দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে স্বতন্ত্রতে আগ্রহী বিএনপি নেতারা

দলীয়ভাবে যেকোনো নির্বাচনে অংশগ্রহণের সিদ্ধান্ত না থাকলেও নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে অংশগ্রহণের তুমুল আগ্রহ দেখাচ্ছে তৃণমূলসহ কেন্দ্রের সিনিয়র বিএনপি নেতা-কর্মীরা।

আর তাই সিনিয়র নেতাদের মতামত উপেক্ষা করেই সর্বশেষ নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন (নাসিক) নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছিলেন দলটির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা ও জেলা বিএনপির আহ্বায়ক তৈমূর আলম খন্দকার। যদিও শেষ পর্যন্ত তাকে বহিষ্কার হতে হয়। এ কারণে আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও বিএনপি শোচনীয় পরাজয়ের মধ্যেই পড়বে- এমনটাই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।

বিশ্লেষকদের মতে, প্রতিটি নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীদের পরাজয়ের কারণে বিএনপি এখন বিকল্প উপায়ে জয়ী হওয়ার বিষয়কেই বেশি প্রাধান্য দিচ্ছেন। অনেকেই বিএনপির ব্যানার বাদ দিয়ে স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে ইচ্ছুক।

পরিচয় গোপন রাখার শর্তে একজন রাজনৈতিক বিশ্লেষক বলেন, ক্রমাগত পরাজয়ের কারণে বিএনপির কাছে নির্বাচন আজ দুঃস্বপ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে। গণতান্ত্রিক রাজনীতিতে একটি দল যখন জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে তখন তাদের নির্বাচন ও গণতন্ত্রের প্রতি অনীহা সৃষ্টি হয়। বিএনপির ভেতর সেই লক্ষণ দেখা যাচ্ছে। বিএনপি নেতা-কর্মীরা ধরেই নিয়েছে, তাদের দল ও প্রার্থীদের যে অবস্থা তাতে ভোট দিয়ে কোন লাভ নেই। আর এ কারণে বিএনপির হয়ে নির্বাচন করার পক্ষে তেমন উচ্ছ্বসিত হন না দলটির নেতারা। বিএনপির হয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা অনেকেই লস প্রজেক্ট বলে মনে করেন।

এদিকে বিএনপি ছেড়ে দেওয়া একাধিক নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রাজনৈতিক কৌশল নির্ধারণে ব্যর্থতা, তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের অবহেলা, বিভিন্ন জেলা-উপজেলা এমনকি ইউনিয়ন পর্যায়ের কমিটিগুলো নিয়ে নানা ধরনের অসন্তোষ, পদবাণিজ্য এমন একাধিক কারণে বিএনপির রাজনীতির প্রতি আগ্রহ হারাচ্ছেন খোদ দলের কর্মীরা।

তারা বলেন, বিএনপির বড় সমস্যা হলো, মাঠের ত্যাগী ও পরীক্ষিত কর্মীদের অবমূল্যায়ন করা। বিপদের দিনে কোনো রকম সহযোগিতা করে না বিএনপির হাইকমান্ড, এমন শত শত অভিযোগ করেছেন তৃণমূলের নেতারা। দীর্ঘ একযুগ সময় পেলেও তৃণমূলের রাজনীতি পুনর্গঠনে কোনো পরিকল্পনা গ্রহণ করেনি বিএনপি। কেন্দ্রের ভুল সিদ্ধান্তের কারণে আজকে বিএনপির এই দুর্দশা। যার কারণে কেউ আজ বিএনপির ব্যানারে নির্বাচন করতে তেমন আগ্রহী হয় না। এ কারণে নির্বাচন নিয়ে তাদের এতো অনাগ্রহতা।