• শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৫ ১৪৩০

  • || ১৮ রমজান ১৪৪৫

আদিতমারীতে ১৩ দিন ধরে বিয়ের দাবিতে প্রেমিকের বাড়িতে অনশনে তরুণী

– লালমনিরহাট বার্তা নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ২ মে ২০২৩  

লালমনিরহাটে বিয়ের দাবিতে ১৩ দিন ধরে প্রেমিকের বাড়িতে অনশন করছে নাসরিন সুলতানা নামে এক এসএসসি পরীক্ষার্থী। অনশন করতে গিয়ে অংশগ্রহণ করতে পারেনি এসএসসি পরীক্ষাতেও। মঙ্গলবার সকালে প্রেমিক মিজানুর রহমান মিজানের বাড়িতে ১৪তম দিনে অনশনে থাকতে দেখা যায় নাসরিনকে।

প্রেমিক মিজান লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার বড় কমলাবাড়ি গ্রামের নেওয়াজের ছেলে। আর নাসরিন সুলতানা একই এলাকার নাজিম উদ্দিনের মেয়ে। কিসামত চড়িতাবাড়ি উচ্চ বিদ্যালয়ের মানবিক শাখা থেকে চলতি এসএসসি পরীক্ষার্থী সে।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, দীর্ঘ ৫ বছর আগে নাসরিন সুলতানার সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে মিজানুর রহমান মিজানের। এরই মধ্যে পাশের আদিতমারী কালীস্থান এলাকার লোকমান আলীর ছেলে আল আমিনের সাথে নাসরিনের বিয়ে দেয় পরিবার। বিয়ে হলেও সম্পর্ক অটুট রাখে প্রেমিক মিজান। বিয়ের এক মাসের মধ্যে স্বামীর বাড়ি ছেড়ে বাবার বাড়ি চলে আসে নাসরিন। পড়ালেখার পাশাপাশি নিয়মিত যোগাযোগ রাখে প্রেমিক মিজানের সাথে।
এদিকে নাসরিন সুলতানা স্বামীর বাড়ি না গেলে ৩ বছর আগে স্বামী আল আমিন অন্যত্র বিয়ে করে ঘর সংসার শুরু করে। নাসরিনকে বিয়ের প্রলোভন দিয়ে দীর্ঘ ৫ বছর ধরে সম্পর্ক চালিয়ে যায় প্রেমিক মিজান। প্রেমের সম্পর্ক থেকে শারীরিক সম্পর্কেও জড়ায় তারা।

প্রেমিক মিজান নাসরিনকে ফাঁকি দিয়ে গত ৪ মাস ধরে গোপনে সাবিনা আক্তার নামে আরেক মেয়ের সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে। গত ১৬ এপ্রিল বিয়ের দাবিতে মিজানের বাড়িতে অনশন শুরু করে দ্বিতীয় প্রেমিকা সাবিনা আক্তার। প্রেমিক মিজানের অনুরোধে ওই বাড়িতে গিয়ে দ্বিতীয় প্রেমিকাকে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেয় নাসরিন।

এরপর প্রেমিক মিজান ও তার পরিবারের কথা মতো প্রথম স্বামী আল আমিনকে গত ১৮ এপ্রিল তালাক দেন নাসরিন। তবে পরদিন রাতেই দ্বিতীয় প্রেমিকা সাবিনাকে বিয়ে করেন প্রেমিক মিজান। খবর শুনে ওই দিন মিজানের বাড়িতে বিয়ের দাবিতে অনশন শুরু করে প্রথম প্রেমিকা নাসরিন সুলতানা। তাকে দেখে নতুন বউসহ মিজানকে বাড়ি থেকে পালিয়ে দেয় তার পরিবার।

এদিকে অনশনে বিয়ের দাবি ছাড়েননি নাসরিন। প্রেমিক মিজানের বাড়ির উঠানেই রাত কাটছে তার। রবিবার এসএসসি পরীক্ষা শুরু হলে তাকে পরীক্ষা দিতে যেতে দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ নাসরিনের।

অনশনে থাকা নাসরিন জানায়, আমার সাথে ছেলের বিয়ে দেবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়ে মিজানের বাবা আমার সহায়তায় সাবিনাকে অনশন থেকে সরায়। মিজান ও তার বাবার কথায় প্রথম স্বামীকে তালাক দিয়েছি। তারা পুরো পরিবার দীর্ঘ ৫ বছর ধরে আমাদের সম্পর্কের কথা জানে। মেনে নিতে চেয়েও সাবিনার পরিবারের দেওয়া ৫ লাখ টাকা যৌতুকে তাকে বিয়ে করে। আমাকে পরীক্ষাও দিতে দেয়নি। সাদা কাগজে স্বাক্ষর না দিলে পরীক্ষার হলে যেতে দেয়নি মিজানের পরিবার। প্রেমিককে স্বামী হিসেবে পেতে পরীক্ষা দিতে যাওয়া হয়নি। মিজানের সাথে বিয়ে না হলে আত্মহত্যা করবে বলে জানায় নাসরিন।

আদিতমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোজাম্মেল হক বলেন, আইনি জটিলতার কারণে বিষয়টি স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও গণ্যমান্য ব্যক্তিরা আপসের চেষ্টা করছেন। পরীক্ষা দিতে দেওয়া হয়নি বিষয়টি থানায় অবগত করলে পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌঁছানোর ব্যবস্থা করা হতো।

– লালমনিরহাট বার্তা নিউজ ডেস্ক –