• শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৬ ১৪৩১

  • || ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

সর্বশেষ:
বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার অন্যতম নকশাকার বীর মুক্তিযোদ্ধা শিব নারায়ণ দাস, আজ ৭৮ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেছেন। বন্যায় দুবাই এবং ওমানে বাংলাদেশীসহ ২১ জনের মৃত্যু। আন্তর্জাতিক বাজারে আবারও বাড়ল জ্বালানি তেল ও স্বর্ণের দাম। ইসরায়েলের হামলার পর প্রধান দুটি বিমানবন্দরে ফ্লাইট চলাচল শুরু। ইসরায়েল পাল্টা হামলা চালিয়েছে ইরানে।

পেটপুরে খেয়ে অনশনে অগ্নিবর্ষী বক্তৃতা দেন বিএনপি নেতারা!         

– লালমনিরহাট বার্তা নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ২২ নভেম্বর ২০২১  

বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার উন্নত চিকিৎসার দাবিতে বিএনপির পক্ষ থেকে গত শনিবার দেশব্যাপী গণঅনশন কর্মসূচি পালন করেছে বিএনপি। 

বিএনপির এ কর্মসূচি পালনের পর বিষয়টি নিয়ে টিপ্পনী কেটেছেন দলের নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের অন্যতম শরিক বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির সাবেক মহাসচিব এম এম আমিনুর রহমান। 

এ বিষয়টির প্রতি ইঙ্গিত করে ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন তিনি। কোনো নেতা বা দলের নাম উল্লেখ না করে ‘গণঅনশন কর্মসূচি এবং বর্তমান বাস্তবতা’ শিরোনামে স্ট্যাটাসটি দেন আমিনুর রহমান। 

সেই পোস্টে তিনি লিখেছেন, ‘শীর্ষ নেতারা সকালে পেট পুরে খেয়ে অনশনে অংশগ্রহণ করে অগ্নিবর্ষী বক্তৃতা দিয়ে সাংবাদিক ভাইদের দৃষ্টি আকর্ষণ করার চেষ্টা করেন। এরপর কেউ কেউ জরুরি কাজের অজুহাত দিয়ে বাসায়, অফিসে চলে যাবেন। কেউ বলবেন, অনেকক্ষণ বসে আছি একটু হেঁটে আসি, বলে আশপাশের পরিচিত কারো কাছে গিয়ে জলপান সারবেন। এরপর দুপুরে আয়েশি খাবার খেয়ে আবারো অনশনে হাজির হয়ে জুস খাওয়ার ফটোসেশনে অংশ নেবেন।’

স্ট্যাটাসে কল্যাণ পার্টির সাবেক এই নেতা আরো লেখেন, ‘বি.দ্র. শীর্ষ নেতাদের বেশিরভাগই বহুমূত্র, উচ্চ রক্তচাপ, কিডনিসহ নানা রোগে আক্রান্ত। তাই বিষয়টি কেউ অন্যভাবে নেবেন না।’

ওদিন সরেজমিনে দেখা যায়, সকাল ৯টায় মির্জা ফখরুল ইসলাম অনশন কর্মসূচির উদ্বোধন করেন। সেখানে দেওয়া বক্তব্যে উপস্থিত নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বিএনপি মহাসচিব বলেন, বিকেল ৪টা পর্যন্ত ভাবগাম্ভীর্যের সঙ্গে অনশন কর্মসূচি পালন করবেন, কেউ দাঁড়িয়ে থাকবেন না, উঠে যাবেন না। বসে থেকে কর্মসূচি পালন করবেন।

নয়াপল্টনে বিএনপি কার্যালয়ের পাশের মিডওয়ে হোটেল গলিতে ভ্যান থেকে আনারস কিনে খেতে দেখা যায় বেশ কয়েকজন নেতাকর্মীকে। তাদের একজনের নাম সালাউদ্দিন। অনশন কর্মসূচিতে এসে কেন খাচ্ছেন- জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সকালে কিছু খাইনি। তাই একটু খাচ্ছি আরকি।’ একই গলিতে দুটি চায়ের দোকানে শতাধিক নেতাকর্মী চা-বিস্কুট খেতে ভিড় করেন। আশপাশের অলিগলিতেও সরেজমিনে এমন চিত্র দেখা গেছে।

অনশন কর্মসূচির শেষ পর্যায়ে অনেকটা বিশৃঙ্খল হয়ে পড়েন নেতাকর্মীরা। একদিকে মাইকে কেন্দ্রীয় নেতারা বক্তব্য দিচ্ছেন, অন্যদিকে নেতাকর্মীরা খোশগল্পে মেতেছেন। কেউ কেউ চলে যাচ্ছেন। এমন পরিস্থিতিতে আবারো মাইকে নেতাকর্মীদের ভাবগাম্ভীর্য বজায় রাখতে অনুরোধ জানান দলের প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী।

অনশন কর্মসূচির শেষ বক্তা হিসেবে যখন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বক্তব্য দিতে ডায়াসে দাঁড়ান, তখন নেতাকর্মীরা আবারো স্লোগান দিতে শুরু করেন। তখন তিনি বলেন, ‘দয়া করে স্লোগান বন্ধ করুন।’ এরপরও নেতাকর্মীরা স্লোগান বন্ধ না করলে তিনি বলেন, ‘তোমরাই কথা বলতে থাক, তোমরাই স্লোগান দিতে থাক। আমি বক্তব্য দেব না। নো, নো।’ এরপর মির্জা ফখরুল রাগ করে বক্তব্য দেওয়া বন্ধ করে দেন। পরে নেতাকর্মীরা স্লোগান দেওয়া বন্ধ করলে পুনরায় বক্তব্য দেওয়া শুরু করেন তিনি।

এমন পরিস্থিতি সম্পর্কে বিএনপির একাধিক নেতারা বলেন, কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে দলের চেইন অব কমান্ড ধরে রাখতে না পারার ঘটনা এটাই প্রথম নয়। এর আগেও একাধিকবার এমন অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। 

গত ৬ নভেম্বর ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটের নিচতলার মিলনায়তনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য প্রয়াত নেতা তরিকুল ইসলামের স্মরণসভায়ও বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি দেখা যায়। ওই সময় মঞ্চে উপস্থিত নেতাদের পেছনে কথা বলা এবং দর্শকসারি থেকে স্লোগান দিয়ে বিশৃঙ্খল পরিবেশ তৈরির মতো ঘটনাও ঘটে।

একাধিক নেতা সে সময় তাদের শান্ত থাকতে অনুরোধ করেও ব্যর্থ হন। মির্জা ফখরুল ইসলামও ব্যর্থ হন। তখন মহাসচিব বক্তব্য দেওয়া বন্ধ করে মঞ্চে নিজের আসনে বসে পড়েন।

এর আগেও বিভিন্ন কর্মসূচিতে একই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে- এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আসলে কোন সভায় কেমন আচরণ করতে হবে- এসব বিষয়ে নেতাকর্মীদের প্রশিক্ষণ দেওয়া দরকার। সেটা তো এখন সম্ভব হয় না।’

– লালমনিরহাট বার্তা নিউজ ডেস্ক –