২ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জাতির উদ্দেশে এক ভাষণে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বলেছিলেন, ‘...ফাঁসির মঞ্চে যাওয়ার সময় আমি বলব, আমি বাঙালি, বাংলা আমার দেশ, বাংলা আমার ভাষা। জয় বাংলা।’ সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালির কণ্ঠে কণ্ঠ মিলিয়ে বলতে হয়—আহ! আ মরি বাংলা ভাষা।
লেখক: আব্দুল্লাহ্ আল-মামুন
পুলিশ সুপার, চুয়াডাঙ্গা
- আইপিএলে পান্ডিয়াদের বিরুদ্ধে জোচ্চুরির অভিযোগ!
- শাবনূরের বিকল্প নেই: ডিপজল
- অপবিত্র জায়গায় আল্লাহর নাম উচ্চারণ করা, শরিয়ত কী বলে?
- টেকসই কৃষি ব্যবস্থা প্রচলনে সরকার কাজ করছে: স্পিকার
- প্রত্যেকের উচিত প্রধানমন্ত্রীকে সহায়তা করা: গণপূর্তমন্ত্রী
- সড়কে দুর্ঘটনা রোধে প্রতিদিন মোবাইল কোর্ট পরিচালনার নির্দেশ
- গাজায় নিহতের সংখ্যা ৩৪ হাজার ছাড়িয়েছে
- দেশে তিনদিনের হিট অ্যালার্ট জারি
- গরম আরো বাড়ার শঙ্কা
- প্রধানমন্ত্রী ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ গড়ার কাজ শুরু করেছেন: অর্থমন্ত্রী
- নিষিদ্ধ যানে সড়কে মৃত্যুর মিছিল
- মে মাসে ৪৪ ডিগ্রি পৌঁছাবে তাপমাত্রা
- সম্মানী বাড়ছে বীর মুক্তিযোদ্ধা ও শহিদ পরিবারের
- প্রচণ্ড গরমে হাঁসফাঁস, আগামী দুদিন যেমন যাবে আবহাওয়া
- ‘শেখ হাসিনা সব প্রতিবন্ধকতা উপড়ে ফেলে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন’
- লালমনিরহাটে বাংলাদেশ কৃষকলীগের ৫২ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পালন
- ইসরায়েলের হামলাকে স্বীকার করছে না ইরান
- তীব্র তাপদাহেও যেভাবে ঘর থাকবে কনকনে ঠান্ডা
- বিএনপি পথহারা পথিক: ওবায়দুল কাদের
- আওয়ামী লীগ প্রতিশোধপরায়ণ হয়ে কিছু করেনি: প্রধানমন্ত্রী
- মারা গেছেন জাতীয় পতাকার নকশাকার মুক্তিযোদ্ধা শিব নারায়ণ দাস
- আইপিএল থেকে চাইলেও যে কারণে যেতে পারেননি বাংলাদেশি এক ক্রিকেটার
- জুম্মাবার ও নামাজের গুরুত্ব
- শিল্পী সমিতির নির্বাচনে এফডিসিতে নিরাপত্তা জোরদার
- বিজিপির আরো ১৩ সদস্য আশ্রয় নিলো বাংলাদেশে
- সড়কে দুর্ঘটনা রোধে প্রতিদিন মোবাইল কোর্ট পরিচালনার নির্দেশ
- তীব্র গরমের মধ্যেই ধেয়ে আসছে ঝড়-শিলাবৃষ্টি
- ইসরায়েলের হামলার পর প্রধান দুটি বিমানবন্দরে ফ্লাইট চলাচল শুরু
- ইসরায়েল পাল্টা হামলা চালিয়েছে ইরানে
- দ্রুত শিক্ষকদের শূন্য পদ পূরণের সুপারিশ
- ‘সোনার বাংলা বিনির্মাণে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে’
- ভ্যানামি চিংড়ির পোনা আমদানির অনুমোদন দিল সরকার
- লালমনিরহাট জেলা সমিতি রংপুরের উদ্যোগে ইফতার ও মতবিনিময়
- ইসরায়েলের এই বর্বরতা মেনে নেয়া যায় না: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
- গাজায় হত্যাকাণ্ড বন্ধে পদক্ষেপ না নেয়া দুঃখজনক: প্রধানমন্ত্রী
- বাসভাড়া বাড়ানোর বিষয়ে যা বললেন শাজাহান খান
- আইকনিক লিডার এখন কুন্তলা চৌধুরী
- বুয়েটকে জঙ্গিবাদের আখড়া বানানো যাবে না: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
- ঈদের আগেই জিম্মি নাবিকদের মুক্ত করা নিয়ে যা জানা গেল
- বাড়তি ভাড়া চেয়ে হয়রানি করলেই ব্যবস্থা: আইজিপি
- ইসরায়েলি আগ্রাসনে ২৪ হাজারের বেশি নারী ও শিশু নিহত
- বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবসে ব্রুনাইয়ের সুলতানের শুভেচ্ছা বার্তা
- বেরোবি উপাচার্যের নামে ভুয়া ই-মেইল, থানায় জিডি
- লালমনিরহাট জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে শ্যামল জয়ী
- এপ্রিলে বাংলাদেশে আসছেন কাতারের আমির
- স্বাধীনতা দিবসে স্মৃতিসৌধে রাষ্ট্রপতি-প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা
- হাতীবান্ধায় মাদক ব্যবসায় বাঁধা দেয়ায় স্ত্রীকে মারধর
- বিশ্ব অটিজম সচেতনতা দিবস আজ
- ঈদ: সাড়ে ৮ ঘণ্টায় ট্রেনের ৩৫ হাজার টিকিট বিক্রি
- টিকিট কালোবাজারি বন্ধে জিরো টলারেন্স: রেলমন্ত্রী