করোনাভাইরাস: গুজবেই বিপদ

বিদেশফেরত শুনে বাড়িতে ঢুকতে বাধা, গ্রাম থেকে বেরিয়ে যেতে চাপ দেওয়া, কোভিড-১৯ এর লক্ষণ নিয়ে মারা যাওয়া ব্যক্তির দাফনে বাধা, সম্ভাব্য রোগীকে চিকিৎসা দেওয়ায় হাসপাতাল ভাঙচুর, অস্থায়ী হাসপাতাল তৈরিতে বাধা- বাংলাদেশে নভেল করোনাভাইরাস সংক্রমণ ধরা পড়ার পর থেকেই এমন অনেক ঘটনার খবর মিলছে নিয়মিতই।
মূলত এই ভাইরাস নিয়ে গুজবনির্ভর ভুল ধারণার কারণেই এসব ঘটনা ঘটছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অবৈজ্ঞানিক, অযৌক্তিক এবং অমূলক এসব কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে মানুষ নিজেদেরই ক্ষতি করছে।
সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট-আইইডিসিআরের হিসাবে, রোববার (২৯ মার্চ) পর্যন্ত দেশে ৪৮ জন নভেল করোনাভাইরাস সংক্রমিত হয়েছেন। এ রোগে মারা গেছেন এখন পর্যন্ত ৫ জন। আইইডিসিআর বলছে, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তিকে হাসপাতালে বা নিজের বাড়িতে রেখে চিকিৎসা দেওয়া নিরাপদ। বিদেশফেরত মানুষকেও নিজের বাড়িতে হোম কোয়ারেন্টিনে থাকার পরামর্শ শুরু থেকেই দিয়ে আসছে আইইডিসিআর।
রাজধানীর খিলগাঁওয়ের বাসিন্দা এক নারী জানান, গত ২৩ মার্চ থেকে তার ৬৬ বছর বয়সী বাবার জ্বর, বমি, পেট খারাপ এবং বুকে ও পুরো শরীরে ব্যথা শুরু হয়। করোনাভাইরাসের উপসর্গের সঙ্গে মিল থাকায় অনেক চেষ্টা করে আইইডিসিআরে নমুনা পরীক্ষা করিয়েছেন। ২৭ মার্চ পাওয়া পরীক্ষার ফলে দেখা যায় তার করোনাভাইরাস নেই।
তিনি জানান, ২৮ মার্চ চিকিৎসককে দেখাতে একটি বেসরকারি হাসপাতালে যান তারা। রাত আটটায় বাসায় ফিরতে গেলে বাধা দেয় অন্য ফ্ল্যাটের বাসিন্দারা। তাদের আইইডিসিআরের প্রতিবেদন দেখানোর পরও কাজ হচ্ছিল না। শেষে পুলিশের শরণাপন্ন হন তারা।
“পুলিশ এসে তাদের দীর্ঘক্ষণ বুঝিয়ে শেষে বাসায় উঠিয়ে দিয়ে যায়। এর মধ্যে দীর্ঘ আড়াই ঘণ্টা আমার অসুস্থ বাবাকে বাইরে থাকতে হয়েছে। আড়াই ঘণ্টা পর তারা আমার বাবা ভাইদের বাসায় ঢুকতে দেয়। আমার বাবা যতটুকু ফিট থাকার চেষ্টা করেছিল, মানুষগুলো তাকে ঠিক তার দ্বিগুণ কষ্ট দিয়ে অসুস্থ করে দিয়েছিল।” আবারও হেনস্তার শিকার হতে পারেন-এই শঙ্কায় পরিচয় প্রকাশ না করার অনুরোধ করেন ওই নারী।
মালয়েশিয়ার একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপক মাহবুব আলম মালয়েশিয়া থেকে ভারতে আসেন। ২১ মার্চ আবার মালয়েশিয়া ফিরে যাওয়ার কথা ছিল তার। ১৮ মার্চ মালয়েশিয়া লকডাউন করায় ভারত থেকে দেশে আসেন তিনি।
মাহবুব আলম জানান, সাভারের বাসায় গেলে উঠতে দেয়নি প্রতিবেশিরা। পরে টাঙ্গাইলে নানাবাড়ি গেলে সেখানেও বাধার মুখে পড়েন তিনি।
