• বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৫ ১৪৩১

  • || ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫

সর্বশেষ:
মুজিবনগর সরকারের ভূমিকা ইতিহাসে অনন্য: রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিরা হস্ত‌ক্ষেপ করবে না: ওবায়দুল কাদের লালমনিরহাটে যুবলীগ কর্মীর পায়ের রগ কাটলেন যুবদল নেতা বাসার ছাদ থেকে পড়ে যুবকের রহস্যজনক মৃত্যু ঠাকুরগাঁওয়ে ঈদ-নববর্ষে ১০ জন নিহত, আহত ২ শতাধিক

খালেদার চিকিৎসা নিয়ে জিয়া পরিবারের গৃহদাহ

– লালমনিরহাট বার্তা নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ৩ ডিসেম্বর ২০২১  

একদিকে বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার অসুস্থতা, অন্যদিকে তার চিকিৎসা নিয়ে জিয়া পরিবারের গৃহদাহ। এ নিয়ে দলের মধ্যে উত্তেজনা এখন চরমে। নেতাকর্মীরা প্রকাশ্যে চেয়ারপার্সনের মুক্তি দাবি করলেও এ মুক্তির পথ এবং উপায় কি হবে তা নিয়ে বিভক্ত জিয়া পরিবার। আর এ বিভক্তির মুখোমুখি অবস্থানে দাঁড়িয়েছেন খালেদা জিয়ার জ্যেষ্ঠ পুত্র তারেক রহমান এবং তার ছোট ভাই শামীম ইস্কান্দার।

জানা গেছে, খালেদা জিয়া কারাগারে যাওয়ার পর থেকে বাংলাদেশে কার্যত শামীম ইস্কান্দারই তার অভিভাবকের দায়িত্ব পালন করেন। জেলে থাকার সময় খালেদা জিয়ার সমস্ত দেখভাল, জিয়া পরিবারের বিভিন্ন বিষয় তদারকি, বঙ্গবন্ধু মেডিকেলে চিকিৎসাকালীন সময়ে দৌড়ঝাঁপ এবং মুক্তির ব্যাপারেও যাবতীয় দেন-দরবার করার কাজটি করেছিলেন শামীম ইস্কান্দার। এজন্য বেগম জিয়ার ঘনিষ্ঠতা অর্জন করেন তিনি।


 
বিশেষ করে, ২০২০ সালে যখন বেগম জিয়াকে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ অনুকম্পায় মুক্তি দেওয়া হয়, সে মুক্তির পুরো প্রক্রিয়াটি করেছিলেন শামীম ইস্কান্দার। তিনি গণভবনে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এবং খালেদা জিয়াকে জেল থেকে বাড়িতে নেয়ার জন্য অনুরোধ করেছিলেন। ধারণা করা হয়, তার অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতেই প্রধানমন্ত্রী সহানুভূতিশীল হন এবং খালেদা জিয়াকে ফৌজদারি কার্যবিধির ৪০১ ধারা প্রয়োগ করে নির্বাহী আদেশে জামিন দেন। 

এখনো শামীম ইস্কান্দার খালেদা জিয়ার চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেয়ার চেষ্টা করছেন। তিনি তার ঘনিষ্ঠদের বলেছেন, ‘এ ব্যাপারে হাল ছাড়েননি’। তবে ইস্কান্দারের এ উদ্যোগের প্রধান বাধা এখন তারেক রহমান। তার কারণেই বেগম জিয়াকে বিদেশে নিতে পারছেন না শামীম ইস্কান্দার। আর এ নিয়ে মামা-ভাগ্নের মধ্যে বিরোধ প্রকাশ্যে রূপ নিয়েছে।

শামীম ইস্কান্দার মনে করেন, খালেদা জিয়াকে বিদেশে পাঠানোর জন্য যা করা দরকার তাই করা উচিত। এ জন্য তিনি তারেক জিয়াকে বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান পদ থেকে পদত্যাগ এবং রাজনীতি থেকে সরে যাওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন। একইসঙ্গে মুক্তির জন্য বেগম জিয়াকে রাজনীতি ছেড়ে দেওয়ার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিতে অনুরোধ করেছেন। এছাড়া উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশ যেতে খালেদা জিয়া রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করলে মঙ্গল হবে বলে মনে করেন তিনি। কারণ আগে জীবন বাঁচানো জরুরি, রাজনীতি দেখার সুযোগ নেই।

কিন্তু শামীম ইস্কান্দারের সঙ্গে একমত নন লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভরপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে রাজনৈতিক প্রক্রিয়াকেই গুরুত্বপূর্ণ মনে করেন। এ কারণে খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে আন্দোলন জোরদার করা, সরকারের উপর জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে চাপ সৃষ্টি করা এবং এমন একটি অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করা, যাতে সরকার খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিতে বাধ্য হয়, সেই প্রক্রিয়ায় বিশ্বাসী। 

তবে এটা কখনোই সম্ভব নয় বলে মনে করেন শামীম ইস্কান্দার। কারণ সরকার এমন কোনো চাপের মধ্যে নেই যে খালেদা জিয়াকে বিদেশে যাওয়ার অনুমতি দেবে। এক্ষেত্রে সরকারের আস্থা, বিশ্বাস ও সহানুভূতিই গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করেন তিনি। 

এ বিষয়ে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলেন, মামা-ভাগ্নের এ টানাপোড়েনের কারণে শেষ পর্যন্ত অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে বিএনপি। তাদের এ বিভক্তি বিএনপিকে নতুন একটি পরিস্থিতিতে দাঁড় করাতে পারে।

– লালমনিরহাট বার্তা নিউজ ডেস্ক –