মহাবিজয়ের মহানায়ক
কামাল চৌধুরী
এ রকম সময়ে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর পূর্বাঞ্চলীয় কমান্ডের প্রধান আমির আবদুল্লাহ খান নিয়াজি আত্মসমর্পণ দলিলে স্বাক্ষর করেন। রেসকোর্স ময়দানের সেই সময়টা বাংলার আকাশের রং বদলে দিয়েছিল।
হাজার বছরেরও বেশি সময়ের পরাধীনতার শৃঙ্খল ভেঙে সীমাহীন ত্যাগ আর ৯ মাসব্যাপী রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে সেদিন অর্জিত হয়েছিল বাঙালির বিজয়। ভারতীয় পূর্বাঞ্চলীয় কমান্ডের প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল অরোরা মুক্তিবাহিনী এবং মিত্রবাহিনীর পক্ষে পাকিস্তানি বাহিনীর সেই আত্মসমর্পণ দলিলে স্বাক্ষর করেন।
এই ছবিটা আজও বিজয়ের উজ্জ্বল সাক্ষী হয়ে আছে আমাদের ইতিহাসে।মুক্তিকামী প্রতিটি বাঙালির জন্য এটি ছিল শ্রেষ্ঠতম মুহূর্ত। আমরা সেদিন রক্তস্নাত একটি বিজয়ের পতাকা বাংলার আকাশে ওড়াতে সক্ষম হয়েছি। আকাশ-বাতাস প্রকম্পিত করে এ বিজয়ের মহানায়ক একজন। তিনি আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।
মুক্তিযুদ্ধকালে বঙ্গবন্ধু পাকিস্তানের কারাগারে বন্দি ছিলেন। প্রতি মুহূর্তে মৃত্যুর প্রহর গুনেছেন। তাকে হত্যা করার জন্য ইয়াহিয়া বিচারের নামে প্রহসন করেছে। কারাবন্দিদেরকে দিয়ে মিয়ানওয়ালী কারাগারে তাকে হত্যা করার চেষ্টাও হয়েছে। আমাদের মুক্তিযুদ্ধের সেই কঠিন সময়গুলোতে যখন বঙ্গবন্ধুর ভাগ্য অনিশ্চিত তখন অন্নদাশঙ্কর রায় তার বিখ্যাত—‘যতকাল রবে পদ্মা যমুনা/ গৌরী মেঘনা বহমান/ ততকাল রবে কীর্তি তোমার/ শেখ মুজিবুর রহমান।/ দিকে দিকে আজ অশ্রুগঙ্গা/ রক্তগঙ্গা বহমান/ তবু নাই ভয় হবে হবে জয়/ জয় মুজিবর রহমান।’ কবিতাটি রচনা করেন। সেটি তিনি রচনা করেছিলেন ১৯৭১ সালের জুলাই মাসে। তারও আগে একাত্তরের ৭ মার্চের সেই অগ্নিগর্ভ ভাষণে উজ্জীবিত হয়ে ১৬ মার্চ কবি জসীমউদ্দীন বঙ্গবন্ধুকে তুলনা করেছিলেন ভিসুভিয়াসের সঙ্গে।
মুক্তিযুদ্ধ শুরু হওয়ার পরে মুক্তিযোদ্ধাদের অস্ত্রের হুংকারে আমরা দেখি তার সেই অমর ভাষণের প্রতিধ্বনি। বিশ্বসভায় তিনি পরিণত হয়েছেন ‘পোয়েট অব পলিটিক্স’ হিসেবে। এপ্রিল মাসে ‘নিউজ উইক’ পত্রিকা তাকে আখ্যা দিয়েছিল ‘রাজনীতির কবি’ নামে। বস্ত্তত পদ্মা-যমুনার জলস্রোত ও ভিসুভিয়াসের অগ্নি উদ্গীরণ আর একটি জাতির স্বপ্ন এবং আকাঙ্ক্ষাকে ধারণ করার এই বহুমাত্রিক বৈশিষ্ট্য বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বকে বিশেষ বৈশিষ্ট্যমণ্ডিত করেছে। সে কারণেই বাঙালির ইতিহাসে বহু বিখ্যাত নেতার উপস্থিতি সত্ত্বেও শেখ মুজিব ছিলেন আলাদা ও স্বতন্ত্র। তিনি সত্যিকার অর্থেই বাঙালির চিরকালের প্রতীক মানুষ।