“ওইখানে আমাদের আলাদা বাড়ি। ভেবেছিলাম হোম কোয়ারেন্টিনের জন্য ভালো হবে। কিন্তু কিভাবে যেন জানতে পেরে গ্রামের কয়েকশ মানুষ চলে আসে। তারা বলে যে সেখানে থাকা যাবে না। স্থানীয় প্রশাসনের হস্তক্ষেপে শেষে আমি সেখানে থাকতে পারি।”
“আমি সংক্রমিত না হওয়ার পরও আত্মীয়-স্বজন, প্রতিবেশীরা এমন আচরণ করেছে। লোকজন এভাবে প্যানিক তৈরি করলে মানুষ তো পঞ্চাশ ভাগ অসুস্থ এমনিতেই হয়ে যাবে।” দেশের বিভিন্ন স্থানে বিদেশফেরতদের সঙ্গে বিরূপ আচরণ করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এছাড়া কোভিড-১৯ আক্রান্ত সন্দেহে মারা গেছে এই অজুহাতে গত ২৮ মার্চ বগুড়ার শিবগঞ্জে এক ব্যক্তির লাশ দাফনে বাধা দেয় স্থানীয়রা। ঢাকার খিলগাঁওয়ের তালতলা কবরস্থানেও কোভিড-১৯ এ মারা যাওয়া দুই ব্যক্তিকে দাফন করতে বাধা দেয় এলাকাবাসী। পরে তাদেরকে মিরপুরের বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে দাফন করা হয়। ২২ মার্চ রাজধানীর উত্তরায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীকে ভর্তি ও চিকিৎসা সেবা দেওয়ার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল করে স্থানীয়রা। শনিবার তেজগাঁওয়ে এই ভাইরাসে আক্রান্তদের চিকিৎসার জন্য হাসপাতাল তৈরির কাজে বাধা দেওয়া হয়।
বিশেষজ্ঞরা যা বলছেন
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য মো. নজরুল ইসলামের মতে, বাংলাদেশের মানুষের অনেক গুণ আছে, আবার কিছু কঠিন খারাপ দোষও আছে। গুজবে বিশ্বাস করা এর মধ্যে একটা।
তিনি বলেন, “কোনো ব্যক্তি নভেল করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হলেও যতক্ষণ পর্যন্ত কেউ তার সংস্পর্শে না আসছে ততক্ষণ সংক্রমিত হওয়ার ভয় নেই।
“বিশেষজ্ঞ কেউ তো এমন কথা বলছে না। নতুন অজানা রোগ নিয়ে মানুষ আতঙ্কিত সেটা জানি। কিন্তু এতে তো তারাও আক্রান্ত হতে পারে। যারা অন্যকে বাধা দিচ্ছেন, সামাজিকভাবে হেয় করছেন তারা নিজেরাও তো কাল আক্রান্ত হতে পারেন। এই বিষয়গুলো কঠিনভাবে বন্ধ করতে হবে।”
আইইডিসিআরের সাবেক প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মুশতাক হোসেন বলেন, কোভিড-১৯ আক্রান্ত বা সন্দেহজনক ব্যক্তির সঙ্গে বিরূপ আচরণ করলে এর ফল খারাপ হতে পারে। তখন কারও শরীরে লক্ষণ দেখা দিলেও তিনি তা গোপন করবেন সামাজিকভাবে নিগৃহীত হওয়ার ভয়ে। “যদি বাসায় থাকে তাহলে সেটা ছড়ানোর সম্ভাবনা কম। কিন্তু তাকে যদি বাইরে বের করে দেওয়া হয় তাহলে তার মাধ্যমে আরও বেশি মানুষের সংক্রমিত হওয়ার ভয় থাকে। এটা আরও বেশি বিপজ্জনক। এভাবে আমরা নিজের পায়ে কুড়াল মারছি। নিজে আক্রান্ত হলে চিকিৎসা পাব না, আমার ঘরের মধ্যে রোগী থাকলেও জানতে পারব না।”
