• বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১০ ১৪৩১

  • || ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

সর্বশেষ:
যুদ্ধের অর্থ জলবায়ু পরিবর্তনে ব্যয় হলে বিশ্ব রক্ষা পেত- প্রধানমন্ত্রী দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ উৎপাদনের রেকর্ড মেডিকেল কলেজের ক্লাস অনলাইনে নেয়ার নির্দেশ স্বাস্থ্যমন্ত্রীর ‘গণতান্ত্রিক রীতিনীতি না মানলে জনগণই বিএনপিকে প্রতিহত করবে’ লালমনিরহাটে হত্যা মামলায় বিএনপির দুই নেতা কারাগারে

সম্মোহনী ব্যক্তিত্ব

– লালমনিরহাট বার্তা নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ৭ অক্টোবর ২০২১  

আবুল কালাম আজাদ 

মানবিক গুণাবলিতে অনন্য এক ব্যক্তিত্বের নাম শেখ হাসিনা। গত মঙ্গলবার ছিল তার শুভ জন্মদিন। তাকে জানাই প্রাণঢালা অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা। এক জাদুকরি সম্মোহনী ব্যক্তিত্বের কারণেই জাত শত্রুকেও পরম মমতায় কাছে টেনে নেন তিনি। ক্ষমা করে দেন। ভুলে যান তারাই তাকে হত্যা করতে চেয়েছিল। একবার নয়, বহুবার।

এ শত্রুরাই তার আদর্শের ও রক্তের সম্পর্কের ঘনিষ্ঠদের হত্যা করেছে। হত্যা করেছে তার পিতা-মাতা, ভাই-ভাবিসহ পরিবারের সবাইকে। ভুলে যান সম্ভবত এ কারণে যে, তার লক্ষ্য মানুষের কল্যাণ সুনিশ্চিত করা। শান্তি প্রতিষ্ঠা করা। পিতা সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আজীবন লালিত স্বপ্ন সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠা করা।

তাই, ব্যক্তিগত দুঃখ-কষ্ট-বেদনা ভুলে গিয়ে সবাইকে নিয়ে মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করতে চান। আর সে কারণেই তিনি অন্যতম প্রভাবশালী, সাহসী, দূরদৃষ্টিসম্পন্ন, প্রজ্ঞাবান বিশ্বনেতা। বিশ্ববাসীর দেওয়া স্বীকৃত মানবতার জননী।

শত বাধা-বিপত্তির মধ্যেও কীভাবে তিনি দেশকে আজ উন্নয়নের পথে নিয়ে গেলেন-সে গল্প শুনতে চান বিশ্বনেতারা। এবারের জাতিসংঘ সম্মেলনেও এসডিজির অগ্রগতির পুরস্কার পেলেন তিনি। তার উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করলেন জাতিসংঘ মহাসচিবসহ অন্য বিশ্বনেতারাও।

বৈশ্বিক সমস্যা করোনা। অর্থবিত্ত ও ক্ষমতায় পরাক্রমশালী দেশগুলো যখন এ সংকট মোকাবিলায় বিপর্যস্ত, তখন বাংলাদেশের মতো জনবহুল ও মধ্যম আয়ের দেশকে তিনি তার দূরদৃষ্টিসম্পন্ন ও সঠিক সফল নেতৃত্ব দিয়ে করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলা করেছেন।

পরিস্থিতি মোকাবিলায় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের যখন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার সরকারকে সহযোগিতা করার কথা, তখন তারা শুধুই নেতিবাচক বক্তৃতা-বিবৃতি দিয়ে সরকারকে সহযোগিতা দূরে থাক, জনগণকে বিভ্রান্ত করেছেন।

করোনার টিকা যখন আনা হয় এবং দেওয়া শুরু হয়, তখন একজন দায়িত্বশীল নেতা বলেছিলেন, মানুষ মারার জন্য এ টিকা আনা হয়েছে। এভাবেই জনগণকে বিভ্রান্ত করা হয়েছে। বলা হয়েছে, হাজার হাজার লোক মরে পড়ে থাকবে রাস্তায়; করোনা মোকাবিলায় সরকার চরমভাবে ব্যর্থ ইত্যাদি। এ প্রচারণার মধ্যেও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিন্দুমাত্র বিচলিত হননি। এ জায়গাতেই তিনি অনন্য। দৃঢ় ব্যক্তিত্বের অধিকারী, সিদ্ধান্তে অটল শেখ হাসিনা।