মুক্তিযুদ্ধের সেই দিনগুলো খুব সহজ ছিল না। একটি প্রশিক্ষিত শক্তিশালী সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে গ্রাম-গঞ্জের সাধারণ মানুষ তাদের প্রাণপ্রিয় নেতার আহ্বানে মরণপণ যুদ্ধে অবতীর্ণ হয়েছিল। পৃথিবীর ইতিহাসে জাতীয়তাবাদী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করেছেন, এই উপমহাদেশেও আমরা এরকম উদাহরণ দেখি। কিন্তু বঙ্গবন্ধু সম্ভবত এক্ষেত্রে উজ্জ্বলতম ব্যতিক্রম। তিনি বাঙালি জাতিকে নেতৃত্ব দিয়েছেন তাদেরই একজন হিসেবে। কিন্তু এই নেতৃত্ব শুধু অন্যদিকে বৈষম্যের বিরুদ্ধে লড়াই। আর এই দুই মিলে লড়াইটা পরিণত হয়েছিল ধর্ম-বর্ণ-নির্বিশেষে সাধারণ মানুষের অসাম্প্রদায়িক চেতনায় উদ্বুদ্ধ মানবিক এক লড়াই।
মুক্তির যে অন্বেষা বঙ্গবন্ধু সারাটা জীবন লালন করেছেন তার মূলে ছিল বাংলার দুঃখী মানুষের মুখে হাসি রাজনৈতিক আন্দোলন-সংগ্রাম এবং বক্তৃতায় সেই স্বপ্ন উঠে এসেছে বারবার। ৭ মার্চের ভাষণে যখন তিনি অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দিচ্ছেন তখন তার নির্দেশনার মধ্যেও ছিল ‘গরিবের যাতে কষ্ট না হয়’।
এইভাবে তার স্বপ্ন ও সংগ্রাম ছিল দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটানোর মাধ্যমে শান্তি প্রতিষ্ঠা করা। কারণ শান্তি প্রতিষ্ঠায় এনে দিয়েছেন কাঙ্ক্ষিত বিজয়। সেই দিনগুলোতে অনেকেই ভাবতে পারেননি যে, বাংলাদেশ খুব অল্প সময়ে বিশ্বের মানচিত্রে নতুন রাষ্ট্র হিসেবে আবির্ভূত হবে। বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য সহযোগী জাতীয় চার নেতা এবং অন্যান্য ব্যক্তি অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে বঙ্গবন্ধুর সেই স্বপ্ন ও চেতনাকে ধারণ করেছেন এবং বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতা ঘোষণার পর পরিচালনা করেছেন মুক্তিযুদ্ধ। তাদের হৃদয়ে সার্বক্ষণিক অনুপ্রেরণা ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব।
অন্যদিকে স্বজন হারানোর শোক। দুই. মিলেমিশে আনন্দ ও বেদনার এক মিশ্র অনুভূতি ছড়িয়ে ছিল সর্বত্র। সর্বোপরি বঙ্গবন্ধু ছিলেন পাকিস্তানের কারাগারে বন্দি। সাধারণ মানুষের মনে হয়েছে এই বিজয় যেন অপূর্ণ। মুক্তির মহানায়ক ফিরে আসেননি তখনো। তারা অপেক্ষা করেছেন বঙ্গবন্ধুর প্রত্যাবর্তনে। অনেকটা ট্রয়ের যুদ্ধের পরে ইথাকার রাজা অডিসিয়াসের স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের মতো। হোমারের ওডিসি মহাকাব্যের অন্যতম চরিত্র অডিসিয়াস বহু চড়াই-উতরাই পেরিয়ে ফিরে এসেছিলেন তার দেশে। ১০ জানুয়ারি ১৯৭১ সালে বঙ্গবন্ধুর প্রত্যাবর্তনে বাংলাদেশে সেদিন পূর্ণতা পেয়েছিল আমাদের বিজয়। সেদিন মুক্তিযোদ্ধারা এবং সাধারণ মানুষেরা যেভাবে আনন্দ করেছে, সেটি অবিস্মরণীয়। এই প্রত্যাবর্তন ওডিসির মহাকাব্যিক ঘটনাকেও ছাড়িয়ে যায়।
