• শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৬ ১৪৩১

  • || ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

সর্বশেষ:
বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার অন্যতম নকশাকার বীর মুক্তিযোদ্ধা শিব নারায়ণ দাস, আজ ৭৮ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেছেন। বন্যায় দুবাই এবং ওমানে বাংলাদেশীসহ ২১ জনের মৃত্যু। আন্তর্জাতিক বাজারে আবারও বাড়ল জ্বালানি তেল ও স্বর্ণের দাম। ইসরায়েলের হামলার পর প্রধান দুটি বিমানবন্দরে ফ্লাইট চলাচল শুরু। ইসরায়েল পাল্টা হামলা চালিয়েছে ইরানে।

চার বছরের শিশু মাকে খুঁজছে বাবার কোলে চড়ে

– লালমনিরহাট বার্তা নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ৮ ফেব্রুয়ারি ২০২২  

চার বছরের শিশু লামিয়া আক্তার। মাকে প্রায় ২৫ দিন ধরে দেখতে না পেয়ে কান্না থামছে না তার। ঘুমের ঘরেই ‘আম্মু আম্মু’ বলে ডাকছে লামিয়া। খাওয়া বন্ধ করে দিয়েছে শিশুটি। তাই বাবা সোহেল মিয়ার কোলে চড়ে মাকে খুঁজতে ঢাকা থেকে ছুটে এসেছে লালমনিরহাটের আদিতমারীতে। কিন্তু মায়ের খোঁজ পেয়েও পুলিশের সহযোগিতা না পাওয়ায় ঢাকায় ফিরে যেতে হলো শিশুটিকে।

সোমবার (০৭ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় লালমনিরহাটের আদিতমারী থানার সামনে বাবা সোহেল মিয়ার কোলে শিশু লামিয়া আক্তারকে দেখা যায়। এর আগে গত শনিবার (০৫ ফেব্রুয়ারি) সকালে ঢাকা থেকে লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলায় আসেন শিশু লামিয়ার বাবা সোহেল মিয়া ও নানি রিনা বেগম।
 
জানা গেছে, সোহেল মিয়া ও বন্যা আক্তার বিথী দম্পতি ঢাকার উত্তর শাহজাহানপুর এলাকায় বসবাস করতেন। ছয় বছর আগে তাদের বিয়ে হয়। বিয়ের পর একটি ফুটফুটে কন্যার জন্ম দেন বিথী। এরপর সুখের সংসার ছিল তাদের। গত ১৬ জানুয়ারি চার বছরের শিশু লামিয়াকে ছেড়ে মা বন্যা আক্তার বিথী লালমনিরহাটের যুবক মাসুম মিয়ার হাত ধরে চলে আসেন লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার ভাদাই ইউনিয়নের বারোঘড়িয়া গ্রামের সজিব বাজার এলাকায়। এর মধ্যে কেটে যায় ২০-২২ দিন। এর পর মায়ের খোঁজ পেয়ে ঢাকা থেকে বাবার কোলে চড়ে লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলায় আসে শিশু লামিয়া। দুই দিন পর খোঁজ মেলে যুবক মাসুম মিয়ার বাড়ির। স্ত্রীকে ফেরত চান সোহেল মিয়া। কিন্তু মাসুম মিয়ার বাবা বিথীর বিষয়ে কোনো তথ্য দেননি।

এরপর ওই দিন আদিতমারী থানায় যায় শিশু লামিয়াসহ পুরো পরিবার। কিন্তু পুলিশকে না জানিয়ে ওই বাড়িতে যাওয়ায় আদিতমারী থানার ওসি তাদের ওপর ক্ষেপে যান। পরে তারা ভয়ে থানা থেকে বেরিয়ে ঢাকায় ফিরে যান।

মাসুম মিয়া (২৫) লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলায় ভাদাই ইউনিয়নের বারোঘড়িয়া গ্রামের সজিব বাজার এলাকার আব্দুল কুদ্দুস মিয়ার ছেলে।

বন্যা আক্তার বিথীর মাত্র আট বছর বয়সে বাবা আব্দুল করিম ও মা মিনোয়ারা বেগম মারা যান। সে থেকেই বিথী ফুফু মিনা বেগমের কাছে বড় হন। পরে ফুফু মিনা বেগম তার বিয়ে দেন সোহেল নামে এক যুবকের সঙ্গে। 

বিথীর ফুফু মিনা বেগম বলেন, ভাতিজির সন্ধান পেয়ে লালমনিরহাটের আদিতমারীতে ছুটে এসেছি। কিন্তু ওই যুবকের বাড়িতে গেলে তার বাবা ছেলের ঠিকানা দেননি। ঢাকায় গিয়ে আইনের আশ্রয় নিব। চার বছরের শিশুকে ছেড়ে কোনো মা অন্যের হাত ধরে আসতে পারে না। তাকে অপহরণ করা হয়েছে।

সোহেল মিয়া বলেন, আমার স্ত্রী বন্যা আক্তার বিথী ভুল করে লালমনিরহাটে চলে এসেচে। আমি আমার স্ত্রীকে ফিরে নিতে এসেছিলাম। মেয়ে লামিয়ার মুখ দেখে যদি সে ফিরে যায়, তাহলে আমি তাকে নিয়ে আবার সংসার করতে রাজি আছি। আমার স্ত্রীকে আমি ফিরত চাই। কিন্তু ওই যুবকের বাবা ছোট্ট শিশুটির মুখ দেখেও আমার স্ত্রীকে ফেরত দেয়নি। থানায় গিয়েও কোনো সহযোগিতা পেলাম না। আমি এখন এই সন্তান নিয়ে কোথায় যাব?

এ বিষয়ে আদিতমারী থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোক্তারুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন বলেন, তারা গত শনিবার থানায় এসেছিল। সেদিন তাদের বুঝিয়ে পাঠিয়ে দিয়েছি। তারা খোঁজ পেলে আমাদের জানালে উদ্ধার করে দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছি।

তিনি বলেন, থানায় বিষয়টি আগে না জানিয়ে ওই যুবকের বাড়িতে যাওয়াতে শুধু প্রশ্ন করা হয়েছিল। ঢাকায় যেহেতু নিখোঁজের জিডি করেছে, তাই তাদের আগে থানায় আসা প্রয়োজন ছিল। এর বাহিরে কিছু বলিনি। 

– লালমনিরহাট বার্তা নিউজ ডেস্ক –