• শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৬ ১৪৩১

  • || ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

সর্বশেষ:
ইসরায়েলের হামলার পর প্রধান দুটি বিমানবন্দরে ফ্লাইট চলাচল শুরু। ইসরায়েল পাল্টা হামলা চালিয়েছে ইরানে।

আজ আন্তর্জাতিক ইশারা ভাষা দিবস

– লালমনিরহাট বার্তা নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২২  

প্রতি মাসের নির্দিষ্ট কিছু দিনে বিভিন্ন দেশে কিছু দিবস পালিত হয়। ঐ নির্দিষ্ট দিনে অতীতের কোনো গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাকে স্মরণ করা বা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে জনসচেতনতা তৈরি করতেই এই সব দিবস পালিত হয়। পালনীয় সেই সব দিবস গুলোর মধ্যে একটি হলো আন্তর্জাতিক ইশারা ভাষা দিবস।

২৩ সেপ্টেম্বর, আজ আন্তর্জাতিক ইশারা ভাষা দিবস এবং ২৪ থেকে ২৯ সেপ্টেম্বর ‘আন্তর্জাতিক বধির সপ্তাহ’ বিশ্বের সব দেশের মতো বাংলাদেশেও কেন্দ্রীয় ও দেশব্যাপী একযোগে উদযাপিত হয়েছে। দিবসটি পালন করার মূল উদ্দেশ্য হলো শ্রবণসংক্রান্ত সমস্যায় ভোগা মানুষদের পাশে দাঁড়ানো এবং তাদের সাহায্যার্থে জনসচেতনতা গড়ে তোলা।

সারা বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে থাকা বধির মানুষদের জন্য ইশারা ভাষার উৎপত্তি। ইশারা ভাষা হলো মানুষের মধ্যে অন্যতম প্রাচীন যোগাযোগের মাধ্যম। যখন কথ ভাষার প্রচলন ঘটেনি তখন ইশারার মাধ্যমেই মানুষ একে অপরের সঙ্গে যোগাযোগ গড়ে তুলত। ইশারা ভাষা হলো এক রকমের দৃশ্য নির্ভর ভাষা। হাতের, শরীরের এবং মুখের নানা ভঙ্গিমার মাধ্যমে এই ভাষা ব্যক্ত করা হয়।

ট্রেনে-বাসে প্রায়ই কয়েকজন স্কুল ছাত্রদের কথা বলতে দেখবেন ইশারায়। এবার প্রশ্ন হলো ট্রেনে বা বাসেই কেন? সব উত্তর পাবেন এই প্রতিবেদনে। খেয়াল করলে দেখতে পাবেন তারা কিন্তু আপনার দিকে তাকাচ্ছে না কিন্তু আপনি অবাক হয়ে তাদের দিকে তাকাচ্ছেন। ছোট ছোট স্কুলছাত্ররা ইশারা করে নিজেদের মধ্যেই গল্প করছে আর হেসে চলেছে। ওদের ভাষা আমরা সামান্য সাধারন মানুষ হয়ে কজনই বা বুঝতে পারি। বিশেষ করে যারা শুনতে পান না এবং কথা বলতে পারেন না তাদেরকে আমাদের সমাজ প্রায় তাচ্ছিল্যের চোখেই দেখে।

মফস্বলের অলিতে গলিতে আপনি যেকোনো একটি বিদ্যালয় পেয়ে যাবেন, কিন্তু এই বিশেষভাবে সক্ষম বাচ্চাদের জন্য বিদ্যালয় খুঁজতে অনেককে প্রায় নাজেহাল হতে হয়। অনেকের বাবা-মা তাদের এই সন্তানদের মানুষের মতো মানুষ করবেন বলে দূরদূরান্তের বিশেষ স্কুলগুলোতে পাঠান শিক্ষালাভের জন্য। একটু খেয়াল করলেই দেখতে পাবেন অনেকের সঙ্গেই বাড়ির লোক থাকে।

মাত্র দুই শতাংশ মানুষের সাংকেতিক ভাষা জ্ঞান
পৃথিবীতে প্রায় সাত কোটির বেশি বধির মানুষের বসবাস রয়েছে, যার মধ্যে ৮০ শতাংশেরও বেশি মানুষ উন্নয়নশীল দেশগুলোতে বাস করেন। তাই এক্ষেত্রে সাংকেতিক ভাষা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আসলে আমাদের সমাজ পরিবেশের সঙ্গে একটি বিশেষ সক্ষম শিশুকে মানিয়ে নেওয়াটা বড় চ্যালেঞ্জের ব্যাপার। আমাদের সমাজে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সহযোগিতার বদলে তাদের জন্য রেখে দেয় নানান বাধা এবং কটু কথা। এই ৮০ শতাংশের মানুষের মধ্যে মাত্র দুই শতাংশ মানুষ সাংকেতিক ভাষা ব্যবহার করতে পারেন, যা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যের বিষয়।

কেন পালন করা হয় এই দিবস ?
১৯৫১ খ্রিস্টাব্দের এই ২৩শে সেপ্টেম্বর তারিখে 'ওয়ার্ল্ড ফেডারেশান অফ দ্য ডীফ' গঠিত হয়েছিল। ২০১৭ সালের ডিসেম্বর মাসে বধির মানুষদের অধিকারকে আরো দৃঢ় করতে রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ পরিষদ আন্তর্জাতিক ইশারা ভাষা দিবস বা সাংকেতিক ভাষা দিবসের উপর গুরুত্ব আরোপ করে। তারপর ২০১৮ সাল থেকে ২৩ শে সেপ্টেম্বর বিশ্বজুড়ে পালন করা হয় এই বিশেষ দিবস। যদিও ইশারায় এমন একটি ভাষা যা কথ্য ভাষার অনেক আগে থেকেই অর্থাৎ সেই আদিম যুগ থেকে মানুষ ব্যবহার করে আসছে। অথচ সেই ভাষা ব্যবহারকারী মানুষদের সমাজ অপাংক্তেয় করে রেখেছে।

– লালমনিরহাট বার্তা নিউজ ডেস্ক –