এখন আমরা পালন করছি বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী। এ বছর বঙ্গবন্ধুর ১০১তম জন্মবার্ষিকী চলছে। করোনা পরিস্থিতিতে জন্মশতবার্ষিকীর অনেক কাজ সমাপ্ত হয়নি বিধায় মুজিববর্ষের মেয়াদও বৃদ্ধি করা হয়েছে। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী। যে জাতিকে দীর্ঘ অত্যাচার-নিপীড়নের নাগপাশ থেকে মুক্তির স্বপ্ন দিয়েছিলেন সে বিজয়েরও সুবর্ণজয়ন্তী। আজ এ যেন বাঙালির গৌরবের এক মিলিত মোহনা। একই সঙ্গে মুজিববর্ষ এবং যার অংশীদার আমরা সবাই।
যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশকে পুনর্গঠনের জন্য বঙ্গবন্ধু নিরন্তর পরিশ্রম করেছেন। তাদের স্মৃতিকথা থেকে আমরা জানতে পারি, তিনি কীভাবে উদয়াস্ত পরিশ্রম করেছেন। তিনি দমে যাননি। স্বাধীন বাংলাদেশে বাঙালির অর্থনৈতিক মুক্তির সংগ্রাম শুরু করেছিলেন তিনি। কিন্তু শেষ করতে পারেননি। ঘাতকের বুলেটে তার সোনার বাংলা গড়ার স্বপ্ন অসমাপ্ত থেকে গেছে।
আজ বিজয়ের ৫০ বছরের প্রান্তে দাঁড়িয়ে পেছনে তাকালে আরেকটি কঠিন ও দীর্ঘ লড়াইয়ের চিত্র আমাদের চোখে পড়ে বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার, এরকম কঠিন কাজ সম্পাদনের পাশাপাশি সোনার বাংলা গড়ার যাত্রাকে তিনি আলাদা অর্থনৈতিক ও পরিবেশগত উন্নয়নের এই ত্রিমাত্রিক বৈশিষ্ট্য শেখ হাসিনার হাতে আলাদা গতি পেয়েছে।
এখন সেইসঙ্গে বাংলাদেশ এখন তথ্যপ্রযুক্তির অভাবনীয় উৎকর্ষের মাধ্যমে ডিজিটাল বাংলাদেশে রূপান্তরিত হয়েছে। শেখ বিশ্বসভায় পরিবেশ দূষণবিরোধী আন্দোলনসহ বিভিন্ন মানবহিতকর কাজ মিলে এই ৫০ বছরে বিশ্বসভায় আমাদের অবস্থান এখন অনেক সুদৃঢ়। দীর্ঘ যাত্রার এই সময়ে বাঙালির মহাবিজয়কে উদযাপন ও মহানায়কের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানানোর একটা সুযোগ এসে গেছে। বঙ্গবন্ধুর ডাকে অস্ত্র হাতে তুলে নিয়ে একদিন যারা ঝাঁপিয়ে পড়েছিল, সে সব বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতিও শ্রদ্ধা জানানোর এটি প্রকৃষ্ট সময়।
কিন্তু তার সংগ্রাম-আন্দোলন এবং ত্যাগের আলোকশিখা এখন চতুর্দিকে ছড়িয়ে আছে। এই আলো প্রতিদিন উজ্জ্বলতর হচ্ছে। বিজয়ের এই ৫০ বছরে আমরা নানা আয়োজনের মাধ্যমে যেমন উদযাপন করব বিজয়, সেই সঙ্গে মহাবিজয়ের মহানায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিও জানাব আমাদের গভীর শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা।
– লালমনিরহাট বার্তা নিউজ ডেস্ক –- লালমনিরহাটে বাংলাদেশ কৃষকলীগের ৫২ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পালন
- ইসরায়েলের হামলাকে স্বীকার করছে না ইরান
- তীব্র তাপদাহেও যেভাবে ঘর থাকবে কনকনে ঠান্ডা
- বিএনপি পথহারা পথিক: ওবায়দুল কাদের
- আওয়ামী লীগ প্রতিশোধপরায়ণ হয়ে কিছু করেনি: প্রধানমন্ত্রী
- মারা গেছেন জাতীয় পতাকার নকশাকার মুক্তিযোদ্ধা শিব নারায়ণ দাস
- আইপিএল থেকে চাইলেও যে কারণে যেতে পারেননি বাংলাদেশি এক ক্রিকেটার
- জুম্মাবার ও নামাজের গুরুত্ব
- শিল্পী সমিতির নির্বাচনে এফডিসিতে নিরাপত্তা জোরদার
- বিজিপির আরো ১৩ সদস্য আশ্রয় নিলো বাংলাদেশে