এই ভাইরোলজিস্টের মতে, ‘দায়িত্বহীন’ কিছু মানুষের এ ধরনের কর্মকাণ্ড দেশের সবার সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়াবে।
রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল, শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতাল, মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট, শিশু হাসপাতাল, পঙ্গু হাসপাতাল রয়েছে। সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের পাশেই গণভবন, মোহাম্মদপুর এলাকা। মহাখালী বক্ষব্যাধি, কুষ্ঠ হাসপাতাল, সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতাল, ক্যান্সার হাসপাতালসহ বেশকিছু হাসপাতাল কাছাকাছি দূরত্বে। পাশেই গুলশান, নিকেতন ও মহাখালীর মতো ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা।
হাসপাতাল থেকে রোগ ছড়ালে এসব এলাকায় মানুষ বসবাস করতে পারত না বলে মনে করেন মুশতাক হোসেন। “যক্ষ্মা এবং সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতালের আশপাশে কি জনবসতি নেই? সেখানে কোয়ার্টারে চিকিৎসক, নার্সসহ কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও থাকেন। তারা তো কোনো রোগে ভুগছেন না।
“রোগীকে আলাদা ঘরে রাখা হয়, সংক্রমণ কমাতে ওষুধ দেওয়া হয়। চিকিৎসকরা মাস্ক, গ্লাভসসহ প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা নিশ্চিত সেবা দেন। জীবাণুনাশক দিয়ে সবকিছু পরিষ্কার করা হয়। এ কারণে হাসপাতাল থেকে রোগ ছড়ানোর সুযোগ সবচেয়ে কম।”
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে জানা গেছে, চীনে নভেল করোনাভাইরাস সংক্রমণ শুরু হওয়ার পর এখন পর্যন্ত ৬ লাখ ৬৫ হাজার ১৩ জন বিভিন্ন বন্দর হয়ে বাংলাদেশে এসেছেন। বর্তমানে ২৮ হাজার ৪৮৩ জন কোয়ারেন্টিনে আছেন। এর মধ্যে হাসপাতালসহ প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে ১৪২ জন এবং ২৮ হাজার ৩৪১ জন হোম কোয়ারেন্টিনে আছেন। এখন পর্যন্ত কোয়ারেন্টিন করা হয়েছে ৫৩ হাজার ৪৪২ জন বিদেশফেরতকে।
– লালমনিরহাট বার্তা নিউজ ডেস্ক –- ডেঙ্গুতে ৪ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ৪১৩
- ২৯ ডিসেম্বর থেকে ১০ জানুয়ারি পর্যন্ত মাঠে থাকবে সেনাবাহিনী
- ‘ইনশাআল্লাহ’ কখন বলতে হয়’
- ডিসেম্বরের প্রথম ৮ দিনে রেমিট্যান্স এলো ৫৩ কোটি ডলার
- লালমনিরহাটে সম্পত্তির জন্য মাকে পেটালেন মেয়েরা, থানায় মামলা
- ১৩.১ ডিগ্রিতে নামল পঞ্চগড়ের তাপমাত্রা
- ঘন কুয়াশায় সৈয়দপুরে বিমান ওঠা-নামা বন্ধ
- ১৯৭১ ডিসেম্বর ১১: শত্রুমুক্ত হয় যেসব অঞ্চল
- দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা নওগাঁয়
- বিশ্বের সবচেয়ে দামি ফুটবল স্কোয়াডগুলোর তালিকা প্রকাশ
- ‘আশিক বানায়া আপনে’ সিনেমার ‘চুমু’ নিয়ে তনুশ্রীর বিস্ফোরক মন্তব্য
