• বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১১ ১৪৩১

  • || ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

সর্বশেষ:
যুদ্ধের অর্থ জলবায়ু পরিবর্তনে ব্যয় হলে বিশ্ব রক্ষা পেত- প্রধানমন্ত্রী দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ উৎপাদনের রেকর্ড মেডিকেল কলেজের ক্লাস অনলাইনে নেয়ার নির্দেশ স্বাস্থ্যমন্ত্রীর ‘গণতান্ত্রিক রীতিনীতি না মানলে জনগণই বিএনপিকে প্রতিহত করবে’ লালমনিরহাটে হত্যা মামলায় বিএনপির দুই নেতা কারাগারে

আপাতত গ্যাসের দাম বাড়ছে না   

– লালমনিরহাট বার্তা নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ২০ জানুয়ারি ২০২২  

আবাসিক ও বাণিজ্যিক-সব ধরনের গ্যাসের দাম দ্বিগুণ বা তার চেয়ে বেশি বাড়াতে বিতরণ সংস্থাগুলো যে প্রস্তাব দিয়েছিল, তা গ্রহণ করেনি বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন-বিইআরসি। বিভিন্ন বিতরণ কোম্পানি থেকে দেয়া প্রস্তাব নিয়ে জনমনে উদ্বেগ তৈরির মধ্যে বুধবার সন্ধ্যায় বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিআইআরসির সদস্য মকুবল-ই-ইলাহী চৌধুরী।

ভর্তুকি সামাল দিতে সরকার গ্যাসের দাম বাড়ানোর উদ্যোগ নিতে নির্দেশ দেওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে গত সপ্তাহে কয়েকটি বিতরণ সংস্থা গ্যাসের দাম ১১৭ শতাংশ বাড়ানোর প্রস্তাব দেয়। গত সপ্তাহে তিতাস, বাখরাবাদ ও পশ্চিমাঞ্চল গ্যাস কোম্পানি আবাসিকের ক্ষেত্রে দুই চুলায় ৯৭৫ থেকে বাড়িয়ে ২ হাজার ১০০ টাকা, মিটার আছে এমন চুলায় প্রতি ঘনমিটার ১২ টাকা ৬০ পয়সা থেকে ২৭ টাকা ৩৭ পয়সা করতে চেয়েছিল।

এছাড়া বিদ্যুৎ ও সার উৎপাদনে ব্যবহৃত গ্যাসের দাম ঘনমিটার প্রতি ৪ টাকা ৪৫ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ৯ টাকা ৬৬ পয়সা, শিল্প খাতে ১০ টাকা ৭০ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ২৩ টাকা ২৪ পয়সা, ক্যাপটিভে (শিল্পকারখানায় নিজস্ব বিদ্যুৎ উৎপাদনে ব্যবহৃত গ্যাস) ১৩ টাকা ৮৫ পয়সার স্থলে ৩০ টাকা, যানবাহনে ব্যবহার করা গ্যাসের দাম ৩৫ টাকা থেকে ৭৬ টাকা ৪৮ পয়সা করার প্রস্তাব দেয়া হয়।

নভেম্বরে ডিজেলের দাম এক লাফে ১৫ টাকা বাড়ানোর প্রতিক্রিয়ায় পরিবহন ভাড়া বৃদ্ধির ইস্যুতে এমনিতেই জেরবার দেশবাসী নতুন করে গ্যাসের দাম বাড়ানোর প্রস্তাবে উদ্বিগ্ন হয়ে উঠে। গ্যাসের দাম বাড়লে বিদ্যুতের দাম ছাড়াও সারসহ নানা পণ্যের দাম ও সিএনজিচালিত পরিবহনের ভাড়া আবার বেড়ে মানুষের ব্যয় বাড়িয়ে দিত। বিশেষভাবে উদ্বেগ তৈরি হয় শহর এলাকায় রান্নার খরচ বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কার কারণে।

জ্বালানির দাম বাড়ানোর ক্ষেত্রে বিইআরসির ভূমিকা রয়েছে। উৎপাদক ও বিতরণ সংস্থাগুলো এর কাছে প্রস্তাব রাখার পর তারা সেগুলো পরীক্ষা নিরীক্ষা করার পাশাপাশি ভোক্তা প্রতিনিধিসহ গণশুনানির আয়োজন করে। এরপর তারা একটি সিদ্ধান্ত নেয়। সরকার সেই অনুযায়ী আদেশ জারি করে।

বিইআরসি মনে করছে, গ্যাসের দাম বাড়ানোর এই প্রস্তাব বিধিসম্মত হয়নি। তাই সেগুলো আপাতত গ্রহণ করা হয়নি।

সংস্থাটির সদস্য মো. মকুবল-ই-ইলাহী চৌধুরী বলেন, ‘যারা প্রস্তাব দিয়েছিল তাদের কাছে শোনেন কেন এই দাম বাড়াতে হবে? প্রস্তাব করতে গেলে কিছু নিয়ম মানতে হয়। যেমন, কেন দাম বাড়ানো হবে, কী কারণে বাড়ানো হবে। তারা যে দাবি তুলেছে তা আমরা প্রস্তাব হিসেবেই গ্রহণ করিনি।’ গ্যাসের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব আপাতত ফেরানো হলেও অদূর ভবিষ্যতে কী হবে, সেটা বলা কঠিন। দেশে এখন গ্যাসের চাহিদা দৈনিক ৪২০ কোটি ঘনফুট। তবে করা হয় প্রায় ৩০০ কোটি ঘনফুট। এর মধ্যে ১০০ কোটি ঘনফুট গ্যাস এলএনজি আকারে বিদেশ থেকে আমদানি করা হয়।

এই এলএনজির দাম আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ব্যাপকহারে বেড়েছে। প্রতি ঘনমিটার এলএনজি আমদানি ব্যয় বাবদ খরচ হচ্ছে ৫০ টাকা ৩৮ পয়সা। অথচ দেশে প্রতি ঘনমিটার গ্যাস বিক্রি হচ্ছে ৯ টাকা ৩৬ পয়সা। এক বছর আগেও আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতি ঘনফুট এলএনজির দাম ছিল ১০ ডলারের আশেপাশে।

আন্তর্জাতিক বাজারে দর বৃদ্ধির কারণে জ্বালানি খাতে সরকারকে বিপুল পরিমাণ ভর্তুকি দিতে হচ্ছে। সরকারের হিসাব অনুযায়ী সার, বিদ্যুৎ ও গ্যাসের জন্য চলতি অর্থবছরে ৭০ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকির প্রয়োজন। কিন্তু চলতি বছরের বাজেটে এই খাতে বরাদ্দ রয়েছে সাড়ে ১২ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে শুধু জ্বালানি খাতে বরাদ্দ কেবল ৪ হাজার কোটি টাকা। এই অবস্থায় গত অর্থ বিভাগের কাছে ৯ হাজার ৩৩১ কোটি টাকার ভর্তুকি চেয়েছে জ্বালানি বিভাগ।

– লালমনিরহাট বার্তা নিউজ ডেস্ক –