- সড়কে দুর্ঘটনা রোধে প্রতিদিন মোবাইল কোর্ট পরিচালনার নির্দেশ
- তীব্র গরমের মধ্যেই ধেয়ে আসছে ঝড়-শিলাবৃষ্টি
- ইসরায়েলের হামলার পর প্রধান দুটি বিমানবন্দরে ফ্লাইট চলাচল শুরু
- ইসরায়েল পাল্টা হামলা চালিয়েছে ইরানে
- দ্রুত শিক্ষকদের শূন্য পদ পূরণের সুপারিশ
- বিচ্ছিন্নভাবে দেশের স্বার্থ অর্জন করার সুযোগ নেই: সেনা প্রধান
- মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সদস্যদের সম্মানি বাড়বে
- ২৪ এপ্রিল ব্যাংকক যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী
- দাবদাহে পুড়ছে দেশ, সুস্থ থাকতে যা করবেন
- ‘উপজেলা নির্বাচনে কেউ প্রভাব বিস্তার করতে এলে ব্যবস্থা’
- বাংলাদেশে শিশুখাদ্য নিডো-সেরেলাক নিয়ে ভয়ঙ্কর তথ্য
- ঘরে বসে আয়ের প্রলোভন, পলকেই নিঃস্ব হচ্ছে মানুষ
- উপজেলা নির্বাচন: প্রথম ধাপে বৈধ এক হাজার ৭৮৬ প্রার্থী
- অপপ্রচার রোধে ভারতীয় প্রতিষ্ঠানের সহযোগিতা নেয়া হবে
- নাশকতার মামলায় জেলা যুবদলের সভাপতি কারাগারে
- সাত বিভাগে বৃষ্টির সম্ভাবনা
- প্রাণিসম্পদ সেবা সপ্তাহ ও প্রদর্শনী উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী
- বিরলে গ্রাম আদালত বিষয়ক দিনব্যাপী কর্মশালা অনুষ্ঠিত
- রংপুরে সংবর্ধনায় সিক্ত ব্যরিস্টার আনিকা তাসনিয়া
- যৌতুক ছাড়াই একসঙ্গে বিয়ে করলেন দুই বন্ধু
- ‘সোনার বাংলা বিনির্মাণে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে’
- ভ্যানামি চিংড়ির পোনা আমদানির অনুমোদন দিল সরকার
- লালমনিরহাট জেলা সমিতি রংপুরের উদ্যোগে ইফতার ও মতবিনিময়
- ইসরায়েলের এই বর্বরতা মেনে নেয়া যায় না: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
- গাজায় হত্যাকাণ্ড বন্ধে পদক্ষেপ না নেয়া দুঃখজনক: প্রধানমন্ত্রী
- বাসভাড়া বাড়ানোর বিষয়ে যা বললেন শাজাহান খান
- আইকনিক লিডার এখন কুন্তলা চৌধুরী
- বিশ্বের সুখী দেশের তালিকা যেখানে বাংলাদেশের অবস্থান
- বুয়েটকে জঙ্গিবাদের আখড়া বানানো যাবে না: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
- ঈদের আগেই জিম্মি নাবিকদের মুক্ত করা নিয়ে যা জানা গেল
- লালমনি এক্সপ্রেস ট্রেনের ইঞ্জিন বিকল, রেল যোগাযোগ বন্ধ
- বাড়তি ভাড়া চেয়ে হয়রানি করলেই ব্যবস্থা: আইজিপি
- ইসরায়েলি আগ্রাসনে ২৪ হাজারের বেশি নারী ও শিশু নিহত
- বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবসে ব্রুনাইয়ের সুলতানের শুভেচ্ছা বার্তা
- বেরোবি উপাচার্যের নামে ভুয়া ই-মেইল, থানায় জিডি
- লালমনিরহাট জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে শ্যামল জয়ী
- এপ্রিলে বাংলাদেশে আসছেন কাতারের আমির
- স্বাধীনতা দিবসে স্মৃতিসৌধে রাষ্ট্রপতি-প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা
- হাতীবান্ধায় মাদক ব্যবসায় বাঁধা দেয়ায় স্ত্রীকে মারধর
- বিশ্ব অটিজম সচেতনতা দিবস আজ