• শনিবার ২৭ জুলাই ২০২৪ ||

  • শ্রাবণ ১২ ১৪৩১

  • || ১৯ মুহররম ১৪৪৬

সর্বশেষ:
সর্বোচ্চ আদালতের রায়ই আইন হিসেবে গণ্য হবে: জনপ্রশাসনমন্ত্রী। ২৫ জুলাই পর্যন্ত এইচএসসির সব পরীক্ষা স্থগিত।

শব্দদূষণ আর ধুলায় ধুসরিত বুড়িমারী স্থলবন্দর 

– লালমনিরহাট বার্তা নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ১৮ মার্চ ২০২৪  

উন্মুক্ত পরিবেশে পাথরভাঙা মেশিনের বিকট শব্দ, সেইসঙ্গে ধুলা আর বালুতে আচ্ছন্ন এলকা। এতে লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার বুড়িমারী স্থলবন্দরসহ আশপাশে জনজীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। অতিষ্ঠ এ স্থলবন্দরের পথচারী থেকে শুরু করে ব্যবসায়ী, শিক্ষার্থী, দেশি-বিদেশি পর্যটকসহ সর্বস্তরের মানুষ। এখানকার বসবাসকারীদের দেখা দিয়েছে নানা রোগের উপসর্গ। স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে রয়েছে হাজার হাজার মানুষ।

দশের অধিক বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, স্থলবন্দর-পাটগ্রাম মহাসড়কের ৫ থেকে ৬ কিলোমিটার ও আঞ্চলিক সড়কের উভয় পাশের ৩ থেকে ৫ কিলোমিটারজুড়ে শত শত পাথরবাহী ভারতীয় ও ভুটানি ট্রাক দ্রুতগতিতে আসা-যাওয়া করে। পরে বসতবাড়ি ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কাছে এসব গাড়ি এনে পাথর ওঠা-নামানো ও ভাঙা হয়।

সরেজমিনে দেখা যায়, স্থলবন্দর এলাকা সংলগ্ন বুড়িমারী হাসর উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়, আমানতুল্যা প্রধান মাধ্যমিক বিদ্যালয়, আলিমুদ্দিন ছবুরউদ্দিন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, সফিয়ার রহমান রেসিডেন্সিয়াল মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ, বুড়িমারী আলিম মাদ্রাসা, বুড়িমারী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, গুড়িয়াটারি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, উফারামারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ একাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কাছে ব্যবসায়ীদের পাথর ভাঙার নির্দিষ্ট জায়গা। সেখানে বসানো হয়েছে একাধিক পাথর ভাঙার (যন্ত্র) মেশিন। এসব জায়গায় প্রতিদিন উচ্চ শব্দে পাথর ভাঙা হয়।

জানা যায়, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোয় অনেক শিক্ষার্থী পড়ালেখা করে। ধুলার কারণে তারা নাক-মুখ ঢেকে বিদ্যালয়ে আসা-যাওয়া করতে বাধ্য হয়। পাথর ভাঙা মেশিনের শব্দে পড়লেখায় মনোনিবেশ করতে পারে না তারা। এ ছাড়া বায়ুদূষণের ফলে শিক্ষার্থীসহ স্থানীয়দের অনেকে শ্বাসকষ্ট, বুকে ব্যথা, সর্দি, অ্যালার্জি, মাথাব্যথাসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। পাশাপাশি এসব মেশিনের টানা শব্দে শ্রবণশক্তির সমস্যা ও অস্বস্তির মধ্যে থাকতে হচ্ছে অনেকে।

বুড়িমারী হাসর উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির ছাত্র আপন বলেন, স্কুল আসা-যাওয়ার করার সময় পোশাকে ধুলা জমে ময়লা হয়ে যায়। মাঝে মধ্যে সর্দিকাশি হয়, মাথাব্যথাও করে।

পাটগ্রাম থানার এসআই মো. রমজান আলী জানান, ‘ইতোমধ্যে পাটগ্রাম থানা-পুলিশের পক্ষ থেকে স্থলবন্দরে নিয়োজিত শ্রমিকসহ স্থানীয় শিক্ষার্থী ও জনসাধারণের মধ্যে মাস্ক ব্যবহারসহ দূষিত পরিবেশ থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য জনসচেতনতামূলক কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।’

পাটগ্রাম আদর্শ কলেজের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক শেখ মোহাম্মদ সহর উদ্দিন বলেন, ‘বায়ু ও পরিবেশদূষণ পরিবেশ অধিদপ্তরের দেখা উচিত। বায়ু দূষিত হলে সবার জন্যই সমস্যা। নিয়মতান্ত্রিকভাবে কাজ করলে শব্দ ও বায়ুদূষণ কম হতো।’

পাটগ্রাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নুরুল ইসলাম বলেন, ‘পাথর ভাঙা মেশিন যথাযথ নিয়ম মেনে বসানো হয়েছে কি না, পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র আছে কি না- এ বিষয়গুলো আমরা দ্রুত দেখব। বায়ু ও শব্দদূষণ রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।’

লালমনিরহাট সিভিল সার্জন ডা. নির্মলেন্দু রায় জানান, ‘ধুলাবালিতে শ্বাসকষ্ট, নিউমোনিয়া, অ্যাজমা, টিবি ও সিলিকোসিস রোগসহ শিশু থেকে বৃদ্ধ সবারই সমস্যা হতে পারে। শব্দদূষণে মাথা ও কানে সমস্যা হয়। শব্দ ও বায়ুদূষণ বন্ধে প্রশাসন ব্যবস্থা নিতে পারে।’ (কালবেলা)

– লালমনিরহাট বার্তা নিউজ ডেস্ক –