• শনিবার ২৭ জুলাই ২০২৪ ||

  • শ্রাবণ ১২ ১৪৩১

  • || ১৯ মুহররম ১৪৪৬

সর্বশেষ:
সর্বোচ্চ আদালতের রায়ই আইন হিসেবে গণ্য হবে: জনপ্রশাসনমন্ত্রী। ২৫ জুলাই পর্যন্ত এইচএসসির সব পরীক্ষা স্থগিত।

জাল দলিল চক্রের মূল হোতা সিআইডির হাতে গ্রেফতার

– লালমনিরহাট বার্তা নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ২০ মে ২০২৪  

লালমনিরহাটে জাল দলিল তৈরির চক্রের মূল হোতা মহুবর রহমানকে জাল দলিলসহ গ্রেফতার করেছে সিআইডি। সোমবার সকালে সদর উপজেলার রাজপুর ইউপির মধুরাম গ্রামের নিজ বাড়ি থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারকৃত মহুবর রহমান ওই গ্রামের মোছাব্বের আলীর ছেলে। একাধিক জমির দলিল জাল করার বিষয়টি সিআইডির প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি স্বীকার করেছেন বলে জানিয়েছেন সিআইডির লালমনিরহাট জেলা অফিসের সহকারী পুলিশ সুপার আব্দুল হাই সরকার। 

সিআইডি ও মামলা সূত্রে জানা গেছে, মুহুবর রহমান প্রতিবেশী তোফাজ্জল হোসেনের রেকর্ডভুক্ত সাড়ে তিন শতাংশ জমি গত বছর ২৬ নভেম্বরে অন লাইনে ১১০-৯৪ নম্বর দলিল মূলে সদর উপজেলা ভূমি অফিসে নিজের নামে খারিজের জন্য আবেদন করেন। বিষয়টি জানতে পেরে তোফাজ্জল হোসেন ওই দলিলটির জাবেদা সাব-রেজিস্টার অফিস থেকে উত্তোলন করে দেখতে পান ওই দলিলটি মহুবর রহমানের নামের দলিল নয় বরং তা মো. জহর উদ্দিন নামে রেজিস্ট্রি সম্পন্ন হয়েছে। একই সঙ্গে তোফাজ্জল হোসেন দলিলের জাবেদা পর্যালোচনা করে দেখতে পান মহুবর রহমান দলিলটির নম্বর ব্যবহার করে জাল জালিয়াতি ও প্রতারণামূলক ভাবে হুবহু আরেকটি দলিল তৈরি করে নামজারীর জন্য আবেদন করেছেন। 

বিষয়টি স্পর্শকাতর হওয়ায় তোফাজ্জল হোসেন জাল দলিল তৈরির অভিযোগে রোববার লালমনিরহাট সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করে সিআইডির সহায়তা চান। অভিযোগ পাওয়ার পর পরই অনুসন্ধানে নামেন সিআইডির লালমনিরহাট ঊর্ধতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে মাঠে নামেন। এরই ধারাবাহিকতায় সোমবার সকালে মহুবর রহমানকে তার নিজ বাড়ি থেকে আটক করে। এ সময় মহুবরের কাছ থেকে ওই জাল দলিলটি উদ্ধার করে সিআইডি। পরে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে একাধিক জাল দলিল তৈরির বিষয়টি মহুবর স্বীকার করেন।

এদিকে অভিযোগ উঠেছে জাল দলিলের মাধ্যমে মহুবর রহমান প্রতিবেশী মোহাম্মদ লিটন, লাভলু মিয়া, আব্দুস সালামসহ অনেকের জমি দখল করেছেন। মহুবর রহমানের দলিল জাল করার অপকর্মে কারণে অতিষ্ঠ এলাকার অনেকে।

প্রতিবেশী লাভলু মিয়া বলেন, আমার এবং আমার জ্যাঠাতো ভাইয়ের ৬১ শতাংশ জমি জাল দলিল দেখিয়ে নিজের নামে খারিজ করার আবেদন করেছিল। পরে এসিল্যান্ড জাল দলিলের বিষয়টি জানতে পেরে খারিজ আটকে দেয়। এরপর আবারো আমাদের আরো একটি জমি তার নামে খারিজ প্রক্রিয়ার শেষ ধাপে ধরা পড়ে যে, দলিলের নম্বর ঠিক থাকলেও দলিলটি মহুবরের না। পরে জানতে পেরে তার বিরুদ্ধে মামলা করেছি।

আরেক প্রতিবেশী আব্দুস সালাম বলেন, আমার পৈতৃক জমি জাল দলিল দেখিয়ে দখল করেছে মহুবর। আমার ছেলে সরকারি চাকরি করে বিধায় মামলা করতে নিষেধ করেছেন। সেই জমি অবৈধভাবে ভোগ করে আসছে মহুবর রহমান। তার কারণে এলাকার অনেকেই অতিষ্ঠ।

মোহাম্মদ লিটন বলেন, মহুবর রহমানের প্রথম জালিয়াতি ধরা পড়ে খুনিয়াগাছ ইউনিয়ন ভূমি অফিসে। তার নিজস্ব ক্যাডার বাহিনী আছে যাদের সহায়তায় সে এলাকার অনেকের জমি দখল করেছে। শুধু তাই নয়, তিস্তার চরের জমিও সে বিভিন্ন ব্যক্তির জমি জাল দলিলের মাধ্যমে দখল করেছে। তার এসব অপকর্মে অতিষ্ঠ এলাকার মানুষ।

সিআইডির লালমনিরহাট অফিসের সহকারী পুলিশ সুপার আব্দুল হাই সরকার বলেন, মহুবর রহমান একাধিক জাল দলিলের বিষয়টি স্বীকার করেছেন। তার বিরুদ্ধে জাল দলিলের আরো একটি মামলা বিচারাধীন রয়েছে। আমরা তাকে আটকের পর স্বীকারোক্তি অনুযায়ী জাল দলিলও উদ্ধার করেছি। আসামিকে এরইমধ্যেই আদালতে প্রেরণ করেছি। এর সঙ্গে কারা জড়িত আছে তা জানতে আদালতের কাছে রিমান্ডের আবেদন করা হবে। 

– লালমনিরহাট বার্তা নিউজ ডেস্ক –