• বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১১ ১৪৩১

  • || ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

সর্বশেষ:
যুদ্ধের অর্থ জলবায়ু পরিবর্তনে ব্যয় হলে বিশ্ব রক্ষা পেত- প্রধানমন্ত্রী দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ উৎপাদনের রেকর্ড মেডিকেল কলেজের ক্লাস অনলাইনে নেয়ার নির্দেশ স্বাস্থ্যমন্ত্রীর ‘গণতান্ত্রিক রীতিনীতি না মানলে জনগণই বিএনপিকে প্রতিহত করবে’ লালমনিরহাটে হত্যা মামলায় বিএনপির দুই নেতা কারাগারে

লালমনিরহাটে তীব্র তাপদাহে বিপর্যস্ত জনজীবন

– লালমনিরহাট বার্তা নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ১৭ জুলাই ২০২২  

লালমনিরহাটে তীব্র তাপদাহে বিপর্যস্ত জনজীবন                           
প্রচণ্ড গরম আর তাপদাহে সারাদেশে বিপর্যস্ত সাধারণ মানুষ। তীব্র গরমে অসুস্থ হয়ে পড়ছে শিশু ও বৃদ্ধসহ অনেকেই। গত কয়েকদিনের তীব্র গরমে নাজেহাল লালমনিরহাটের মানুষ। তবে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তি পোহাচ্ছেন শ্রমজীবী মানুষ। এদিকে, জুলাইয়ে লালমনিরহাটে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

লালমনিরহাট সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, এই অসহ্য গরমের কারণে হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত রোগী বেশি হয়। যদিও আমাদের হাসপাতালে এখন পর্যন্ত হিট স্ট্রোকের কোনো রোগী আসেনি। তবে তাপমাত্রা অতিরিক্ত হওয়ায় জ্বর-সর্দি ও ডায়রিয়ার প্রকোপ বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রচণ্ড গরম থেকে বাঁচতে বেশি বেশি পানি পান করার পাশাপাশি খুব প্রয়োজন না হলে রোদে না যাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা।

জেলা শহরের ভ্যান চালক রবিউল হাসান জানান, অসহ্য গরমে শরীর জ্বালাপোড়া করে, মাথা ঘোরায়। মনে হয় এই বুঝি অজ্ঞান হয়ে যাব। তারপরেও পেটের দায়ে সংসারের সদস্যদের খাওয়ার যোগান দিতে তাকে ভ্যান নিয়ে বাহিরে বের হতে হয়।

অটোরিকশা চালক সাহেব আলী বলেন, পরিবারে সাতজন সদস্য। একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি তিনি। তাই খুব সকালে অটোরিকশা নিয়ে বাহির হয়ে যে টাকা উপার্জন হয় তা নিয়েই ১০টার দিকে বাড়িতে চলে আসি। রোদের যে তাপ মনে হচ্ছে গায়ের চামড়া পুড়ে যাচ্ছে। এতে গত কয়েকদিনে আমার সংসারে অভাব বেড়ে গেছে। যদিও ভ্যান পায়ে ঠেলতে হয় না তবুও রোদের কারণে রাস্তায় থাকাটাই কঠিন হয়ে পড়েছে। 

কাপড় ব্যবসায়ী আব্দুল আউয়াল জানান, গরমের কারণে বেচাকেনা দিনের বেলায় অনেক কমে গেছে। দিনে মানুষ কম বের হচ্ছে বাসা থেকে। তাই সারাদিন দোকানের ফ্যানের নিচে বসে থেকে সময় কাটাতে হচ্ছে। এভাবে তীব্র তাপদাহ চলতে থাকলে হয়তো ব্যবসা বন্ধ করে দিতে হবে।

কৃষক লুৎফর রহমান বলেন, এই ভরা বর্ষাকালে আমাদের মাঠে পানি নেই। আষাঢ় শেষ হয়ে শ্রাবণের আগমন হলেও তবুও নেই বৃষ্টির দেখা। এ সময় আমন ধান লাগানোর জন্য জমি প্রস্তুত করতে হয়। জমিতে পানি না থাকায় আমরা হালচাষ করতে পারছি না। পানির অভাবে জমি ভেটে যাচ্ছে। 

লালমনিরহাট সিভিল সার্জন নির্মলেন্দু রায় জানান, সকালে দিকেই তাপমাত্রা অতিরিক্ত হওয়ায় লালমনিরহাটে অস্বাভাবিক গরম অনুভব হচ্ছে। এ অস্বাভাবিক আবহাওয়ায় প্রয়োজন ছাড়া কাউকে বাড়ি থেকে বের না হওয়ার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। বিশেষ করে স্কুলের শিক্ষার্থীদের আরো সতর্কভাবে চলাফেরা করার পরামর্শও দেন তিনি। 

দুপুরের পর কোনো অবস্থাতেই যেন বাইরে তাদের না থাকতে হয় সেভাবেই শিক্ষকদের পদক্ষেপ নেওয়ার পরামর্শ দেন তিনি। এ সময় বেশি করে পানি পান, ঠাণ্ডা জাতীয় পানীয় বিশেষ করে লেবুর শরবত, ডাবের পানি বেশি করে পান করার পরামর্শ দেন।

 রাজারহাট আবহাওয়া কার্যালয়ের তত্বাবধায়ক অপুর্ব রায় জানান, সূর্য কিরণ লম্বালম্বিভাবে আসায় তীব্র গরম অনুভব হচ্ছে। বিশেষ করে গরম বাতাস মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রাকে ব্যাহত করছে। এ তাপমাত্রা আরো ২-৩ দিন অব্যাহত থাকতে পারে। এছাড়া লালমনিরহাট ও কুড়িগ্রামে বেশ কিছুদিন ধরে বৃষ্টি নেই। গরম আরো থাকবে সপ্তাহখানেক। জুলাই মাসে লালমনিরহাটে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

– লালমনিরহাট বার্তা নিউজ ডেস্ক –