জাতির হাল ধরেছেন শক্ত হাতে। দেখতে হবে, তিনি যে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং মহীয়সী নারী রত্নগর্ভা বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুননেছা মুজিবের কন্যা। তবে একথা ঠিক, দু-একটি গণমাধ্যম ছাড়া অধিকাংশ গণমাধ্যম প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সংকটকালে ইতিবাচক ভূমিকা পালন করেছে।

আমি ব্যক্তিগতভাবে সৌভাগ্যবান যে, জাতির পিতার জ্যেষ্ঠ কন্যার কাজ করার সুযোগ পেয়েছি দীর্ঘদিন। প্রত্যেক মানুষের জীবনেই হয়তো কোনো না কোনো অংশ থাকে, যা নিয়ে সে গর্ব করতে পারে। আমার গর্বের অংশ, অহংবোধের অংশ তার কাজ করার সময়টি। আমি দেখেছি, কোমল হৃদয়ের মানুষটি কী দৃঢ়তার সঙ্গে কঠোর ও কঠিন সিদ্ধান্ত নেন। তার শাসনামলে তিনি তার দলের বহু প্রভাবশালী নেতা, সংসদ সদস্যকে অপরাধের জন্য বিন্দুমাত্র ছাড় দেননি।

অপরাধের জন্য তাদের জেলে পর্যন্ত যেতে হয়েছে। দেশের প্রাচীনতম বৃহত্তম দলে সব ভালো মানুষ থাকবে, খারাপ মানুষ থাকবেই না-এটা হতে পারে না। বিষয়টা হচ্ছে অপরাধ করলে শাস্তি হয় কিনা। হ্যাঁ, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারে ও দলে অপরাধ করে কেউ ছাড় পায় না। শাস্তি হয়।

এ প্রসঙ্গে আমি প্রবীণ সাংবাদিক আমানউল্লাহ সাহেবের কথা উদ্ধৃত করছি। বঙ্গবন্ধুর সময় যারা তার সঙ্গে কাভার করেছেন, তিনি তাদেরই একজন। তিনি বেঁচে আছেন। বয়স ৮৭। ‘বিএনপি ইজ নট আ টাইপ অব পার্টি ফর দি বেঙ্গলিজ। এখন, বর্তমানের কথা বলছি। বিএনপি হয়েছিল কীভাবে, সে প্রশ্নে আপনি না যান। কিন্তু আজকে আওয়ামী লীগ চলে গেলে বিএনপি তার বদলে নেতৃত্ব দিতে পারবে না। এটা আমার বিশ্বাস। আমি তো বিএনপি নিজেও একটু করে দেখেছি।

আওয়ামী লীগের মধ্যে যত খারাপই থাক না কেন, সেখানে কিন্তু কমিটেড বেঙ্গলিজ আছে। আর বিএনপিতে কমিটেড ডিজঅনেস্ট পারসন আছে। ডিজঅনেস্ট পারসন, যারা প্যাট্রিয়ট হতে পারে না’ (মহিউদ্দিন আহমদ, ইতিহাসের যাত্রী, পৃষ্ঠা-৪৩)।

আমানউল্লাহ ভাই এক সময় বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার এমডি ও প্রধান সম্পাদক ছিলেন।

আমি আরেকটি ঘটনার উল্লেখ করব। আমি তখন যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন দূতাবাসে প্রেস মিনিস্টার। ২০০০ সালের ঘটনা। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেপ্টেম্বর মাসে জাতিসংঘে সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগদানের জন্য যান। সেখান থেকে কানেকটিকাটে ব্রিজপোর্ট ইউনিভার্সিটিতে গিয়েছেন। তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে ডক্টরেট ডিগ্রি প্রদান করা হবে। জাওয়াদুল করিম ভাই তখন প্রেস সেক্রেটারি ছিলেন।

ওই অনুষ্ঠানে শাহজাহান সরদারসহ বাংলাদেশের অনেক সাংবাদিকই উপস্থিত ছিলেন। আমি আগেই ব্রিজপোর্ট ইউনিভার্সিটিতে নেত্রীর লেখা এবং বাংলাদেশ সম্পর্কিত অন্যান্য বই পৌঁছে দিয়েছিলাম। সভায় বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদের সেক্রেটারি একজন ছাত্রী। নাম মনে নেই। তিনি তার বক্তৃতায় বলেছেন, বড় হলে রাজনীতি করবেন এবং শেখ হাসিনার মতো নেতা হবেন। এই হলেন শেখ হাসিনা, যার সম্মোহনী ব্যক্তিত্ব সুদূর বিদেশের এ ছাত্রীটিকেও প্রভাবিত করেছে।

লেখকঃ ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান সম্পাদক, বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা (বাসস)।

– লালমনিরহাট বার্তা নিউজ ডেস্ক –