• শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৫ ১৪৩০

  • || ১৮ রমজান ১৪৪৫

সর্বশেষ:
বাংলাদেশকে হুমকির মুখে ফেলেছে ক্রমবর্ধমান জলরাশি: গবেষণা উত্তরবঙ্গের মহাসড়কে চার লেন চালু, ঈদযাত্রা হবে স্বস্তির সব উন্নয়ন সহযোগীদের এক প্ল্যাটফর্মে আসা প্রয়োজন: পরিবেশমন্ত্রী বিডিএস ভূমি ব্যবস্থাপনায় বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনবে: ভূমিমন্ত্রী বিএনপির নিগৃহীত নেতাকর্মীদের তালিকা দিতে হবে: ওবায়দুল কাদের

পদত্যাগ করেও বিএনপিতে প্রভাবশালী ফালু   

– লালমনিরহাট বার্তা নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ১ আগস্ট ২০২১  

মোসাদ্দেক আলী ফালু বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার ঘনিষ্ঠজন। খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত কর্মকর্তা ছাড়াও একান্ত সচিব ছিলেন। তিনি এমপি হয়েছিলেন। খালেদা জিয়ার সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার কারণে বিএনপিতে অনেক প্রভাবশালী এবং গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্বে পরিণত হয়েছিলেন ফালু। কিন্তু বিএনপির গত সম্মেলনের পর যে কমিটি গঠন করা হয়েছিল, সেই কমিটি থেকে তিনি নিজেই পদত্যাগ করেছিলেন।

পদত্যাগের পর রাজনীতির বাইরে থাকার আনুষ্ঠানিক ঘোষণাও দিয়েছিলেন। তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে একাধিক মামলা করে। এসব মামলার পরিপ্রেক্ষিতে মোসাদ্দেক আলী ফালু পালিয়ে সৌদি আরব চলে যান। এখন সেখানে বসবাস করছেন। বাংলাদেশের সঙ্গে তার তেমন কোনো যোগাযোগ নেই। 

রাজনীতিও আনুষ্ঠানিকভাবে করেন না বলেই তিনি জানিয়েছেন। তবে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, এত কিছুর পরও বিএনপিতে এখনো প্রভাবশালী এবং ক্ষমতাবান ব্যক্তি হিসেবেই রয়েছেন মোসাদ্দেক আলী ফালু। খালেদা জিয়ার সাম্প্রতিক অসুস্থতা, তার বিদেশে যাওয়া এবং সম্পদের ভাগ বাটোয়ারা ইত্যাদি ইস্যুতে আবার ফালুর নাম সামনে এসেছে।

জানা গেছে, মোসাদ্দেক আলী ফালু বিএনপির বিভিন্ন নেতার সঙ্গে এখন নিয়মিত যোগাযোগ করছেন। খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার খোঁজখবর নিচ্ছেন। বিএনপির অনেক নেতাই এমন তথ্য দিচ্ছেন।

বিএনপি নেতারা বলছেন, মোসাদ্দেক আলী ফালুর ওপর খালেদা জিয়া বেশি আস্থাশীল। সেজন্য অনেক বিষয়ে ফালুর ওপর তিনি নির্ভর করছেন। দুটি দুর্নীতির মামলায় দণ্ডিত হয়ে খালেদা জিয়া ১৭ বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হয়েছেন।

গত বছরের ২৫ মার্চ সরকারের বিশেষ অনুকম্পায় জামিন পেয়েছেন। সেই জামিনে এখন তিনি রয়েছেন। এর মধ্যে খালেদা জিয়া অসুস্থ হয়ে দীর্ঘদিন হাসপাতালে ছিলেন, করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন। সেই সময় খালেদা জিয়ার পরিবারের সদস্যরা উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে বিদেশে নেয়ার আবেদন করেছিলেন সরকারের কাছে, সেই আবেদন নাকচ হয়ে যায়। 

তবে ওই আবেদনের পরপরই ফালু পাদপ্রদীপে চলে আসেন। খালেদা জিয়াকে শেষ পর্যন্ত লন্ডনে যেতে দেওয়া হবে না এরকম গুঞ্জন যখন শোনা যায়, তখন ফালুর গুরুত্ব বাড়ে বিএনপিতে। শুধু বিএনপি নয় খালেদা জিয়ার পরিবারের সদস্যরাও মোসাদ্দেক আলী ফালুর সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেন।

খালেদা জিয়ার চিকিৎসার দুটি ভাগ রয়েছে। একটি ভাগ লন্ডন এবং যুক্তরাষ্ট্র কেন্দ্রিক। আর অন্যটি সৌদি আরব কেন্দ্রিক। সৌদিতে ফালুর বহু ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে বলে জানা যায়। তার এসব সম্পদের মালিক আসলে তিনি নিজে না খালেদা জিয়া, এ নিয়ে বিএনপির মধ্যেই বিতর্ক রয়েছে। তবে সেই বিতর্ককে পাশ কাটিয়ে খালেদা জিয়ার অসুস্থতার পরিপ্রেক্ষিতে ফালু বিএনপির সঙ্গে যোগাযোগ করেন। খালেদা জিয়া যদি লন্ডনে যাওয়ার অনুমতি না পান, সেক্ষেত্রে সৌদি আরবে যাওয়ার বিকল্প ব্যবস্থাও ফালু করেছিলেন বলে জানা যায়।

বিএনপির অনেকেই মনে করেন, দলে দুটি ধারার একটিতে মুখ্য ভূমিকা পালন করেন মোসাদ্দেক আলী ফালু। ফালুর সঙ্গে একদিকে যেমন তারেক জিয়ার বৈরিতা রয়েছে অন্যদিকে খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে প্রয়াত আরাফাত রহমান কোকোর পরিবারের সঙ্গে সখ্য ছিলো। ফালুর প্রায় প্রতিটি ব্যবসায় কোকো পার্টনার ছিলেন। কোকোর মৃত্যুর পর তার স্ত্রী এসব ব্যবসায় অংশীদার বলে জানা গেছে। আর খালেদা জিয়াকে বিভিন্নভাবে আর্থিক সহায়তা করার ক্ষেত্রেও ফালুর ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

বিএনপির অনেকেই মনে করেন যে, খালেদা জিয়ার বিপুল সম্পত্তির পুরোটাই ফালু রক্ষণাবেক্ষণ করেন। আর এ কারণেই খালেদা জিয়া যখনই অসুস্থ হয়ে যান, তখনই ফালুর গুরুত্ব বাড়ে। আর তাই রাজনীতি না করলেও ফালু সবসময় বিএনপিতে একটা গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টর।

– লালমনিরহাট বার্তা নিউজ ডেস্ক –