• বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১২ ১৪৩১

  • || ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

সর্বশেষ:
ছয়দিনের সফরে ব্যাংককে পৌঁছেছেন প্রধানমন্ত্রী গরমে ‘অতি উচ্চ ঝুঁকিতে’ বাংলাদেশের শিশুরা: ইউনিসেফ গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা: বেরোবি কেন্দ্রের পরীক্ষার্থী ৩১ হাজার ৯৪৬ জন বাংলাদেশ-ভারত ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করবে: ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী কাতারের আমিরের সফরে যা পেল বাংলাদেশ

হাতীবান্ধায় মিন্টু চন্দ্র বর্মণের বাড়িতে চলছে শোকের মাতম 

– লালমনিরহাট বার্তা নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ১০ আগস্ট ২০২১  

লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার টংভাঙ্গা ইউনিয়নের বাড়াইপাড়া গ্রামে মিন্টু চন্দ্রের বাড়িতে এখন চলছে শোকের মাতম। তার স্বজনরা কেউই কান্না থামাতে পারছেন না। ছোট ভাই মাটিতে পড়ে আর্তনাদ করছেন। ছেলেকে হারিয়ে বাবা সরদ চন্দ্র বর্মণ যেন কথা বলার শক্তি হারিয়ে ফেলেছেন। নির্বাক হয়ে চেয়ে দেখছেন শুধু।

কান্নাজড়িত কণ্ঠে ত্রিবিনি বালা বলেন, ‘ঈদের সাতদিন আগেও আমার সঙ্গে মোর বাবা কথা কইছে। এবার ঈদে বাড়ি আসলে মোর জন্য শাড়ি আনবে বলছিল।’ ‘মোর বাবার কি অপরাধ, মুই বাবাক চাং। মোর বাবারে টুকরা টুকরা করছে, মুই ওমার ফাঁসি চাং। মোর বাবার কি অপরাধ?’ এভাবেই আর্তনাদ করে কান্নায় ভেঙে পড়েন সাভারে নিহত মিন্টু চন্দ্র বর্মণের মা ত্রিবিনি বালা (৬২)।

সরদ চন্দ্র আর ত্রিবিনা বালার পাঁচ ছেলে। সবার বড় মিন্টু চন্দ্র। অনেক কষ্টের সংসার তাদের। বর্তমানে নিজেদের জায়গা জমি বলতে কিছুই নেই। অন্যের জমি আবাদ করে চলে সংসার। ১০ বছর আগে বাবার ৮ বিঘা জমি বিক্রি করে ঢাকায় চাকরির খোঁজে যান মিন্টু। সেখানে প্রতারণার শিকার হয়ে বাড়ি ফিরে আসেন।

এক বছর বাড়িতে থাকার পর আবারও ঢাকায় যান তিনি। এরপর সাভারের আশুলিয়ার জামগড়া এলাকায় প্রাইভেট পড়ানো শুরু করেন। এরপর গাইবান্ধার রবিউল ইসলাম ও মোতালেবের সঙ্গে সাভার রেসিডেন্সিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ প্রতিষ্ঠা করেন মিন্টু।

হাতীবান্ধা এসএস সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ২০০০ সালে এসএসসি পাস করেন মিন্টু। হাতীবান্ধা আলিমুদ্দিন সরকারি কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করে রংপুর কারমাইকেল থেকে অনার্স শেষ করেন।

প্রতিবেশী আশাদুল বলেন, ‘মিন্টু ভাইকে তার বাবা অনেক কষ্ট করে পড়াশোনা করান। তিনি একজন মেধাবী ছাত্র ছিলেন। যারা তাকে হত্যা করেছেন তাদের আমরা দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।’

মিন্টু চন্দ্রের চাচাতো বোন অঞ্জলী রানী বলেন, ‘বড় চাকরি দেয়ার কথা বেলে আমার ভাইকে ফাঁসানো হইছে। মোর ভাইয়ের হত্যাকারীর ফাঁসি চাই।’

উল্লেখ্য, গত ১৩ জুলাই আশুলিয়ার জামগড়া সংলগ্ন চারতলা এলাকার নিজ বাসা ‘স্বপ্ন নিবাস’ থেকেই নিখোঁজ হন সাভার রেসিডেন্সিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ মিন্টু চন্দ্র বর্মণ। এরপর থেকে তার ব্যবহৃত মুঠোফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়। দীর্ঘ ৯ দিন বিভিন্ন জায়গায় খোঁজ করে অবশেষে ২২ জুলাই আশুলিয়া থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করেন মিন্টুর ছোট ভাই দীপক চন্দ্র বর্মণ। ২৮ দিন পর সোমবার (৯ আগস্ট) দুপুরে উপজেলার বেরন এলাকার নিজ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মাটির নিচে পুঁতে রাখা অবস্থায় খণ্ডিত মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

এ ঘটনায় তিনজনকে গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠায় পুলিশ।

– লালমনিরহাট বার্তা নিউজ ডেস্ক –