• বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৪ ১৪৩০

  • || ১৭ রমজান ১৪৪৫

পরিত্যক্ত প্লাস্টিকে প্রতিবন্ধী রফিকুলের ভাগ্য বদল

– লালমনিরহাট বার্তা নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ১ মার্চ ২০২৩  

সংসারে অভাব-অনটনের কারণে বেশিদূর পড়াশোনা করতে না পারা দৃষ্টি প্রতিবন্ধী রফিকুল ইসলাম ইসলাম এখন প্লাস্টিক কারখানার মালিক। বর্তমানে তার কারখানায় ১৫-২০ জন কর্মচারী কাজ করছেন। কুড়িগ্রাম বিসিক শিল্প এলাকায় ভাই ভাই প্লাস্টিক কারখানার মালিক তিনি।

লালমনিরহাটের আদিতমারী থানার সাপটিবাড়ি ইউনিয়নের খাতাপাড়া মাজার গ্রামের আব্দুস ছাত্তার ব্যাপারীর মেজো ছেলে রফিকুল। অদম্য ইচ্ছাশক্তির ফলে সমাজের বোঝা না হয়ে তিনি এখন সফল ব্যবসায়ী।

সফলতার গল্প জানতে চাইলে রফিকুল বলেন, আমি ছোটবেলা থেকে বড় ভাই শহিদুল ইসলামের সঙ্গে পরিত্যক্ত প্লাস্টিক পণ্য কুড়িয়ে বাজারে বিক্রি করতাম। পরে বড় ভাই ভাঙারি কাঁচামালের ব্যবসা শুরু করেন। স্কুলের পড়াশোনার পাশাপাশি ভাইয়ের ব্যবসায় সময় দিতাম।

তিনি বলেন, এসএসসি পাসের পর আমার দুই চোখ অন্ধ হয়ে যায়। এতে পড়াশোনা বন্ধ করে ভাইয়ের ব্যবসায় মনযোগী হই। সেখান থেকে পরিত্যক্ত প্লাস্টিক পণ্যের বাজার, ভাঙাচোরা মালামালের গ্রেড, প্লাস্টিকের কাটিং পদ্ধতি, বাজারজাতকরণের প্রক্রিয়াসহ ঢাকার ব্যবসায়ীদের সঙ্গে পরিচয় হয়। এরপর সামান্য টাকা দিয়ে নিজের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে কুড়িগ্রামে এসে ব্যবসা শুরু করি। এখন আমি সমাজের বোঝা না, একজন সফল ব্যবসায়ী। এ প্লাস্টিকের ব্যবসা থেকে আমার ভালো আয় হচ্ছে।

রফিকুল আরও বলেন, আমি অন্ধ হওয়ায় সরকারি-বেসরকারি ব্যাংকগুলো কোনো ঋণ বা সহযোগিতা করেনি। একমাত্র বিসিক আমাকে বিভিন্নভাবে অর্থনৈতিক সহযোগিতা করেছে।

রফিকুলের কারখানার কর্মচারী মো. রাজু আহমেদ বলেন, আমি ১২ বছর ধরে এ কারখানায় কাজ করছি। আমার মতো ১৫-২০ জন নারী-পুরুষ এ কারখানায় কাজ করে সংসার চালায়। প্রতি মাসে ১৫-২০ হাজার টাকা পাই। এখানে কাজ করে আমাদের সংসারে সচ্ছলতা ফিরেছে।

আরেক কর্মচারী মো. হাফিজুর রহমান বলেন, রফিকুল ভাইয়ের প্লাস্টিক কারখানায় দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছি। আমরা বাইরে থেকে সংগ্রহ করা প্লাস্টিকের নষ্ট পণ্য হিট মেশিনে কাটিং করে বস্তা প্যাকিং করি। এতে মাসে যা বেতন পাই, ভালোভাবে সংসার চলে।

বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন (বিসিক) কুড়িগ্রামের উপ-ব্যবস্থাপক মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আমাদের বিসিক শিল্প এলাকায় ভাই ভাই প্লাস্টিক কারখানার মালিক রফিকুল ইসলাম। তিনি মূলত পরিত্যক্ত প্লাস্টিক সামগ্রী কিনে প্রসেসিং করে নতুন প্লাস্টিক পণ্য তৈরির উপযোগী করার কাজ করেন। বর্তমানে তিনি একজন সফল ব্যবসায়ী। দৃষ্টি প্রতিবন্ধী হওয়ায় আমরা তাকে আর্থিক সহযোগিতাসহ বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করে আসছি।

– লালমনিরহাট বার্তা নিউজ ডেস্ক –