- ইসলামে মানবাধিকারের বিধান
- দেশে তেলের খনির সন্ধান পাওয়া গেছে: জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী
- উন্নত দেশগুলোকে প্রতিশ্রুতি পূরণ করতে হবে: পরিবেশমন্ত্রী
- দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন নিয়ে ইসির পরিপত্র জারি
- ডিসেম্বরে মূল্যস্ফীতি ৯ শতাংশের নিচে নেমে আসবে: অর্থসচিব
- ‘মানবাধিকার লঙ্ঘনকারীরাই মানবাধিকারের প্রেসক্রিপশন দেয়’
- এবার বই উৎসব চলবে টানা ১৫ দিন
- গাজায় আত্মসমর্পণ করেনি হামাস যোদ্ধারা, শীর্ষ নেতার বিবৃতি
- ‘খুন-গুম বন্ধ করে আমরা সুন্দর পরিবেশ সৃষ্টি করেছি’
- দেশের সর্বত্র শান্তি বজায় রাখতে সরকার বদ্ধপরিকর- প্রধানমন্ত্রী
- নিপীড়িত জনগণের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান রাষ্ট্রপতির
- বেরোবিতে রোভারের নেতৃত্বে নিরঞ্জন-সবুজ
- নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করবে ভারত, জাপান ও ফিলিস্তিন
- শিগগিরই ভারত থেকে আসছে ৫২ হাজার মেট্রিক টন পিয়াজ
- পিয়াজের দাম নিয়ন্ত্রণে মাঠে ডিবি
- কুড়িগ্রামে দোকানের ভাড়া চাওয়ায় মালিককে খুন
- ১৫ ডিগ্রিতে নামল কুড়িগ্রামের তাপমাত্রা
- মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা দিনাজপুরে
- সালাহ জাদুতে লিগ টেবিলের শীর্ষে লিভারপুল
- সেলফি তুলে এক রাতে ২০-৩০ লাখ টাকা আয় করেন ওরি!
- ফজরের সময় জেগে উঠার কার্যকরী কৌশল
- ভারত-বাংলাদেশ একসাথে এগিয়ে যেতে চায়
- গোয়ায় জয়ার ‘ফেরেশতে’
- বাংলাদেশে এই প্রথম ট্রেনে নারী অ্যাটেনডেন্ট
- বাংলাদেশ-ভারত একযোগে কাজের জন্য সহযোগিতামূলক প্ল্যাটফর্ম প্রয়োজন
- স্মার্ট গ্যাস মিটারিংয়ের মাধ্যমে দেশের জ্বালানি দক্ষতা বাড়বে
- হজযাত্রীদের যে সুখবর জানাল সৌদি সরকার
- মোটরসাইকেলের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গাছের সঙ্গে ধাক্কা, ২ বন্ধু নিহত
- সালাতুদ দুহা বা চাশতের নামাজের নিয়ম ও ফজিলত
- রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় শায়িত হলেন বীরমুক্তিযোদ্ধা সাদুল্ল্যাহ
- গণতন্ত্র ত্রুটিমুক্ত করতে কাজ করছে আওয়ামী লীগ: ওবায়দুল কাদের
- লালমনিরহাটে অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্তদের হাতে নগদ অর্থ প্রদান
- ‘সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে জনগণকে সোচ্চার হতে হবে’
- রংপুর ও রাজশাহী বিভাগের মনোনয়ন চূড়ান্ত: কাদের
- দিনাজপুরে ধান ক্ষেতে পড়ে ছিল মানব কঙ্কাল
- আজানের পর দোয়া পড়ার ফজিলত
- বরিশাল হবে শান্তির নগরী: পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী
- ‘এ আনন্দ ভাষায় প্রকাশ করা যায় না’
- হিন্দি সিনেমায় জয়া আহসানের অভিষেক আজ